বৃক্ষ নিধনের পর অবশেষে রায়! স্তম্ভিত বিশ্ব

উত্তর-পশ্চিম ইংল্যান্ডের এক ঐতিহাসিক স্থানে অবস্থিত একটি গাছের ধ্বংসকাণ্ড সারা বিশ্বে ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি করেছে। ২০২৩ সালের সেপ্টেম্বরে, হ্যাড্রিয়ানের প্রাচীরের পাশে দাঁড়িয়ে থাকা একটি প্রাচীন সিকামোর গাছকে কেটে ফেলার অভিযোগে দুই ব্যক্তিকে দোষী সাব্যস্ত করা হয়েছে।

গাছটি শুধু একটি সাধারণ গাছ ছিল না, বরং এটি ছিল ব্রিটেনের প্রকৃতির এক অমূল্য সম্পদ এবং স্থানীয় মানুষের কাছে ভালোবাসার প্রতীক।

প্রায় ২ হাজার বছর পুরনো হ্যাড্রিয়ানের প্রাচীর, যা একসময় রোমান সাম্রাজ্যের সীমানা চিহ্নিত করত, সেই প্রাচীরের পাশে অবস্থিত এই গাছটি পর্যটকদের কাছেও বেশ পরিচিত ছিল। পর্যটকদের পাশাপাশি, স্থানীয় মানুষের কাছেও গাছটি ছিল এক বিশেষ স্থান।

এটি ছবি তোলার জন্য একটি আদর্শ জায়গা ছিল, যা অনেকের কাছে স্মৃতি বিজড়িত ছিল। রবিন হুড: প্রিন্স অফ থিভস (Robin Hood: Prince of Thieves) সিনেমায়ও গাছটির দৃশ্য দেখা যায়, যা এর জনপ্রিয়তা আরও বাড়িয়ে তোলে।

অভিযুক্ত দুই ব্যক্তি হলেন ড্যানিয়েল গ্রাহাম ও অ্যাডাম কারুথার্স। তাদের বিরুদ্ধে গাছটি ইচ্ছাকৃতভাবে কাটার অভিযোগ আনা হয়।

প্রমাণ হিসেবে গ্রাহামের মোবাইল ফোনে ধারণ করা একটি ভিডিও এবং অন্যান্য তথ্য উপস্থাপন করা হয়েছিল। বিচারের সময়, আদালত উভয়কে গাছ ও প্রাচীরের ক্ষতির জন্য দোষী সাব্যস্ত করে।

এই ঘটনার পর জনসাধারণের মধ্যে তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখা দেয়। অনেকেই গাছটির জন্য শোক প্রকাশ করেন এবং এর তাৎপর্য নিয়ে আলোচনা করেন।

গাছটিকে কেন্দ্র করে মানুষের স্মৃতি ও ভালোবাসার গভীরতা প্রকাশ পায়, যা এই ঘটনার গুরুত্ব আরও বাড়িয়ে তোলে।

তবে, এই ঘটনার একটি ইতিবাচক দিকও রয়েছে। গাছটি ধ্বংস হওয়ার পর, এর বীজ থেকে চারা তৈরি করা হয়েছে।

সেই চারাগুলো এখন “বৃক্ষ-আশা” নামে পরিচিত এবং যুক্তরাজ্যের বিভিন্ন কমিউনিটিতে বিতরণ করা হবে। এই পদক্ষেপের মাধ্যমে, প্রকৃতির প্রতি মানুষের ভালোবাসা ও শ্রদ্ধাবোধকে আরও একবার তুলে ধরা হয়েছে।

এই ঘটনা প্রমাণ করে, গাছ শুধু একটি প্রাকৃতিক সম্পদ নয়, বরং এটি সংস্কৃতি, ইতিহাস এবং মানুষের স্মৃতির সঙ্গেও গভীরভাবে জড়িত।

তথ্য সূত্র: ন্যাশনাল জিওগ্রাফিক।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *