হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘ডিইআই’ অফিসের নাম পরিবর্তন, বিতর্কের ঝড়।
যুক্তরাষ্ট্রের প্রখ্যাত হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয় তাদের ‘ডাইভারসিটি, ইক্যুইটি অ্যান্ড ইনক্লুশন’ (ডিইআই) অফিসের নাম পরিবর্তন করেছে। নতুন নামকরণ করা হয়েছে ‘কমিউনিটি অ্যান্ড ক্যাম্পাস লাইফ’।
এমন একটা সময়ে এই পরিবর্তন আনা হলো, যখন দেশটির প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসন দেশজুড়ে ডিইআই প্রোগ্রামগুলো বিলুপ্ত করার জন্য চাপ সৃষ্টি করছে।
খবরটি এমন এক সময়ে এলো, যখন শ্বেতাঙ্গ আধিপত্যের অভিযোগ তুলে হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু করেছে ট্রাম্প প্রশাসন।
বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, হার্ভার্ড কর্তৃপক্ষ মূলত তাদের ক্যাম্পাস ও কমিউনিটিতে অন্তর্ভুক্তিমূলক পরিবেশ বজায় রাখতে চায়।
তবে, ডিইআই অফিসের নাম পরিবর্তনের ফলে কী ধরনের পরিবর্তন আসবে, সে বিষয়ে বিস্তারিত কিছু জানানো হয়নি।
হার্ভার্ড কর্তৃপক্ষের দাবি, তারা বিভিন্ন ব্যাকগ্রাউন্ড ও অভিজ্ঞতার মানুষদের একত্রিত করে একটি সমন্বিত পরিবেশ তৈরি করতে চায়, যেখানে প্রত্যেক ব্যক্তির নিজস্ব অভিজ্ঞতা ও অবদানের প্রতি গুরুত্ব দেওয়া হবে, কোনো বিশেষ গোষ্ঠীর ওপর নয়।
ট্রাম্প প্রশাসনের পক্ষ থেকে হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের বিরুদ্ধে গবেষণা খাতে ফেডারেল ফান্ডিং বন্ধ করে দেওয়ারও ঘোষণা করা হয়েছে।
এর কারণ হিসেবে শ্বেতাঙ্গ আধিপত্যের অভিযোগ এবং ক্যাম্পাসে ইহুদিবিদ্বেষের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে ব্যর্থতাকে দায়ী করা হয়েছে।
শুধু হার্ভার্ডই নয়, কর্নেল ও নর্থওয়েস্টার্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো আরও কিছু শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ওপরও একই ধরনের শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়ার হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়েছে।
এছাড়া, প্রায় ৬০টির মতো উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানে চিঠি পাঠিয়ে তাদের সতর্ক করা হয়েছে।
হার্ভার্ডের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, তারা তাদের স্বাধীনতা ও সাংবিধানিক অধিকার কোনোভাবেই ছাড় দেবে না।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রেসিডেন্ট আলান এম. গারবারের মতে, তারা আইনের সঙ্গে সঙ্গতি রেখে একটি প্রাণবন্ত ও অন্তর্ভুক্তিমূলক সমাজ ব্যবস্থা গড়ে তুলতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
তবে, ট্রাম্প প্রশাসনের পক্ষ থেকে ডিইআই প্রোগ্রামগুলোকে ‘অবৈধ ও অনৈতিক’ বলে উল্লেখ করা হয়েছে।
তাদের মতে, এই ধরনের কার্যক্রম বৈষম্যমূলক।
হার্ভার্ডের এই পদক্ষেপের পর দেশটির বিভিন্ন সরকারি সংস্থা, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও কর্পোরেট অফিসেও ডিইআই বিষয়ক কার্যক্রমের পুনর্গঠন হতে দেখা যাচ্ছে।
উল্লেখ্য, ডিইআই প্রোগ্রামগুলো মূলত জাতি, লিঙ্গ, শ্রেণি এবং অন্যান্য ক্ষেত্রে প্রতিনিধিত্ব বাড়ানোর জন্য তৈরি করা হয়।
যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসন হার্ভার্ডের ফেডারেল ফান্ডিং বন্ধ করার পাশাপাশি বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্যাক্স-মুক্ত সুবিধাও বাতিল করতে পারে বলে জানা গেছে।
এছাড়া, বিদেশি শিক্ষার্থীদের জন্য ভিসা দেওয়ার ক্ষেত্রেও তারা কড়াকড়ি আরোপ করতে পারে।
হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের মতে, ট্রাম্প প্রশাসনের এই পদক্ষেপ তাদের স্বাধীনতা খর্ব করার চেষ্টা এবং এটি তাদের সাংবিধানিক অধিকারের পরিপন্থী।
তথ্য সূত্র: সিএনএন