২.২ বিলিয়ন ডলার হারাতে পারে হার্ভার্ড, উদ্বিগ্ন বিজ্ঞানীরা!

ঢাকা, [আজকের তারিখ]। যুক্তরাষ্ট্রের খ্যাতনামা হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষণা খাতে প্রায় ২.২ বিলিয়ন মার্কিন ডলার ফেডারেল সাহায্য বন্ধ করার হুমকি দিয়েছে দেশটির ট্রাম্প প্রশাসন। এই সিদ্ধান্তের ফলে বিশ্ববিদ্যালয়টির গবেষণা কার্যক্রম মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রশাসনের সঙ্গে হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের নীতিগত কিছু বিষয় নিয়ে মতবিরোধ দেখা দিয়েছে। হোয়াইট হাউজ চাইছে, বিশ্ববিদ্যালয়ের অভ্যন্তরীন কিছু নীতিতে পরিবর্তন আনা হোক। এই চাপের অংশ হিসেবে ফেডারেল গ্রান্ট বন্ধ করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। হার্ভার্ড কর্তৃপক্ষ অবশ্য তাদের অবস্থানে অনড় রয়েছে। দেশটির উচ্চশিক্ষা অঙ্গনে এই ঘটনা গভীর উদ্বেগের সৃষ্টি করেছে।

হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের বার্ষিক আয়ের ১০.৫ শতাংশ আসে ফেডারেল সাহায্য থেকে, যা গবেষণা এবং অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ খাতে ব্যয় করা হয়। এছাড়া, বিশ্ববিদ্যালয়ের টি.এইচ. চ্যান স্কুল অফ পাবলিক হেলথ-এর গবেষণা বাজেটের প্রায় ৪৬ শতাংশ আসে ফেডারেল গ্রান্ট থেকে। এই অর্থ ক্যান্সার, আলঝেইমার, স্ট্রোক এবং এইচআইভি-র মতো রোগের গবেষণা কাজে ব্যবহৃত হয়। সাহায্য বন্ধ হয়ে গেলে এসব গুরুত্বপূর্ণ গবেষণা মারাত্মকভাবে ব্যাহত হবে।

হার্ভার্ডের বিশাল ভাণ্ডার (এন্ডোমেন্ট) রয়েছে, যা প্রায় ৫৩ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের সমান। অনেকে মনে করেন, এই তহবিল থেকে গবেষণা খাতে অর্থ ব্যয় করা যেতে পারে। তবে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের মতে, এই তহবিল নির্দিষ্ট কিছু উদ্দেশ্যে গঠিত, তাই একে সব কাজে ব্যবহার করা সম্ভব নয়। এছাড়াও, মধ্যবিত্ত ও নিম্ন আয়ের শিক্ষার্থীদের টিউশন ফি-র জন্য এই তহবিলের একটি অংশ ব্যবহার করা হয়।

ফেডারেল গ্রান্ট বন্ধ হলে হার্ভার্ডের আন্ডারগ্রাজুয়েট শিক্ষার্থীদের গবেষণা করার সুযোগ কমে যেতে পারে। এছাড়া, শীর্ষস্থানীয় গবেষকদের সাথে তাদের সংযোগও দুর্বল হয়ে যেতে পারে। সম্প্রতি, মধ্যবিত্ত পরিবারের শিক্ষার্থীদের টিউশন ফি কমানোর জন্য হার্ভার্ড আর্থিক সহায়তা বাড়িয়েছে। ফেডারেল সাহায্য বন্ধ হলে এই পরিকল্পনাতেও প্রভাব পড়তে পারে।

হার্ভার্ডের পাশাপাশি, ব্রাউন ইউনিভার্সিটির মতো অন্যান্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠানও একই ধরনের সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছে। ব্রাউনের ক্ষেত্রেও ফেডারেল সাহায্য বন্ধ করার পরিকল্পনা করা হচ্ছে।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, হার্ভার্ডের মতো বিশ্বখ্যাত বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষণা খাতে অর্থায়ন বন্ধ হয়ে গেলে তা বৈশ্বিক বিজ্ঞানচর্চায় নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে। কারণ, হার্ভার্ডের গবেষণাগুলি সারা বিশ্বের মানুষের স্বাস্থ্য ও জীবনযাত্রার মান উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। উদাহরণস্বরূপ, বাংলাদেশেও ক্যান্সার, আলঝেইমার, স্ট্রোক ও এইডস-এর মতো রোগ বাড়ছে, এবং এসব রোগের চিকিৎসাপদ্ধতি উন্নত করতে হার্ভার্ডের গবেষণা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। (১ মার্কিন ডলার = ১১০ টাকা ধরে হিসাব করলে ২.২ বিলিয়ন মার্কিন ডলার প্রায় ২৪,২০০ কোটি টাকার সমান)।

তথ্য সূত্র: এসোসিয়েটেড প্রেস।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *