বর আসবে, কিন্তু ভাইয়ের বান্ধবীকে দাওয়াত দেওয়া হবে না – এমন একটি সিদ্ধান্ত নিয়ে দ্বিধায় পড়েছেন এক যুবক। বিষয়টি নিয়ে তিনি অনলাইনে অন্যদের পরামর্শ চেয়েছেন। সম্প্রতি, ৩০ বছর বয়সী ওই ব্যক্তি ‘আমি কি খারাপ?’ শীর্ষক একটি ওয়েবসাইটে তার এই সমস্যার কথা জানান।
তিনি জানান, আসন্ন ছোট আকারের বিবাহ অনুষ্ঠানে তিনি তার ভাইয়ের প্রেমিকা, যিনি গত ছয় মাস ধরে তার ভাইয়ের সঙ্গে রয়েছেন, তাকে আমন্ত্রণ জানাতে রাজি নন।
ওই ব্যক্তি আরও উল্লেখ করেন, বিয়ের আয়োজনটি মূলত তার এবং তার ২৮ বছর বয়সী কনের ব্যক্তিগত অর্থায়নে সম্পন্ন হচ্ছে। তারা সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, অনুষ্ঠানে শুধুমাত্র ঘনিষ্ঠ বন্ধু এবং পরিবারের সদস্যদের আমন্ত্রণ জানাবেন।
এই কারণে, অতিথি তালিকা ছোট রাখার পরিকল্পনা করা হয়েছে, যেখানে প্রায় ৪০ জনের মতো মানুষ উপস্থিত থাকবেন।
ওই ব্যক্তির বড় ভাই, ৩৩ বছর বয়সী, গত ছয় মাস ধরে একটি মেয়ের সঙ্গে সম্পর্কে রয়েছেন। তিনি জানিয়েছেন, ভাইয়ের প্রেমিকার সঙ্গে তার কয়েকবার দেখা হয়েছে।
তিনি বলেন, “মেয়েটি দেখতে ভালো, তবে আমরা তেমন ঘনিষ্ঠ নই। সত্যি বলতে, আমি তাকে ভালোভাবে চিনিও না।”
নবদম্পতি তাদের নিমন্ত্রণপত্রে একটি স্পষ্ট নিয়ম তৈরি করেছেন। তারা শুধুমাত্র তাদের সেই বন্ধুদের সঙ্গেই তাদের জীবনসঙ্গীকে আমন্ত্রণ জানাচ্ছেন, যারা হয় দীর্ঘদিনের পরিচিত অথবা বিবাহিত।
এমনকি, তিনি তার ঘনিষ্ঠ বন্ধুকেও তার ৭ মাসের প্রেমিকার জন্য আমন্ত্রণ জানাতে রাজি হননি।
এই বিষয়ে যখন তিনি তার ভাইকে জানান, তখন ভাই বেশ বিরক্ত হন। ওই ব্যক্তি জানান, তার ভাই তাকে বলেছিলেন, তার বান্ধবীকে আমন্ত্রণ না জানানোটা অসম্মানজনক।
ভাইয়ের মতে, ছয় মাসের সম্পর্ক ‘আসলে একটা সম্পর্ক’। এছাড়াও, তিনি উল্লেখ করেন, তার প্রেমিকা তাদের কোনো ক্ষতি করেননি এবং তাকে অনুষ্ঠানে দেখতে পাওয়ার জন্য তিনি অনেক আগ্রহী।
যদিও ওই ব্যক্তি তার ভাইকে বুঝিয়েছিলেন যে, এই সিদ্ধান্ত ব্যক্তিগত নয়, কিন্তু তার ভাই এরপর কোনো উত্তর দেননি। এমনকি, তার মা তাকে ফোন করে ‘বড় মনের পরিচয় দিতে’ এবং ‘অপ্রয়োজনীয় ঝামেলা এড়িয়ে যেতে’ বলেছেন।
ওই ব্যক্তি জানান, তিনি কারও অনুভূতিতে আঘাত দিতে চান না, তবে তিনি মনে করেন, তারা একটি স্পষ্ট নিয়ম তৈরি করেছেন এবং সেটির প্রতি শ্রদ্ধাশীল থাকছেন।
বিষয়টি নিয়ে অনলাইনে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা গেছে। অনেকেই এই সিদ্ধান্তের সঙ্গে একমত পোষণ করেছেন। তাদের মতে, বিয়ের মতো ব্যক্তিগত অনুষ্ঠানে নিমন্ত্রণের বিষয়টি সম্পূর্ণভাবে বর-কনের ইচ্ছার উপর নির্ভরশীল।
কারো কারো মতে, যেহেতু তারা বিয়ের খরচ বহন করছেন, তাই অতিথি নির্বাচন করার অধিকার তাদেরই রয়েছে।
আবার অনেকে মনে করেন, ভাইয়ের বান্ধবীর প্রতি এই ধরনের আচরণ করাটা ঠিক নয়। তাদের মতে, পরিবারের মধ্যে সুসম্পর্ক বজায় রাখা গুরুত্বপূর্ণ এবং বিয়ের মতো অনুষ্ঠানে সবাইকে একসঙ্গে পাওয়াটা আনন্দের।
বিশেষ করে, যিনি পরিবারের একজন সদস্য হতে যাচ্ছেন, তাকে আমন্ত্রণ জানানো উচিত।
বিয়ে একটি সামাজিক অনুষ্ঠান, যেখানে দুটি পরিবারের মধ্যে সম্পর্ক তৈরি হয়। তাই, আমন্ত্রণের ক্ষেত্রে পারস্পরিক বোঝাপড়া এবং সম্মান বজায় রাখা জরুরি।
তথ্য সূত্র: পিপল