গ্রিনল্যান্ডে গ্রীষ্মের সূচনা: জাতীয় দিবসে উৎসবের আমেজ
গ্রিনল্যান্ড, ডেনমার্কের একটি স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চল, গ্রীষ্মের আগমন উপলক্ষে তাদের জাতীয় দিবস উদযাপন করেছে। এই বিশেষ দিনে, আটলান্টিক মহাসাগরের বুকে অবস্থিত এই দ্বীপের প্রায় ৫৬,০০০ বাসিন্দা মিলিত হয়ে ঐতিহ্যপূর্ণ নানা অনুষ্ঠানে মেতে ওঠে। দিনটি ছিল শনিবার, যখন গ্রিনল্যান্ডে সূর্যের আলো ২৪ ঘণ্টা স্থায়ী হয়, যা গ্রীষ্মকালের একটি বিশেষত্ব।
জাতীয় দিবস উপলক্ষে স্থানীয়রা তাদের শহর প্রদক্ষিণ করে, হাতে পতাকা নিয়ে আনন্দ করে এবং সীল শিকারের মতো ঐতিহ্যবাহী প্রতিযোগিতায় অংশ নেয়। গ্রিনল্যান্ডের সংস্কৃতিতে এই দিনটির গুরুত্ব অপরিসীম। এখানকার মানুষেরা বন্ধু এবং পরিবারের সঙ্গে মিলিত হয়, গান গায় এবং একসঙ্গে খাবার উপভোগ করে।
১৯৮৫ সালে এই দিনটিকে জাতীয় দিবস হিসেবে ঘোষণা করা হয়। এর আগে, ছয় বছর আগে স্বায়ত্তশাসনের জন্য একটি গণভোট অনুষ্ঠিত হয়েছিল, যার ফলস্বরূপ এই দিবসের সূচনা হয়। স্থানীয়রা ঐতিহ্যবাহী পোশাক পরে, যার মধ্যে ছিল মুক্তার মালা এবং সীল চামড়ার তৈরি পোশাক। তারা তাদের জাতীয় পতাকা নিয়ে শোভাযাত্রায় অংশ নেয়।
দিবসটি উদযাপনের সময়, তরুণ থেকে বৃদ্ধ সবাই মিলেমিশে আনন্দ করে। এখানকার মানুষজন একে অপরের সাথে শুভেচ্ছা বিনিময় করে এবং দিনটি উপভোগ করে। স্থানীয়দের মধ্যে, ইয়োহানেস অস্টারম্যানের মতো অনেকেই এই উৎসবের গুরুত্ব অনুভব করেন, যেখানে সবাই একসঙ্গে মিলিত হতে পারে।
ঐতিহ্যবাহী সীল শিকার প্রতিযোগিতা ছিল এই দিনের অন্যতম আকর্ষণ। সকাল ৯টায় কামানের তোপধ্বনির মাধ্যমে এই প্রতিযোগিতার সূচনা হয়। শিকার করা সীলটিকে পরীক্ষার পর এর মাংস বৃদ্ধাশ্রমে বিতরণ করা হয় এবং চামড়া ও অন্যান্য অংশ পোশাক তৈরির কাজে ব্যবহার করা হয়।
প্রতিযোগিতার বিজয়ী পিলো স্যামুয়েলসেন এই উৎসবের আনন্দ এবং এর মাধ্যমে সংস্কৃতির প্রতিচ্ছবি তুলে ধরেন। তিনি বলেন, এই ধরনের ঐতিহ্যগুলো একত্রিত হয়ে সমাজকে আরও শক্তিশালী করে।
সোফি আবেলসনের মতো অনেকে মনে করেন, আধুনিকতা এবং বিশ্বায়নের যুগে এই ধরনের ঐতিহ্যগুলো টিকিয়ে রাখা জরুরি। তারা চান, তাদের সংস্কৃতি যেন প্রজন্মের পর প্রজন্ম ধরে একইভাবে চলতে থাকে।
গ্রিনল্যান্ডের এই জাতীয় দিবস উদযাপনের মাধ্যমে, সেখানকার মানুষ তাদের সংস্কৃতি এবং ঐতিহ্যকে বাঁচিয়ে রাখে। একইসাথে, তারা প্রকৃতির সঙ্গে তাদের গভীর সম্পর্ককে উদযাপন করে।
তথ্য সূত্র: অ্যাসোসিয়েটেড প্রেস