যুক্তরাষ্ট্রজুড়ে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এবং বিলিওনেয়ার ইলন মাস্কের নীতির বিরুদ্ধে ব্যাপক বিক্ষোভের প্রস্তুতি চলছে। ‘হ্যান্ডস অফ!’ (হাত সরান!) শিরোনামে আয়োজিত এই প্রতিবাদ কর্মসূচীগুলো সরকারের আকার কমানো, অর্থনীতি, মানবাধিকারসহ বিভিন্ন ইস্যুতে ট্রাম্প প্রশাসনের পদক্ষেপের প্রতিবাদে অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে।
যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন রাজ্যের রাজধানী এবং ন্যাশনাল মলের মতো গুরুত্বপূর্ণ স্থানগুলোতে শনিবার (সূত্রমতে) এই বিক্ষোভ প্রদর্শনের পরিকল্পনা করা হয়েছে। জানা গেছে, দেড় শতাধিক বিভিন্ন সংগঠন একত্রিত হয়ে ১,২০০টির বেশি স্থানে এই বিক্ষোভের আয়োজন করছে।
এর মধ্যে রয়েছে নাগরিক অধিকার সংস্থা, শ্রমিক ইউনিয়ন, এলজিবিটিকিউ+ অধিকার কর্মী, এবং নির্বাচন সংস্কারের জন্য কাজ করা বিভিন্ন সংগঠন।
বিক্ষোভকারীরা মূলত ট্রাম্প প্রশাসনের কয়েকটি সিদ্ধান্তের তীব্র সমালোচনা করছেন। এর মধ্যে রয়েছে হাজার হাজার ফেডারেল কর্মীকে বরখাস্ত করা, সামাজিক নিরাপত্তা প্রশাসনের ফিল্ড অফিস বন্ধ করা, বিভিন্ন সরকারি সংস্থা কার্যত গুটিয়ে নেওয়া, অভিবাসীদের বিতাড়ন করা, এবং রূপান্তরকামীদের অধিকার সুরক্ষা হ্রাস করা।
এছাড়া, স্বাস্থ্যখাতে ফেডারেল অর্থায়ন কমানোর বিষয়টিও তাদের উদ্বেগের কারণ।
টেসলা, স্পেসএক্স এবং সামাজিক মাধ্যম এক্স-এর মালিক ইলন মাস্ক, যিনি একসময় ট্রাম্পের উপদেষ্টা ছিলেন, সরকারের কর্মপরিধি কমাতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছেন। নবগঠিত ‘সরকার দক্ষতা বিভাগ’-এর প্রধান হিসেবে তিনি কাজ করছেন এবং তাঁর দাবি, এর মাধ্যমে করদাতাদের কয়েক বিলিয়ন ডলার সাশ্রয় হচ্ছে।
যদিও হোয়াইট হাউস এই বিক্ষোভ নিয়ে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হয়নি, বিক্ষোভকারীরা বলছেন, তাঁরা ট্রাম্প প্রশাসনের নীতির পরিবর্তন চান। অতীতেও ট্রাম্প বা মাস্কের নীতির বিরুদ্ধে বিভিন্ন সময়ে বিক্ষোভ হয়েছে, তবে আয়োজকরা আশা করছেন, এবারের সমাবেশটি আকারে অনেক বড় হবে।
তাঁরা মনে করেন, ২০১৭ সালের ‘নারী মার্চ’ অথবা ২০২০ সালের জর্জ ফ্লয়েডের মৃত্যুর পর হওয়া ‘ব্ল্যাক লাইভস ম্যাটার’ আন্দোলনের মতো এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা হতে পারে।
বিক্ষোভকারীরা তাঁদের দাবির সমর্থনে ব্যাপক জনসমর্থন প্রত্যাশা করছেন। তাঁদের মতে, এই বিক্ষোভ শুধু একটি নির্দিষ্ট দেশের অভ্যন্তরীণ বিষয় নয়, বরং বিশ্বজুড়ে সরকার, অর্থনীতি, এবং সামাজিক ন্যায়বিচারের ধারণার সঙ্গে সম্পর্কিত একটি বৃহত্তর বিতর্কের অংশ।
তাঁরা চান, এই প্রতিবাদের মাধ্যমে সরকারের নীতি পরিবর্তনে চাপ সৃষ্টি করা হোক এবং জনগণের অধিকার সুরক্ষিত হোক।
তথ্য সূত্র: অ্যাসোসিয়েটেড প্রেস