জিমে যাওয়া শুরু করছেন? এই বিষয়গুলো অবশ্যই জেনে নিন!

নতুন প্রজন্মের মধ্যে শরীরচর্চা এবং স্বাস্থ্য সচেতনতা বাড়ছে, এবং এর সাথে বাড়ছে জিম-এর জনপ্রিয়তা। রাজধানী ঢাকা থেকে শুরু করে বিভাগীয় শহরগুলোতে এখন অলিগলিতেও জিম-এর দেখা মেলে।

ব্যায়ামাগারে যাওয়াটা এখন ফ্যাশনের একটা অংশ হয়ে দাঁড়িয়েছে। তবে, জিম-এ গিয়ে অনেকেই কিছু সাধারণ সমস্যায় পড়েন, যা তাদের ব্যায়ামের পথে বাধা সৃষ্টি করে।

আসুন, এইসব সমস্যাগুলো সমাধানে কিছু জরুরি বিষয় জেনে নেওয়া যাক, যা আপনাকে সাহায্য করবে একটি আরামদায়ক এবং কার্যকরী ব্যায়ামের অভিজ্ঞতা অর্জনে।

প্রথমেই আসা যাক, ব্যায়ামের সময় অন্য কারো চোখে পড়ার বিষয়টি নিয়ে। অনেকেই মনে করেন, জিম-এ সবাই নিজের ব্যায়াম নিয়ে ব্যস্ত থাকে, তাই আপনাকে কেউ দেখছে না।

এটা সবসময় সত্যি নয়। ব্যায়াম করার সময় অনেকেই আপনার দিকে তাকাতে পারে, বিশেষ করে নতুনদের ক্ষেত্রে এমনটা বেশি হয়। তবে এতে হতাশ হওয়ার কিছু নেই।

আপনি যদি আত্মবিশ্বাসের সাথে নিজের ব্যায়াম চালিয়ে যান, তাহলে অন্যদের দৃষ্টি আপনার উপর তেমন প্রভাব ফেলবে না।

জিমের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলোর একটি হলো অন্যের সাথে সরঞ্জাম ভাগাভাগি করে নেয়া বা ‘ওয়ার্কিং ইন’ করার নিয়ম।

ধরুন, আপনি একটি বেঞ্চ প্রেস মেশিনে ব্যায়াম করতে চাচ্ছেন, কিন্তু দেখছেন অন্য একজন সেটি ব্যবহার করছেন। সেক্ষেত্রে, ভদ্রভাবে তার কত সেট বাকি আছে, তা জিজ্ঞেস করতে পারেন।

তিনি যদি রাজি হন, তাহলে আপনি তার বিশ্রামকালে আপনার ব্যায়াম চালিয়ে যেতে পারেন। একইভাবে, কেউ যদি আপনার সরঞ্জাম ব্যবহার করতে চায়, তবে তাকে সহযোগিতা করুন।

এরপর আসা যাক, স্কোয়াট র‍্যাক ব্যবহারের সঠিক নিয়ম নিয়ে। স্কোয়াট র‍্যাক ব্যবহারের সময় বারবেলের হুকগুলো সঠিক উচ্চতায় সেট করা খুব জরুরি।

অনেক সময় দেখা যায়, হুকগুলো খুব উপরে সেট করা থাকে, যার ফলে বারবেল নামাতে বা উঠাতে অসুবিধা হয়। এর ফলে দুর্ঘটনার ঝুঁকিও থাকে।

তাই, বারবেলের হুকগুলো এমনভাবে সেট করুন, যেন আপনি সহজেই বারবেলটি উঠাতে এবং নামাতে পারেন।

জিমের সরঞ্জাম ব্যবহারের পর তা যথাস্থানে গুছিয়ে রাখাটাও জরুরি। ডাম্বেল, প্লেট বা অন্যান্য সরঞ্জাম ব্যবহারের পর সেগুলো তাদের স্থানে ফিরিয়ে রাখা উচিত।

এটা অন্য সদস্যদের জন্য ব্যায়ামের জায়গা পরিষ্কার রাখতে সাহায্য করে এবং জিমের পরিবেশ সুন্দর রাখে।

অনেকে ডাম্বেল রাখার র‍্যাকের সামনে দাঁড়িয়ে ব্যায়াম করেন, যা অন্যদের জন্য অসুবিধা সৃষ্টি করতে পারে। কারণ, এতে অন্য সদস্যদের ব্যায়ামের জন্য জায়গা কমে যায়।

তাই, ডাম্বেল র‍্যাকের সামনে না দাঁড়িয়ে, একটু দূরে দাঁড়িয়ে ব্যায়াম করার চেষ্টা করুন।

যদি কোনো ব্যায়াম সম্পর্কে আপনার কোনো দ্বিধা থাকে, তাহলে সেখানকার প্রশিক্ষকের সাহায্য নিতে পারেন। কিভাবে একটি ব্যায়াম করতে হয়, তা জানতে চাইলে সংকোচ বোধ না করে সরাসরি প্রশ্ন করুন।

ভালো প্রশিক্ষক আপনার ব্যায়ামের পদ্ধতি বুঝিয়ে দেবেন এবং প্রয়োজনীয় পরামর্শ দেবেন।

ব্যায়ামের সময় স্পটিং-এর প্রয়োজন হলে, অর্থাৎ কেউ যদি ওজন তুলতে সমস্যা অনুভব করে, তবে সাহায্য করার জন্য অন্য কারো সহায়তা নেওয়া যেতে পারে।

এক্ষেত্রে, যিনি সাহায্য করতে রাজি আছেন, তাকে আপনার কতগুলো রিপিটেশন করতে চান এবং তিনি কিভাবে সাহায্য করতে পারেন, তা বুঝিয়ে বলুন।

পুল-আপ-এর জন্য ব্যান্ড ব্যবহারের পরিবর্তে ধীরে ধীরে নিজেকে প্রস্তুত করা ভালো। ব্যান্ড ব্যবহারের ফলে ব্যায়ামের সঠিক পদ্ধতি বোঝা যায় না।

বরং, ধীরে ধীরে নিজের শরীরের ওজনকে নিয়ন্ত্রণ করার চেষ্টা করুন।

একজন ভালো প্রশিক্ষক নির্বাচন করাও খুব গুরুত্বপূর্ণ। এমন প্রশিক্ষক বেছে নিন যিনি ব্যায়ামের পদ্ধতি সম্পর্কে ভালোভাবে জানেন এবং আপনাকে সঠিক গাইডেন্স দিতে পারেন।

সবশেষে, বার্পি ব্যায়াম নিয়ে কিছু কথা বলা যাক। বার্পি একটি কঠিন ব্যায়াম, যা শরীরের জন্য উপকারী হতে পারে, তবে সবার জন্য নয়।

যারা নতুন বা শারীরিক দুর্বলতা রয়েছে, তাদের জন্য এই ব্যায়াম এড়িয়ে যাওয়াই ভালো।

জিম-এ অন্যদের সহযোগিতা করুন এবং একটি ইতিবাচক পরিবেশ বজায় রাখুন। মনে রাখবেন, আপনি একা নন, আপনার মতো আরো অনেকেই সুস্থ থাকতে এবং ভালো থাকতে চায়।

তথ্য সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *