গাজায় যুদ্ধবিরতি নিয়ে হামাস ও ইসরায়েলের মধ্যে অচলাবস্থা চলছে। উভয় পক্ষই যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্থতায় পাওয়া প্রস্তাব নিয়ে ভিন্নমত পোষণ করছে।
হামাস চাইছে গাজায় যুদ্ধ বন্ধের চূড়ান্ত নিশ্চয়তা এবং ইসরায়েলি সেনা প্রত্যাহার। অন্যদিকে, ইসরায়েল চাইছে জিম্মিদের মুক্তি নিশ্চিত করতে, তবে তারা এখনই গাজা থেকে সেনা সরাতে রাজি নয়।
গত কয়েক দিনের সংঘর্ষে গাজায় মানবিক বিপর্যয় দেখা দিয়েছে। ইসরায়েলি হামলায় নিহত হয়েছে কয়েকশ মানুষ, যাদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক শিশুও রয়েছে।
জাতিসংঘের শিশু বিষয়ক সংস্থা ইউনিসেফ জানিয়েছে, সম্প্রতি একদিনে নিহত শিশুর সংখ্যা গত এক বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ।
যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে বিশেষ দূত স্টিভ উইটকফ একটি প্রস্তাব দিয়েছেন, যেখানে যুদ্ধবিরতির প্রথম ধাপ এপ্রিলের শুরু পর্যন্ত বাড়ানোর কথা বলা হয়েছে। এই প্রস্তাবে জিম্মিদের মুক্তি এবং গাজায় মানবিক সহায়তা প্রবেশের সুযোগ তৈরি হবে।
তবে হামাস চাইছে ইসরায়েলের সঙ্গে আগে হওয়া চুক্তি অনুযায়ী যুদ্ধবিরতির দ্বিতীয় ধাপে যেতে, যেখানে গাজা থেকে ইসরায়েলি সেনা সরিয়ে নেওয়ার প্রতিশ্রুতি থাকবে।
হামাসের একজন শীর্ষস্থানীয় নেতা খালেদ মেশাল ইসরায়েলের বিরুদ্ধে অভিযোগ করে বলেছেন, উইটকফের প্রস্তাবের মাধ্যমে তারা হামাসকে ব্ল্যাকমেইল করার চেষ্টা করছে। তাদের মূল উদ্দেশ্য হলো, দ্বিতীয় ধাপের প্রতিশ্রুতি পূরণ না করে কেবল প্রথম ধাপের জিম্মিদের ফিরিয়ে নেওয়া।
ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা মন্ত্রী ইসরায়েল ক্যাটজ জানিয়েছেন, হামাস জিম্মিদের মুক্তি না দিলে তারা গাজার আরও কিছু এলাকা দখল করবে। এমনকি সেখানকার বাসিন্দাদের সরিয়ে দেওয়ারও হুমকি দিয়েছেন তিনি।
ক্যাটজ বলেন, ইসরায়েলি সৈন্যদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে এবং ইসরায়েলের বিভিন্ন জনবসতি রক্ষার জন্য এই পদক্ষেপ নেওয়া হবে। তিনি আরও যোগ করেন, হামাস যত বেশি অস্বীকৃতি জানাবে, ইসরায়েল তত বেশি ভূমি দখল করবে।
এদিকে, হামাস এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, তারা যুদ্ধ বন্ধের একটি স্থায়ী সমাধানে পৌঁছাতে চায়। তারা বন্দী বিনিময়ের মাধ্যমে জিম্মিদের মুক্তি এবং গাজা থেকে ইসরায়েলি সেনা প্রত্যাহারের নিশ্চয়তা চাইছে।
বর্তমানে গাজায় প্রায় ৫৯ জন জিম্মি রয়েছে, যাদের মধ্যে অর্ধেকের বেশি এখনো জীবিত আছে কিনা, তা নিশ্চিত নয়।
তথ্য সূত্র: সিএনএন।