গ্রেগরি পোর্টার: ‘সবচেয়ে খারাপ কাজ ছিল ইঁদুর সরানো!’

বিখ্যাত জ্যাজ শিল্পী গ্রেগরি পোর্টার: জীবন, সংগ্রাম এবং প্রত্যাবর্তনের গল্প।

যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়ার বাসিন্দা গ্রেগরি পোর্টার, যিনি তাঁর অসাধারণ কণ্ঠ এবং সঙ্গীতের মাধ্যমে বিশ্বজুড়ে পরিচিত, সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে তাঁর জীবনের নানা দিক নিয়ে কথা বলেছেন।

খ্যাতিমান এই শিল্পী শুধু একজন সঙ্গীতজ্ঞই নন, বরং জীবনের গভীরতা ও মানবিক অনুভূতির এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত।

পোর্টারের সঙ্গীতজীবন শুরু হয় ২০০০-এর দশকে।

২০১০ সালে প্রকাশিত তাঁর প্রথম অ্যালবাম ‘ওয়াটার’ ব্যাপক পরিচিতি লাভ করে এবং এর মাধ্যমেই তিনি সকলের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন। এরপর ২০১৪ সালে ‘লিকুইড স্পিরিট’ এবং ২০১৭ সালে ‘টেক মি টু দ্য অ্যালে’ অ্যালবামের জন্য তিনি সেরা জ্যাজ ভোকাল অ্যালবাম বিভাগে গ্র্যামি পুরস্কার অর্জন করেন।

সঙ্গীতের জগতে তাঁর এই সাফল্যের পেছনে রয়েছে কঠোর পরিশ্রম ও একাগ্রতা।

তিনি শুধু গানের সঙ্গেই যুক্ত নন, ব্রিটেনের প্রয়াত রানী দ্বিতীয় এলিজাবেথের সিংহাসন আরোহণের ৭০ বছর পূর্তি অনুষ্ঠানেও গান গেয়েছেন তিনি।

শিশুদের জন্য সিবিবিজ (CBeebies)-এর বেডটাইম স্টোরিজেও তিনি প্রথম কোনো সেলিব্রিটি হিসেবে ঘুমপাড়ানি গান গেয়েছেন।

সাক্ষাৎকারে পোর্টার তাঁর জীবনের কিছু কঠিন অভিজ্ঞতার কথা উল্লেখ করেছেন।

একসময় তিনি একটি ডগ ফুড কোম্পানিতে কাজ করতেন, যেখানে তাঁর কাজ ছিল পোকামাকড় নিধনের পর ইঁদুরদের পরিষ্কার করা।

এই কাজটি ছিল তাঁর কাছে সবচেয়ে কষ্টের।

কোভিড-১৯ অতিমারী তাঁর জীবনে গভীর প্রভাব ফেলেছে।

তিনি এই সময়ে তাঁর ভাইকে হারিয়েছেন, যা তাঁর জীবনের সবচেয়ে বড় দুঃখগুলির মধ্যে অন্যতম।

তিনি বলেন, এই মহামারীর কারণে তাঁর সন্তানদের সামাজিক জীবনও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

পোর্টার তাঁর জীবনের সবচেয়ে মূল্যবান সম্পদ হিসেবে মায়ের একটি ছবিকে উল্লেখ করেছেন, যার পেছনে মায়ের হাতের লেখা রয়েছে।

তিনি নিজেকে একজন সহানুভূতিশীল, বিনয়ী ও দৃঢ়চেতা মানুষ হিসেবে বর্ণনা করেন।

তাঁর মতে, মানুষের ভেতরের কষ্ট অনুভব করার ক্ষমতা তাঁর একটি বিশেষ গুণ।

জীবনে তিনি ভালোবাসার সংজ্ঞা দিতে গিয়ে বলেছেন, ‘একটি বিশাল এবং ভঙ্গুর কাঁচের জিনিসকে অত্যন্ত বিপজ্জনক পরিবেশে ধরে রাখার মতো’। তিনি আরও মনে করেন, মানুষ হিসেবে আমাদের সবারই প্রত্যাবর্তনের সুযোগ আছে।

মানুষ ভুল করতে পারে, তবে সেই ভুল থেকে শিক্ষা নিয়ে ভালো পথে ফেরা সম্ভব।

পোর্টার তাঁর সন্তানদের জন্য আত্মবিশ্বাসের বীজ বুনে যেতে চান।

তিনি চান, তাঁর সন্তানেরা যেন আত্মবিশ্বাসী হয়ে জীবন সংগ্রামে এগিয়ে যেতে পারে।

গ্রেগরি পোর্টারের জীবন, সংগ্রাম ও সাফল্যের গল্প আমাদের সকলের জন্য একটি অনুপ্রেরণা।

তাঁর সঙ্গীত যেমন মানুষকে আনন্দ দেয়, তেমনি তাঁর জীবনের গভীরতা থেকে পাওয়া শিক্ষা আমাদের নতুন করে বাঁচতে শেখায়।

তথ্য সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *