লস অ্যাঞ্জেলেস শহর, যা তার ঝলমলে আলো আর সিনেমাপাড়ার জন্য বিশ্বজুড়ে পরিচিত, সেখানে রয়েছে প্রকৃতির এক অপূর্ব লীলাভূমি – গ্রিফিথ পার্ক।
বিশাল এই পার্কটি শুধু লস অ্যাঞ্জেলেসবাসীর বিনোদনের স্থানই নয়, এটি যেন প্রকৃতির এক টুকরো আশ্রয়স্থল। এখানকার সবুজ গাছপালা, পাহাড় আর ঐতিহাসিক নিদর্শনের কারণে গ্রিফিথ পার্ক আমেরিকার অন্যতম সেরা পার্ক হিসেবে পরিচিত।
৪,২১০ একর জমির উপর বিস্তৃত গ্রিফিথ পার্কের তুলনা চলে না সান ফ্রান্সিসকোর গোল্ডেন গেট পার্ক (১,০০০ একর) অথবা নিউ ইয়র্কের সেন্ট্রাল পার্কের (৮৪৩ একর)-এর সঙ্গেও। পাহাড়-টিলার উপরে অবস্থিত হওয়ায় এর প্রাকৃতিক দৃশ্যও অসাধারণ।
এই পার্কের ঐতিহাসিক গুরুত্বও অনেক। এক সময়ের খনিজ ব্যবসায়ী কর্নেল গ্রিফিথ জেনকিন্স গ্রিফিথ ১৮৯৬ সালে এই জমিটি শহরের মানুষের জন্য উৎসর্গ করেন, যেখানে সকলে স্বাস্থ্যকর পরিবেশে আনন্দ উপভোগ করতে পারে।
গ্রিফিথ পার্কে রয়েছে নানা ধরনের আকর্ষণ। যারা প্রকৃতির কাছাকাছি থাকতে ভালোবাসেন, তাদের জন্য এখানে আছে অসংখ্য উঁচু-নিচু পথ, যেখানে হেঁটে বা সাইকেল চালিয়ে প্রকৃতির শোভা উপভোগ করা যায়।
শিশুদের জন্য রয়েছে খেলার জায়গা, চিড়িয়াখানা এবং পুরাতন দিনের ট্রেনের ব্যবস্থা। এছাড়া, এখানে রয়েছে বিভিন্ন জাদুঘর, যেমন – অট্রি মিউজিয়াম অফ দ্য আমেরিকান ওয়েস্ট, যেখানে স্থানীয় আদিবাসী এবং আমেরিকার পশ্চিমা সংস্কৃতির ইতিহাস তুলে ধরা হয়েছে।
হলিউডের সঙ্গেও গ্রিফিথ পার্কের রয়েছে গভীর সম্পর্ক। এখানকার গ্রিফিথ অবজারভেটরি (Observatory) তে বসেই দেখা যায় বিখ্যাত ‘হলিউড’ সাইনবোর্ডটি, যা সিনেমার জগৎ-এর এক অবিচ্ছেদ্য অংশ।
“লা লা ল্যান্ড” (La La Land) সিনেমার একটি দৃশ্যের শুটিংও এখানে হয়েছে। এমনকি, ব্যাটম্যান সিনেমার ‘ব্যাট গুহা’টিও (Batcave) এই পার্কের ব্রনসন ক্যানিয়নে অবস্থিত।
পার্কের ভেতরে ভ্রমণের সুবিধার জন্য রয়েছে পুরনো দিনের ট্রেনের ব্যবস্থা। এছাড়াও, এখানে রয়েছে বিভিন্ন ক্যাফে ও রেস্টুরেন্ট, যেখানে ভ্রমণকারীরা বিশ্রাম নিতে পারে এবং হালকা খাবার উপভোগ করতে পারে।
সবুজ ঘাস আর উঁচু গাছের ছায়ায় বসে কফি অথবা হালকা কোনো স্ন্যাক্সের স্বাদ নেওয়া সত্যিই এক দারুণ অভিজ্ঞতা।
গ্রিফিথ পার্ক যেন লস অ্যাঞ্জেলেস শহরের কোলাহল থেকে দূরে প্রকৃতির মাঝে কিছু সময় কাটানোর এক আদর্শ স্থান। এটি একইসাথে বিনোদন, শিক্ষা এবং প্রকৃতির অপার সৌন্দর্য উপভোগের এক অসাধারণ সুযোগ।
তথ্য সূত্র: সিএনএন