**হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসা প্রোগ্রাম নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের তদন্ত, উদ্বিগ্ন আন্তর্জাতিক ছাত্র-শিক্ষকরা**
যুক্তরাষ্ট্রের বিখ্যাত হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের বিদেশি ছাত্র এবং গবেষকদের জন্য ভিসা প্রোগ্রামের বিষয়ে তদন্ত শুরু করেছে দেশটির পররাষ্ট্র দপ্তর। বুধবার (গতকাল) এই খবর জানা গেছে। মূলত, যারা শিক্ষা ও গবেষণার উদ্দেশ্যে অন্য দেশ থেকে যুক্তরাষ্ট্রে আসেন, তাদের ভিসা দেয়ার ক্ষেত্রে এই এক্সচেঞ্জ ভিজিটর প্রোগ্রামটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে।
যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের আমল থেকে হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের ওপর বিভিন্ন সময়ে চাপ সৃষ্টি করা হয়েছে। এর ধারাবাহিকতায়, এবার এই তদন্ত কার্যক্রম শুরু হলো। সম্প্রতি, একটি ফেডারেল অ্যান্টিসেমিটিজম টাস্কফোর্সের কিছু দাবি প্রত্যাখ্যান করার পরেই হার্ভার্ড কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে এমন পদক্ষেপ নেয়া হলো। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের ধারণা, এটি তাদের বিরুদ্ধে প্রতিশোধমূলক ব্যবস্থা। হার্ভার্ড কর্তৃপক্ষ ইতোমধ্যে ফেডারেল সরকারের কাছ থেকে প্রায় ২.৬ বিলিয়ন ডলারের তহবিল কর্তনের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে মামলা করেছে।
পররাষ্ট্র দপ্তরের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, তারা এই প্রোগ্রামের নিয়মকানুনগুলো সঠিকভাবে মানা হচ্ছে কিনা, তা খতিয়ে দেখছে। একইসাথে, সাংস্কৃতিক বিনিময় এবং পারস্পরিক বোঝাপড়ার ক্ষেত্রে বিশ্ববিদ্যালয়টির ভূমিকা কেমন, সে বিষয়টিও তারা পর্যবেক্ষণ করবে। পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র মারকো রুবিও (fictional) এই বিষয়ে বিস্তারিত কিছু জানাননি।
হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের মুখপাত্র জেসন নিউটন এই তদন্তকে ‘প্রতিশোধমূলক পদক্ষেপ’ হিসেবে বর্ণনা করেছেন। তিনি বলেন, “আমরা আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থী, গবেষক এবং শিক্ষকদের ভর্তি ও সহায়তা অব্যাহত রাখব। তাদের ভিসা আবেদনের ক্ষেত্রে এবং এই বছর আমাদের ক্যাম্পাসে আসার সময় আমরা সব ধরনের সহযোগিতা করব।
নিউটন আরও জানান, বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ প্রোগ্রামের নিয়মকানুন মেনে চলতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
বারাক ওবামা প্রশাসনের অধীনে বৈশ্বিক সম্পর্ক বিভাগের সাবেক পরিচালক ব্রেন্ট ব্রুয়েন এক টুইট বার্তায় বলেছেন, এমন পদক্ষেপের কোনো যৌক্তিকতা নেই। তিনি মনে করেন, এর ফলে শুধু হার্ভার্ডের ক্ষতি হবে না, বরং ক্ষতিগ্রস্ত হবে আমেরিকান উচ্চশিক্ষা এবং শিল্প, যা মেধাবী ও উজ্জ্বল শিক্ষার্থীদের ওপর নির্ভরশীল।
যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তর বলছে, তারা নিশ্চিত করতে চায়, এই প্রোগ্রামগুলো যেন “আমাদের দেশের স্বার্থের পরিপন্থী” না হয়।
এর আগে, ট্রাম্প প্রশাসন হার্ভার্ডকে বিদেশি শিক্ষার্থীদের আতিথেয়তা থেকে বিরত রাখতে কয়েক দফা চেষ্টা চালিয়েছে। এমনকি, বিশ্ববিদ্যালয়টির ট্যাক্স-মুক্ত মর্যাদা বাতিল করারও হুমকি দেওয়া হয়েছিল। গত মাসে, তার প্রশাসন হার্ভার্ডে অ্যান্টিসেমিটিজম বা ইহুদি বিদ্বেষের অভিযোগ তোলে, যা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফেডারেল তহবিল, যেমন—শিক্ষার্থীদের ঋণ বা অনুদান—বন্ধ করে দিতে পারে।
হার্ভার্ডের প্রেসিডেন্ট অ্যালান গারবার জানিয়েছেন, তারা অ্যান্টিসেমিটিজম মোকাবিলায় কিছু পরিবর্তন এনেছেন, তবে তারা প্রশাসনের সব দাবি মেনে নিতে রাজি নন।
তথ্য সূত্র: এসোসিয়েটেড প্রেস