উইনস্টিনের বিচার: রায় নিয়ে অনুশোচনা, বিচারকদের চাপে?”,

হলিউডের প্রভাবশালী চলচ্চিত্র প্রযোজক হার্ভে উইনস্টাইনের বিরুদ্ধে যৌন নিপীড়নের অভিযোগে করা মামলার রায় নিয়ে নতুন বিতর্ক সৃষ্টি হয়েছে। সম্প্রতি জানা গেছে, উইনস্টাইনের বিরুদ্ধে রায় দেওয়া দুইজন জুরি সদস্য তাঁদের সিদ্ধান্তের জন্য অনুশোচনা প্রকাশ করেছেন।

তাঁদের দাবি, অন্য জুরিদের চাপ ও ভয়ে তাঁরা উইনস্টাইনকে দোষী সাব্যস্ত করতে বাধ্য হয়েছিলেন।

২০২৩ সালের জুনে এই মামলার রায় ঘোষণা করা হয়। সেই রায়ে উইনস্টাইনকে প্রথম-ডিগ্রি অপরাধমূলক যৌন কাজের জন্য দোষী সাব্যস্ত করা হয়।

অভিযোগ ছিল, তিনি টেলিভিশন ও চলচ্চিত্র প্রযোজনা সহকারী মিরিয়াম হ্যালেকে ২০০৬ সালে মৌখিক যৌন সম্পর্ক স্থাপন করতে বাধ্য করেছিলেন।

উইনস্টাইনের আইনজীবীরা এখন এই রায় বাতিলের জন্য আবেদন করেছেন। তাঁদের যুক্তি, বিচারের সময় জুরিদের মধ্যে হুমকি, ভীতি প্রদর্শন এবং পক্ষপাতিত্ব ছিল।

আইনজীবীরা আদালতের কাছে জমা দেওয়া হলফনামায় উল্লেখ করেছেন, দুইজন জুরি সদস্য জানিয়েছেন যে তাঁরা অন্য জুরিদের দ্বারা প্রভাবিত হয়েছিলেন।

তাঁদের একজন বলেছেন, জুরি কক্ষে তাঁকে চিৎকার করে বলা হয়েছিল, “আমরা তোমাকে এখান থেকে সরাতে চাই।” অন্য একজন জুরির ভাষ্যমতে, উইনস্টাইনের বিরুদ্ধে সন্দেহ প্রকাশ করা হলে অন্যান্য জুরিরা তাঁকে জেরা করতেন।

তিনি আরও জানান, গোপন ব্যালটে ভোট দেওয়ার সুযোগ থাকলে তিনি তিনটি অভিযোগেই ‘দোষী নয়’ রায় দিতেন।

আদালতে জমা দেওয়া হলফনামায় জুরিরা তাঁদের উদ্বেগের কথা জানিয়েছেন। তাঁরা জানান, তাঁরা নিজেদের নিরাপত্তার বিষয়ে ভীত ছিলেন।

এমনকি জুরি বোর্ডের প্রধানের নিরাপত্তা নিয়েও শঙ্কা প্রকাশ করেছিলেন তাঁরা। হলফনামায় আরও জানা যায়, কিছু জুরির মধ্যে এমন ধারণা ছিল যে, উইনস্টাইন বা তাঁর আইনজীবীরা সম্ভবত অন্য কোনো জুরিকে প্রভাবিত করেছেন।

তবে এই মামলার বিচারক কার্টিস ফারবার বলেছেন, তিনি জুরিদের আলোচনার গোপনীয়তাকে সম্মান করেন। তিনি তাঁদের বিচারকক্ষ্যের আলোচনা নিয়ে কোনো মন্তব্য করতে নিষেধ করেছিলেন।

জানা গেছে, বিচারক আগামী ১০ই নভেম্বরের মধ্যে প্রসিকিউটরদের কাছ থেকে প্রতিক্রিয়া চেয়েছেন এবং ২২শে ডিসেম্বরের মধ্যে রায় দেবেন।

উল্লেখ্য, এর আগে ২০২০ সালে উইনস্টাইনের বিরুদ্ধে আনা যৌন নিপীড়নের অভিযোগের ভিত্তিতে তাঁকে দোষী সাব্যস্ত করা হয়েছিল।

তবে সেই রায়টি গত বছর বাতিল হয়ে যায়। বর্তমানে তিনি অন্য একটি মামলায় কারাবন্দী রয়েছেন এবং সেই রায়ের বিরুদ্ধেও আপিল করেছেন।

তথ্য সূত্র: এসোসিয়েটেড প্রেস

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *