আলোচনায় গ্রিনল্যান্ড: ট্রাম্পের পর বাড়ছে পর্যটকদের আনাগোনা!

গ্রিনল্যান্ডে বাড়ছে পর্যটকদের আনাগোনা, নতুন বিমানবন্দরের সুফল।

বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ দ্বীপ গ্রিনল্যান্ডে পর্যটকদের সংখ্যা বাড়ছে, যা দেশটির অর্থনীতিতে নতুন দিগন্তের সূচনা করেছে। বিশেষ করে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের আগ্রহ এবং রাজধানী নুকের নতুন আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর চালু হওয়ার ফলে পর্যটকদের আগমন উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়েছে।

গ্রিনল্যান্ড ক্রুজ-এর পরিচালক ইভিক নুদসেন-ওস্টারম্যান জানিয়েছেন, ট্রাম্পের কারণে গ্রিনল্যান্ড আবারও বিশ্ব দরবারে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে এসেছে। তার কোম্পানি বরফের পাহাড় দেখতে নৌ-ভ্রমণের আয়োজন করে থাকে। পর্যটকদের আগমন বাড়ায় তিনি তার ব্যবসা সম্প্রসারণের প্রস্তুতি নিচ্ছেন। নুকের নতুন বিমানবন্দরে সরাসরি ফ্লাইট চালু হওয়ায় ভ্রমণ সহজ হয়েছে।

নভেম্বরে চালু হওয়া বিমানবন্দরের সুবাদে ইতোমধ্যে পর্যটকদের আগমন বেড়েছে। আগামী জুন মাস থেকে ইউনাইটেড এয়ারলাইন্স সরাসরি নিউ ইয়র্ক থেকে নুকে ফ্লাইট পরিচালনা শুরু করতে যাচ্ছে, যা আগে কোপেনহেগেন হয়ে কানগারলুসসাক বিমানবন্দর হয়ে আসত।

বর্তমানে গ্রিনল্যান্ডের অর্থনীতি মূলত মৎস্য শিল্পের উপর নির্ভরশীল, যা দেশটির রপ্তানির শতকরা ৯৫ ভাগ যোগান দেয়। পর্যটন শিল্পের বিকাশের মাধ্যমে তারা তাদের অর্থনীতিকে আরও বেশি বৈচিত্র্যময় করতে চাইছে। বিশাল বরফের চাদর, গভীর ফিয়োর্ড এবং বিভিন্ন সামুদ্রিক প্রাণী, বিশেষ করে তিমি—এগুলো গ্রিনল্যান্ডের প্রধান আকর্ষণ। এছাড়াও, স্থানীয় ইনুইট সংস্কৃতির প্রতি মানুষের আগ্রহ বাড়ছে।

পর্যটন কেন্দ্র হিসেবে পরিচিত ইলুলিসাটে ২০২৬ সালে একটি নতুন আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর চালু হওয়ার কথা রয়েছে। এছাড়া, দেশটির দক্ষিণাঞ্চলে অবস্থিত ক্যাকরটোক-এও একটি আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর নির্মাণ করা হচ্ছে।

গ্রিনল্যান্ড এয়ারপোর্টসের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা জেন্স লরিডসেন বলেন, “আমরা মনে করি, এই গ্রীষ্মেই পর্যটকদের সংখ্যা উল্লেখযোগ্য হারে বাড়বে।”

পরিসংখ্যান অনুযায়ী, জানুয়ারিতে গ্রিনল্যান্ডে আন্তর্জাতিক ফ্লাইটে যাত্রী সংখ্যা ১৪ শতাংশ বেড়েছে। এছাড়া, গত এক দশকে হোটেলগুলোতে রাত্রিযাপনের সংখ্যাও বেড়েছে, যা ২০১৪ সালের ২ লাখ থেকে বেড়ে গত বছর হয়েছে ৩ লাখ ৫৫ হাজারে দাঁড়িয়েছে।

গ্রিনল্যান্ডের পর্যটন বিষয়ক সংস্থা ‘ভিজিট গ্রিনল্যান্ড’-এর তথ্য অনুযায়ী, নুকের নতুন বিমানবন্দর চালু হওয়ার পর তিন মাসের মধ্যে প্রায় ৭৫ শতাংশ পর্যটন ব্যবসায়ী বুকিংয়ের সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছেন বলে জানিয়েছেন।

ডেনমার্কের নাগরিক লার্স ইপ্লান্ড জানান, গ্রিনল্যান্ড ছিল তার দেখা পৃথিবীর শেষ স্থানগুলোর মধ্যে একটি। তিনি বলেন, “এটি ডেনমার্কের একটি অংশ, তাই আমি এটি দেখতে চেয়েছিলাম। এখন এখানকার পরিস্থিতি দেখে মনে হচ্ছে, আগামী সপ্তাহে হয়তো এখানে অন্য কিছু হতে পারে।”

তথ্য সূত্র: সিএনএন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *