হাইতিতে একটি অনাথ আশ্রম তৈরি করে শিশুদের ওপর যৌন নির্যাতনের অভিযোগে এক মার্কিন নাগরিককে ২১০ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। অভিযুক্তের নাম মাইকেল কার্ল জিলেনফেল্ড, ৭৩ বছর বয়সী।
তিনি ১৯৮৫ সালে সেন্ট জোসেফ হোম ফর বয়েজ নামক একটি অনাথ আশ্রম প্রতিষ্ঠা করেন, যেখানে তিনি দুই দশকের বেশি সময় ধরে শিশুদের ওপর শারীরিক ও যৌন নির্যাতন চালান।
মার্কিন বিচার বিভাগের খবর অনুযায়ী, হাইতির সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের জন্য এই আশ্রয়স্থল তৈরি করা হয়েছিল। আদালতের শুনানিতে, নির্যাতনের শিকার হওয়া ছয়জন ভুক্তভোগী তাদের ওপর হওয়া ভয়াবহ অভিজ্ঞতার কথা জানান।
তারা জানান, জিলেনফেল্ড তাদের ওপর শারীরিক, মানসিক এবং যৌন নির্যাতন চালিয়েছেন। বর্তমানে প্রাপ্তবয়স্ক হওয়া এই ভুক্তভোগীরা তাদের জীবনে এই নির্যাতনের গভীর প্রভাবের কথা উল্লেখ করেছেন।
বিচার বিভাগের ক্রিমিনাল বিভাগের প্রধান ম্যাথিউ গ্যালেওত্তি এক বিবৃতিতে বলেন, “বিশ্বের সবচেয়ে দুর্বল শিশুদের উপর এই ধরনের ভয়ানক নির্যাতন কোনোভাবেই মেনে নেওয়া যায় না।”
জিলেনফেল্ডের বিরুদ্ধে আরও কয়েকজন ভুক্তভোগী নির্যাতনের অভিযোগ এনেছিলেন, তবে সরকারি কৌঁসুলিরা জানিয়েছেন, তিনি শুধুমাত্র ছয়জন ভুক্তভোগীর ওপর নির্যাতনের জন্য অভিযুক্ত হয়েছেন।
২০২৪ সালের জানুয়ারিতে কলোরাডোতে জিলেনফেল্ডকে গ্রেপ্তার করা হয়। এরপর, ফেডারেল আদালত তাকে অবৈধ যৌন আচরণের উদ্দেশ্যে অন্য দেশে ভ্রমণ এবং ২০০৫ থেকে ২০১০ সালের মধ্যে বিদেশি স্থানে অবৈধ কাজ করার অভিযোগে দোষী সাব্যস্ত করে।
ফেডারেল ব্যুরো অফ ইনভেস্টিগেশন (এফবিআই)-এর সহকারী পরিচালক জোসে এ পেরেজ এক বিবৃতিতে বলেন, “এই রায়টি নির্যাতনের শিকার হওয়া ব্যক্তিদের সাহস এবং তদন্তকারীদের উৎসর্গীকৃত প্রচেষ্টার ফলস্বরূপ। জিলেনফেল্ড দীর্ঘদিন ধরে মানবিকতার মুখোশ পরে শিশুদের প্রতি বিশ্বাস ভঙ্গ করেছেন এবং তাদের শোষণ করেছেন।
আমরা সেইসব ভুক্তভোগীর প্রতি কৃতজ্ঞ, যারা তাদের উপর হওয়া নির্যাতনের কথা প্রকাশ করেছেন।”
জানা গেছে, জিলেনফেল্ড হাইতি এবং ডমিনিকান রিপাবলিকে আরও কিছু অনাথ আশ্রম পরিচালনা করতেন।
এ বিষয়ে পল কেনড্রিক নামে একজন ব্যক্তি, যিনি জিলেনফেল্ডের বিরুদ্ধে নির্যাতনের অভিযোগ এনেছিলেন, তিনি বলেন, “সেখানে সে একটি সাম্রাজ্য গড়ে তুলেছিল।
এটা খুবই ভয়ানক ছিল। এই রায়ের মাধ্যমে ভুক্তভোগীদের কষ্ট কি দূর হবে? অবশ্যই না। তবে এটা তাদের কিছুটা হলেও সম্মান এনে দেবে।”
তথ্য সূত্র: পিপলস