আতঙ্কে হার্ভার্ডের মুসলিম ও ইহুদি ছাত্ররা! রিপোর্টে আসল ঘটনা!

হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে জাতিগত বিদ্বেষ ও সংখ্যালঘুদের প্রতি বৈষম্য বিষয়ক দুটি গুরুত্বপূর্ণ প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে। এই দুটি প্রতিবেদনে বিশ্ববিদ্যালয়ের অভ্যন্তরে ইহুদি ও মুসলিম শিক্ষার্থীদের প্রতি বিদ্বেষমূলক আচরণের চিত্র তুলে ধরা হয়েছে।

মঙ্গলবার (তারিখ উল্লেখ করা হয়নি, তবে মঙ্গলবার বলা হয়েছে) প্রকাশিত এই প্রতিবেদনগুলোতে শিক্ষক, শিক্ষার্থী এবং কর্মচারী সহ প্রায় ২,৩০০ জনের মতামত নেওয়া হয়েছে।

প্রতিবেদনগুলোতে দেখা যায়, অনেক শিক্ষার্থী তাদের ব্যক্তিগত মতপ্রকাশ করতে স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করেন না। জরিপে অংশ নেওয়া ৬৭ শতাংশ ইহুদি শিক্ষার্থী এবং ৮০ শতাংশ মুসলিম শিক্ষার্থী জানিয়েছেন, তারা তাদের মতামত প্রকাশ করতে অস্বস্তি বোধ করেন।

এছাড়াও, ৯২ শতাংশ মুসলিম শিক্ষার্থী মনে করেন, তাদের নিজস্ব মতামত প্রকাশ করলে পেশাগত বা অ্যাকাডেমিক ক্ষেত্রে প্রতিকূলতার শিকার হতে পারেন। অন্যদিকে, ৬১ শতাংশ ইহুদি শিক্ষার্থীরও একই ধারণা।

প্রতিবেদনগুলোতে বিশেষভাবে উল্লেখ করা হয়েছে, গত বছরের ৭ই অক্টোবর ইসরায়েলে হামলার পর পরিস্থিতি আরও খারাপ হয়েছে। অনেক ইহুদি শিক্ষার্থী তাদের পরিচয় গোপন রাখতে বাধ্য হয়েছেন এবং তাদের ওপর বিভিন্ন ধরনের হয়রানি ও বৈষম্যমূলক আচরণ করা হয়েছে।

হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রেসিডেন্ট অ্যালান গাবার এক বিবৃতিতে এই পরিস্থিতিকে “দুঃখজনক এবং বেদনাদায়ক” বলে উল্লেখ করেছেন। তিনি জানান, বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এই সমস্যা সমাধানে পদক্ষেপ গ্রহণ করবে।

প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, মুসলিম, আরব এবং ফিলিস্তিনি সম্প্রদায়ের সদস্যরা তাদের উদ্বেগের কথা জানালে অনেক সময় কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে সাড়া পাননি। তাদের মতে, গাজায় চলমান মানবিক সংকট নিয়ে কথা বলতে গিয়ে তাদের “নিরব” করে দেওয়া হয়েছে।

অনেক শিক্ষার্থী মনে করেন, তাদের মতামতকে গুরুত্ব দেওয়া হয়নি।

বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে বিভিন্ন পদক্ষেপ নেওয়ার সুপারিশ করা হয়েছে, যার মধ্যে রয়েছে- ক্যাম্পাসে নিরাপত্তা বৃদ্ধি, বিভিন্ন আলোচনা অনুষ্ঠানের আয়োজন, এবং ভিন্ন মতাদর্শের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হওয়ার পরিবেশ তৈরি করা। এছাড়াও, অনলাইনে হয়রানির শিকার হওয়া শিক্ষার্থীদের জন্য সহায়তা প্রদানের কথাও বলা হয়েছে।

এই ঘটনার প্রেক্ষাপটে, হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয় বর্তমানে ফেডারেল সরকারের কাছ থেকে প্রায় ২ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের তহবিল পাওয়ার ক্ষেত্রে আইনি জটিলতার সম্মুখীন হচ্ছে। যুক্তরাষ্ট্র সরকারের পক্ষ থেকে অভিযোগ করা হয়েছে, বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ জাতিগত বিদ্বেষ মোকাবিলায় যথেষ্ট পদক্ষেপ নেয়নি।

হার্ভার্ডের এই দুটি প্রতিবেদন প্রকাশ, দেশটির বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে সংখ্যালঘুদের প্রতি বিদ্বেষ ও বৈষম্য বিষয়ক আলোচনার একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। এই ধরনের ঘটনাগুলো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে সকলের জন্য একটি অন্তর্ভুক্তিমূলক পরিবেশ তৈরি করার প্রয়োজনীয়তা আরও একবার তুলে ধরে।

তথ্য সূত্র: সিএনএন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *