লন্ডনের একটি গ্যালারি থেকে একটি প্রাচীন গ্রিক “অ্যাম্ফোরা” (প্রাচীনকালে ব্যবহৃত দুই হাতলযুক্ত একটি পাত্র) সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। জানা গেছে, এটির সঙ্গে এক কুখ্যাত চোরাকারবারির যোগসূত্র রয়েছে।
প্রত্নতত্ত্ব বিষয়ক এক বিশেষজ্ঞের অনুসন্ধানে বিষয়টি প্রকাশ্যে আসার পরেই এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়।
মেফেয়ারের কাল্লোস গ্যালারি নামের ওই প্রতিষ্ঠানটি গত মাসে টেফাফ ম্যাসট্রিখট নামের একটি আন্তর্জাতিক আর্ট ও অ্যান্টিকস মেলায় এই অ্যাম্ফোরাটি প্রদর্শনের জন্য নিয়ে আসে। কিন্তু অবৈধ প্রত্নসম্পদ ব্যবসার সঙ্গে জড়িত এক বিশেষজ্ঞের কাছ থেকে খবর পাওয়ার পর তারা সেটি সরিয়ে নিতে বাধ্য হয়।
ড. ক্রিস্টোস সিরোয়ান্নিস নামের ওই বিশেষজ্ঞ জানিয়েছেন, অ্যাম্ফোরাটি সম্ভবত ইতালিতে অবৈধ খননের মাধ্যমে পাওয়া গিয়েছিল।
অনুসন্ধানে জানা যায়, শিল্পী “ফিনিয়াস পেইন্টার”-এর তৈরি করা এই অ্যাম্ফোরাটির সঙ্গে ইতালির কুখ্যাত চোরাকারবারি গিয়াকোমো মেডিসির যোগসূত্র রয়েছে। মেডিসিকে ২০০৪ সালে চুরি করা শিল্পকর্ম ব্যবসার দায়ে ইতালিতে দোষী সাব্যস্ত করা হয়েছিল।
ড. সিরোয়ান্নিস জানান, অ্যাম্ফোরাটি সম্ভবত ইতালির কোনো অবৈধ খনন কেন্দ্র থেকে সংগ্রহ করা হয়েছে। তিনি এর প্রমাণ হিসেবে মেডিসির কাছ থেকে উদ্ধার হওয়া একটি ছবি দেখান, যেখানে একই ধরনের একটি পাত্র দেখা যায়।
ধারণা করা হচ্ছে, অ্যাম্ফোরাটির বাজার মূল্য প্রায় ৫০ হাজার পাউন্ড।
কাল্লোস গ্যালারি ২০১৪ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়। এর প্রতিষ্ঠাতা ছিলেন ব্যারন লর্নে থাইসেন-বোর্নেমিসজা।
গ্যালারি কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, তারা বিষয়টি সম্পর্কে অবগত হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই অ্যাম্ফোরাটি সরিয়ে নিয়েছে এবং সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের পরামর্শের জন্য অপেক্ষা করছে। তারা কোনো ধরনের বিতর্কিত শিল্পকর্ম ব্যবসার সঙ্গে জড়িত থাকতে চায় না।
এই ঘটনার মাধ্যমে আবারও একবার আন্তর্জাতিক বাজারে প্রত্নসম্পদ পাচার এবং শিল্পকর্মের নৈতিক উৎস বিষয়ক বিতর্ক নতুন করে সামনে এসেছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, নিলাম ঘর এবং ব্যবসায়ীদের আরও বেশি সতর্ক হওয়া উচিত এবং তাদের সংগ্রহ করা শিল্পকর্মের উৎস সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য প্রকাশ করা উচিত।
তথ্য সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান