যুক্তরাষ্ট্রে আশ্রয় নেওয়া গুয়াতেমালার শিশুদের তাদের দেশে ফেরত পাঠানোর প্রক্রিয়া রবিবার থেকে শুরু হওয়ার কথা ছিল। তবে, শিশুদের আইনজীবীরা বলছেন, তাদের দেশে ফেরত পাঠানো হলে শিশুদের জীবন ঝুঁকিতে পড়তে পারে। খবরটি জানিয়েছে সিএনএন।
যুক্তরাষ্ট্রের অভিবাসন বিষয়ক আইনজীবীরা জানিয়েছেন, ট্রাম্প প্রশাসন গুয়াতেমালার কর্তৃপক্ষের সঙ্গে সমন্বয় করে, যুক্তরাষ্ট্রে আসা শত শত গুয়াতেমালার শিশুকে তাদের দেশে ফেরত পাঠাতে চেয়েছিল।
সিএনএন-এর প্রতিবেদন অনুযায়ী, অভিবাসন বিষয়ক আইনজীবী আরও জানিয়েছেন, আদালতের রায়ের আগেই অনেক শিশুকে আশ্রয়কেন্দ্র থেকে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে।
শিশুদের দেখাশোনার দায়িত্বে থাকা ‘অফিস অব রিফিউজি রিসেটেলমেন্ট’ (ওআরআর)-এর পক্ষ থেকে আইনজীবীদের জানানো হয়, গুয়াতেমালা সরকার তাদের হেফাজতে থাকা শিশুদের পরিবারের কাছে ফিরিয়ে দেওয়ার অনুরোধ করেছে।
ফেরত পাঠানোর তালিকায় থাকা শিশুদের কারো মা-বাবা যুক্তরাষ্ট্রে নেই, তবে গুয়াতেমালায় তাদের আত্মীয়-স্বজন অথবা অভিভাবক রয়েছেন। জানা গেছে, এই শিশুদের মধ্যে যাদের কোনো আশ্রয় প্রার্থনার আবেদন (asylum case) নেই এবং যাদের পাচারের (trafficking) কোনো সম্ভাবনা নেই, তাদেরই ফেরত পাঠানো হবে।
তবে, শিশুদের হয়ে কাজ করা আইনজীবীরা বলছেন, যাদের চিহ্নিত করা হয়েছে, তাদের গুয়াতেমালায় ফেরত পাঠানো হলে তারা ঝুঁকিতে পড়বে। কারণ, তাদের অভিবাসন বিষয়ক মামলা এখনো চলছে।
এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে করা এক মামলায় আইনজীবীরা যুক্তি দেন, ট্রাম্প প্রশাসন যুক্তরাষ্ট্রের আইন লঙ্ঘন করছে। কারণ, এই আইনে অভিভাবকহীন অভিবাসীদের বিশেষ সুরক্ষার কথা বলা হয়েছে। সেই সঙ্গে, কোনো শিশুকে তাদের বক্তব্য পেশ করার সুযোগ না দিয়ে অথবা তাদের দেশ থেকে বিতাড়িত করার আগে কোনো সুরক্ষার ব্যবস্থা না করে ফেরত পাঠানো যাবে না।
মামলায় যুক্ত হওয়া ১০ জন গুয়াতেমালার শিশুর বয়স ১০ থেকে ১৭ বছরের মধ্যে। তাদের মধ্যে একজন আদিবাসী ১০ বছর বয়সী শিশু। গুয়াতেমালায় থাকাকালীন সে ‘অন্যদের দ্বারা নিগৃহীত’ হয়েছিল। তার মা-ও মারা গেছেন।
যুক্তরাষ্ট্রের একটি আদালত শিশুদের বিতাড়ন (removal) দুই সপ্তাহের জন্য স্থগিত করেছে এবং রবিবার শুনানির দিন ধার্য করেছে।
আরেকজন আইনজীবী জানিয়েছেন, শিশুরা খুবই আতঙ্কিত এবং বিভ্রান্ত। তিনি বলেন, “তাদের প্রতিক্রিয়া ছিল, তারা এটা বিশ্বাস করতে পারছিল না। তারা সবাই গুয়াতেমালায় ফিরতে ভয় পাচ্ছে। তাদের গভীর রাতে ঘুম থেকে তুলে আনা হয়েছিল, তাও আবার ছুটির দিনে।”
শনিবার রাতে, ‘অফিস অব রিফিউজি রিসেটেলমেন্ট’ আশ্রয়কেন্দ্রগুলোকে জানায়, শিশুদের গুয়াতেমালার পরিবার বা অভিভাবকদের কাছে ফেরত পাঠানোর প্রস্তুতি নিতে হবে। কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে নির্দেশ পাওয়ার ২ ঘণ্টার মধ্যে, অথবা শিশুদের কেউ পালক পিতামাতার কাছে থাকলে ৪ ঘণ্টার মধ্যে তাদের ছাড়পত্র দিতে হবে।
ওই নোটিশে আরও বলা হয়েছে, শিশুদের ভ্রমণের জন্য প্রস্তুত থাকতে হবে। তাদের প্রয়োজনীয় কাগজপত্র, ওষুধ, ব্যক্তিগত জিনিস এবং দুটি দুপুরের খাবার সঙ্গে রাখতে হবে।
তথ্য সূত্র: সিএনএন