অভিনয়ের ‘স্বাধীনতা’ চেয়ে অন্তরঙ্গতা সমন্বয়কারীকে সরিয়ে দিলেন গিনেথ!

হলিউডের প্রবীণ অভিনেত্রী গিনেথ প্যালট্রো সম্প্রতি তাঁর নতুন ছবি ‘মার্টি সুপ্রিম’-এর শুটিংয়ের অভিজ্ঞতা নিয়ে কথা বলেছেন। ছবিতে তাঁর সহ-অভিনেতা হিসেবে আছেন জনপ্রিয় তরুণ অভিনেতা টিমোথি শ্যালামেট।

ছবিতে তাঁদের মধ্যে বেশ কয়েকটি ঘনিষ্ঠ দৃশ্য রয়েছে। এই দৃশ্যগুলো নিয়ে কাজ করার সময় সেটে একজন ‘ইнтиমেসি কোঅর্ডিনেটর’ বা ঘনিষ্ঠ দৃশ্য সমন্বয়কারীর উপস্থিতি নিয়ে প্যালট্রো স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করেননি।

প্যালট্রো জানিয়েছেন, এই পেশাটি তাঁর কাছে নতুন। #MeToo আন্দোলনের পর অভিনয়শিল্পীদের সুরক্ষার কথা ভেবে এই ধরনের সমন্বয়কারীর ধারণা তৈরি হয়েছে।

সাধারণত, সিনেমার ঘনিষ্ঠ দৃশ্যের শুটিংয়ের সময় এই কোঅর্ডিনেটররা অভিনেতা-অভিনেত্রীদের নিরাপত্তা এবং স্বাচ্ছন্দ্য নিশ্চিত করেন। কিন্তু প্যালট্রো এই ধারণার সঙ্গে ততটা পরিচিত নন।

তাঁর মতে, “আমি এমন একটা সময় থেকে এসেছি, যেখানে নগ্ন হয়ে, বিছানায় শুয়ে ক্যামেরার সামনে অভিনয় করতে হত।” এই প্রসঙ্গে তিনি আরও বলেন, “যদি কেউ এসে বলে, ‘ঠিক আছে, এর পরে সে হাতটা এখানে রাখবে’, তাহলে একজন শিল্পী হিসেবে আমার দমবন্ধ লাগবে।”

প্যালট্রোর মতে, সম্ভবত নতুন প্রজন্মের অভিনেতা-অভিনেত্রীদের জন্য এই ব্যবস্থা কার্যকর হতে পারে, তবে তাঁর নিজের ক্ষেত্রে, বিষয়টি বেশ অস্বস্তিকর লেগেছে।

ছবিতে শ্যালামেট একজন টেবিল টেনিস খেলোয়াড়ের চরিত্রে অভিনয় করেছেন, যিনি ১৯৮০ সালের চ্যাম্পিয়ন মার্টিন রেইসম্যানের জীবন থেকে অনুপ্রাণিত। ছবিতে প্যালট্রো অভিনয় করেছেন এক প্রতিদ্বন্দ্বীর স্ত্রীর চরিত্রে, যাঁর সঙ্গে শ্যালামেটের চরিত্রের সম্পর্ক গড়ে ওঠে।

ছবিতে তাঁদের মধ্যেকার বয়সের ব্যবধান নিয়েও আলোচনা হয়েছে। প্যালট্রো মজা করে বলেছিলেন, “আমি যেন ১০৯ বছর বয়সী, আর তুমি ১৪!”

তবে, এই বিষয়ে অনেকে ভিন্নমত পোষণ করেন। অনেকেই মনে করেন, ইнтиমেসি কোঅর্ডিনেটরদের উপস্থিতি সিনেমার স্বাভাবিকতা নষ্ট করে দেয়।

উদাহরণস্বরূপ, অভিনেতা শন বিন-এর কথা বলা যেতে পারে। অন্যদিকে, অভিনেত্রী এমা থম্পসন, রেচেল জেগলার, এবং সিডনি সুইনি’র মতো তারকারা এই ব্যবস্থার পক্ষে সমর্থন জানিয়েছেন।

অভিনেত্রী জেনিফার অ্যানিস্টন তাঁর একটি সিনেমার ঘনিষ্ঠ দৃশ্যের জন্য নিযুক্ত কোঅর্ডিনেটরকে সরিয়ে দিয়েছিলেন। তাঁর মতে, “বিষয়টা এমনিতেই যথেষ্ট অস্বস্তিকর, আমরা অভিজ্ঞ, আমরা নিজেরাই বিষয়টি সামলে নিতে পারি।”

প্যালট্রো এবং অ্যানিস্টন দুজনেই অভিজ্ঞ অভিনেত্রী, তাই সেটে তাঁদের সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতা বেশি। কিন্তু অনেক তরুণ অভিনেতা-অভিনেত্রী মনে করেন, এই ধরনের কোঅর্ডিনেটর রাখাটা বাধ্যতামূলক করা উচিত কিনা, তা নিয়ে নতুন করে ভাবা দরকার।

সম্প্রতি ‘আনরা’ (Anora) ছবির অভিনেত্রী মাইকি ম্যাডিসন, যিনি সেরা অভিনেত্রীর পুরস্কার জিতেছেন, তিনি অবশ্য তাঁর ঘনিষ্ঠ দৃশ্যের জন্য পরিচালক শন বেকারের দেওয়া কোঅর্ডিনেটরের প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেছিলেন।

তাঁর মতে, “আমার চরিত্রটি একজন যৌনকর্মীর, তাই আমি পরিস্থিতি সম্পর্কে অবগত ছিলাম এবং একজন অভিনেত্রী হিসেবে কাজটা করতে প্রস্তুত ছিলাম।” তথ্য সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *