হিটরোর বন্ধ: আটকে পড়া যাত্রীদের অধিকার? জানুন!

লন্ডনের হিথ্রো বিমানবন্দরে অগ্নিকাণ্ডের কারণে বিদ্যুৎ বিভ্রাটের সৃষ্টি হওয়ায় শুক্রবার বিমান চলাচল ব্যাহত হয়েছে। এতে চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন কয়েক হাজার যাত্রী।

জানা গেছে, বিমানবন্দরের নিরাপত্তা কর্মীদের তৎপরতায় দ্রুত আগুন নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব হয়েছে। তবে, বিমানবন্দরের কার্যক্রম স্বাভাবিক হতে বেশ কয়েক দিন সময় লাগতে পারে।

ব্রিটিশ সংবাদ মাধ্যম সূত্রে জানা যায়, শুক্রবার সাধারণত ভ্রমণের ব্যস্ততম দিন। এই দিনে ব্যবসায়িক কাজে আসা মানুষজন যেমন নিজ গন্তব্যে ফেরেন, তেমনি অনেকে অবকাশ যাপনেও যান।

কিন্তু অগ্নিকাণ্ডের কারণে হিথরো বিমানবন্দরে ফ্লাইট ওঠা-নামা বন্ধ হয়ে যাওয়ায় প্রায় ২ লাখ ৯১ হাজার যাত্রী এতে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন।

যদি কোনো বাংলাদেশি যাত্রী এই ঘটনার শিকার হয়ে থাকেন, তাহলে তাদের জন্য কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয় জানা প্রয়োজন।

**ফ্লাইট বাতিল হলে করণীয়:** যদি আপনার ফ্লাইট বাতিল হয়ে যায় এবং আপনি যুক্তরাজ্য থেকে যাত্রা শুরু করেন অথবা কোনো ব্রিটিশ এয়ারলাইন্সে যুক্তরাজ্যে ফিরছেন, তাহলে এয়ারলাইন্স আপনাকে দ্রুত বিকল্প ফ্লাইটের ব্যবস্থা করবে অথবা টিকিটের সম্পূর্ণ মূল্য ফেরত দিতে বাধ্য থাকবে।

অন্য কোনো এয়ারলাইন্সের ক্ষেত্রে, আপনার টিকিটের শর্তাবলী ভালোভাবে দেখে নিতে হবে।

**রিফান্ড অথবা নতুন ফ্লাইট:** রিফান্ড নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিলে, এয়ারলাইন্সের আর আপনার প্রতি কোনো দায়িত্ব থাকবে না।

সেক্ষেত্রে নিজের ব্যবস্থাপনায় অন্য ফ্লাইটের ব্যবস্থা করতে হতে পারে। হিথরোর মতো ব্যস্ত বিমানবন্দরে তাৎক্ষণিক নতুন ফ্লাইট পাওয়া কঠিন হতে পারে, বিশেষ করে যারা দেশের বাইরে আটকা পড়েছেন তাদের জন্য।

**বিমানবন্দরে আটকে পড়লে:** বিমানবন্দরে আটকে পড়লে, সেখানে আপনার জন্য প্রয়োজনীয় সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত করতে এয়ারলাইন্স বাধ্য থাকবে।

এর মধ্যে খাবার, ফোন করার ব্যবস্থা, এবং প্রয়োজনে হোটেলে থাকার ব্যবস্থা অন্তর্ভুক্ত। যদি ফ্লাইট পরের দিন বা তারও পরে বিলম্বিত হয়, তবে এয়ারলাইন্সকে এই সুবিধা দিতে হবে।

যদি এয়ারলাইন্স আপনাকে অন্য কোনো ব্যবস্থা করতে বলে এবং পরে সেই খরচ দাবি করতে বলে, তবে এক্ষেত্রে সবচেয়ে ভালো মানের হোটেলে না যাওয়াই ভালো।

**ক্ষতিপূরণ পাওয়ার সম্ভাবনা:** সাধারণত, ফ্লাইট বিলম্বিত বা বাতিল হওয়ার পেছনে এয়ারলাইন্সের গাফিলতি থাকলে ক্ষতিপূরণ পাওয়া যায়।

তবে, এই ঘটনাটি একটি অপ্রত্যাশিত পরিস্থিতি (extraordinary circumstances) হওয়ায় ক্ষতিপূরণ পাওয়ার সম্ভাবনা কম।

**প্যাকেজ ট্যুরের ক্ষেত্রে:** যদি আপনার ফ্লাইট প্যাকেজ ট্যুরের অংশ হয়, তাহলে কিছু অতিরিক্ত সুরক্ষা পাওয়ার সুযোগ আছে।

যদি আপনার হলিডে বাতিল হয় অথবা উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন আসে, তাহলে আপনার ট্রাভেল কোম্পানিকে বিকল্প ব্যবস্থা করতে হবে অথবা প্যাকেজের সম্পূর্ণ মূল্য ফেরত দিতে হবে।

**ভ্রমণ বীমা (Travel Insurance) :** ফ্লাইট বাতিলের ২৪ ঘণ্টার মধ্যে যদি নতুন ফ্লাইট খুঁজে না পাওয়া যায়, তাহলে আপনার ভ্রমণ বীমার অধীনে ক্ষতিপূরণ পাওয়ার সম্ভাবনা থাকে।

আপনার বীমা পলিসিতে এই ধরনের ঘটনার জন্য সুরক্ষার ব্যবস্থা আছে কিনা, তা দেখে নেওয়া উচিত। এছাড়াও, এই ঘটনার কারণে আপনার অন্যান্য যে খরচ হয়েছে, যেমন গাড়ি ভাড়া বা বিমান পার্কিং ফি, তারও ক্ষতিপূরণ পাওয়া যেতে পারে।

এই মুহূর্তে বিমানবন্দরে যাওয়া উচিত হবে না।

কর্তৃপক্ষের নির্দেশনা অনুযায়ী, পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হওয়া পর্যন্ত বিমানবন্দরে ভ্রমণ করা এড়িয়ে চলুন।

এয়ারলাইন্সের পরবর্তী ঘোষণার জন্য অপেক্ষা করুন।

তথ্য সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *