যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব: ফিলিস্তিনের জন্য ইসরায়েলের ‘অসম্ভব’ শর্ত!

গাজায় যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান হামাসের, অচলাবস্থা নিরসনে ব্যর্থ মধ্যস্থতাকারীরা।

গাজায় যুদ্ধ বন্ধের উদ্দেশ্যে ইসরায়েলের দেওয়া সর্বশেষ যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেছে হামাস। সংগঠনটি জানিয়েছে, ইসরায়েলের পক্ষ থেকে এমন কিছু শর্ত দেওয়া হয়েছে যা তাদের কাছে ‘অগ্রহণযোগ্য’।

হামাসের দাবি, প্রস্তাবটিতে গাজায় যুদ্ধ সম্পূর্ণভাবে বন্ধের কোনো নিশ্চয়তা নেই, সেই সঙ্গে গাজা থেকে ইসরায়েলি সৈন্য প্রত্যাহার নিয়েও কোনো সুস্পষ্ট প্রতিশ্রুতি পাওয়া যায়নি।

হামাসের প্রধান আলোচক খলিল আল-হাইয়া এক বিবৃতিতে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুকে অভিযুক্ত করে বলেন, তিনি এমন একটি প্রস্তাব দিয়েছেন যা যুদ্ধ বন্ধ বা সৈন্য প্রত্যাহারের মতো বিষয়গুলো নিশ্চিত করে না।

হাইয়া আরও জানান, হামাস কোনো আংশিক চুক্তিতে রাজি নয়, যা তাদের রাজনৈতিক উদ্দেশ্য চরিতার্থ করার একটা কৌশল হতে পারে।

জানা গেছে, হামাস চাইছে একটি ‘পূর্ণাঙ্গ প্যাকেজ’ চুক্তির মাধ্যমে সকল জিম্মিকে মুক্তি দেওয়া হোক।

এর বিনিময়ে ইসরায়েলের কারাগারে আটক ফিলিস্তিনি বন্দীদের মুক্তি দিতে হবে। হাইয়ার মতে, ইসরায়েলকে অবশ্যই গাজার বিরুদ্ধে যুদ্ধ সম্পূর্ণরূপে বন্ধ করতে হবে এবং গাজা থেকে তাদের সকল সৈন্য প্রত্যাহার করতে হবে।

অন্যদিকে, ইসরায়েলের পক্ষ থেকে প্রস্তাবের শর্ত হিসেবে হামাসের সম্পূর্ণ নিরস্ত্রীকরণের দাবি জানানো হয়, যা হামাসের কাছে ‘অসম্ভব’ হিসেবে প্রতীয়মান হয়েছে।

হায়িয়া বলেছেন, অস্ত্র রাখা তাদের ‘স্বাভাবিক অধিকার’। এছাড়া, ইসরায়েলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়োভ গ্যালান্ট জানিয়েছেন, যুদ্ধবিরতি ভেঙে যাওয়ার পর গাজায় তারা নিরাপত্তা অঞ্চল তৈরি করতে চায়।

গত কয়েক সপ্তাহে ইসরায়েলি বাহিনী গাজার প্রায় ৩০ শতাংশ এলাকা নিজেদের নিয়ন্ত্রণে নিয়েছে, যার মধ্যে রাফাহও রয়েছে।

মার্চ মাস থেকে গাজায় খাদ্য, পানি ও জ্বালানি সরবরাহ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।

হামাস ইসরায়েলের বিরুদ্ধে গণহারে মানুষকে অনাহারে মারার অভিযোগ এনেছে, যা যুদ্ধাপরাধের শামিল।

আলোচনা ব্যর্থ হওয়ায় গাজায় উত্তেজনা আরও বাড়ছে।

ইসরায়েলের অর্থমন্ত্রী বেজালেল স্মোট্রিচ বলেছেন, হামাসের এই সিদ্ধান্তের পর গাজায় ‘জাহান্নামের দরজা খুলে দেওয়া’ উচিত।

এছাড়া, জিম্মিদের জীবন নিয়েও শঙ্কা বাড়ছে, কারণ ইসরায়েল গাজায় বিমান হামলা অব্যাহত রেখেছে।

মিশর, কাতার এবং যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্থতাকারীদের প্রচেষ্টা সত্ত্বেও, যুদ্ধবিরতি ফিরিয়ে আনা এবং জিম্মিদের উদ্ধারের বিষয়ে কোনো অগ্রগতি হয়নি।

হোয়াইট হাউস হামাসের এই সিদ্ধান্তের সমালোচনা করে বলেছে, এর মাধ্যমে তারা শান্তির বদলে ‘অনন্ত সহিংসতা’ চাইছে।

তথ্য সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *