আতঙ্কে হার্ভার্ডের সমাবর্তন! ট্রাম্পের সঙ্গে দ্বন্দ্বে কি শিক্ষা সঙ্কট?

হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাবর্তন অনুষ্ঠানে উদ্বেগের ছায়া, ট্রাম্প প্রশাসনের নীতির প্রভাব

যুক্তরাষ্ট্রের অন্যতম শীর্ষস্থানীয় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে সমাবর্তন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। তবে এবারের আয়োজনটি কিছুটা ভিন্ন, কারণ এর সঙ্গে জড়িয়ে আছে এক ধরনের অনিশ্চয়তা।

সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসন আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের ওপর যে নীতি গ্রহণ করেছে, তার সরাসরি প্রভাব পড়েছে এই অনুষ্ঠানে।

হার্ভার্ডের বহু শিক্ষার্থী, বিশেষ করে যারা বিভিন্ন দেশ থেকে এখানে পড়তে এসেছেন, তাদের ভবিষ্যৎ নিয়ে দেখা দিয়েছে শঙ্কা।

বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, হার্ভার্ডের মোট শিক্ষার্থীর ২৭ শতাংশই আন্তর্জাতিক ছাত্র-ছাত্রী।

এদের মধ্যে অনেকেরই আশঙ্কা, ট্রাম্প প্রশাসনের নতুন নীতির কারণে হয়তো তাদের পড়াশোনা মাঝপথেই বন্ধ হয়ে যেতে পারে।

এই পরিস্থিতিতে, সমাবর্তন অনুষ্ঠানে আনন্দ অনেকটাই ফিকে হয়ে এসেছে, এমনটাই মনে করছেন অনেকে।

যেমন, সুইডেন থেকে আসা লিও গার্ডেন নামের একজন শিক্ষার্থী সিএনএন-কে দেওয়া সাক্ষাৎকারে জানিয়েছেন, তিনি এই দিনটির জন্য অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছিলেন।

কিন্তু এখন তার মনে হচ্ছে, সবকিছু আগের মতো স্বাভাবিক নাও হতে পারে।

বর্তমানে, হার্ভার্ড কর্তৃপক্ষও এই পরিস্থিতিতে বেশ সতর্ক অবস্থানে রয়েছে।

তারা একদিকে যেমন শিক্ষার্থীদের পাশে দাঁড়াচ্ছে, তেমনি আবার প্রশাসনের সঙ্গে সরাসরি সংঘাত এড়িয়ে চলার চেষ্টা করছে।

জানা গেছে, শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে এই নীতির বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানানো হয়েছে, কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয় চাইছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে।

এদিকে, হার্ভার্ড কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের উপর নিষেধাজ্ঞা আরোপের অভিযোগ উঠেছে।

বিষয়টির আইনি লড়াই এখনো চলছে, এবং আদালতের রায় আসার অপেক্ষায় রয়েছেন সকলে।

এই মামলার শুনানিও সমাবর্তনের সময় কাছাকাছি সময়ে অনুষ্ঠিত হবে।

আরেকজন শিক্ষার্থী, পাকিস্তানের নাগরিক আব্দুল্লাহ শাহিদ সিয়াল, যিনি হার্ভার্ড আন্ডারগ্র্যাজুয়েট অ্যাসোসিয়েশনের কো-প্রেসিডেন্ট, জানিয়েছেন, এই পরিস্থিতিতে তারা খুবই অসহায় বোধ করছেন।

তাদের মনে হচ্ছে, যেন তাদের সব স্বপ্ন কেড়ে নেওয়া হচ্ছে।

গত বছর, সমাবর্তন অনুষ্ঠানে বক্তৃতার কারণে বিতর্ক সৃষ্টি হয়েছিল।

ফিলিপাইনের অনুসন্ধানী সাংবাদিক মারিয়া রেসা-কে বক্তা হিসেবে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল।

ইসরায়েল-ফিলিস্তিন সংঘাত নিয়ে তার মন্তব্যের জেরে অনেকে ক্ষোভ প্রকাশ করেন।

বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, ট্রাম্প প্রশাসনের এই ধরনের নীতি শুধু হার্ভার্ড নয়, বরং যুক্তরাষ্ট্রের অন্যান্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের জন্যও উদ্বেগের কারণ।

কারণ, এর ফলে আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীরা আমেরিকায় আসতে নিরুৎসাহিত হতে পারে, যা দেশটির শিক্ষাখাতে নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে।

হার্ভার্ড কর্তৃপক্ষের মতে, তারা শিক্ষার্থীদের অধিকার রক্ষার জন্য সব ধরনের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।

তবে বর্তমান পরিস্থিতিতে সমাবর্তন অনুষ্ঠানটি কেমন হবে, তা নিয়ে সবার মনেই একটা কৌতূহল রয়েছে।

তথ্য সূত্র: সিএনএন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *