লন্ডনের হিথ্রো বিমানবন্দরে বিদ্যুৎ বিভ্রাটের কারণে সৃষ্ট জটিলতা কাটিয়ে স্বাভাবিক কার্যক্রম শুরু হয়েছে। গত শুক্রবার, ওয়েস্ট লন্ডনের একটি বৈদ্যুতিক সাবস্টেশনে অগ্নিকাণ্ডের কারণে বিমানবন্দরের কার্যক্রম ব্যাহত হয়।
এর ফলে এক হাজারের বেশি ফ্লাইট বাতিল করতে বাধ্য হয় কর্তৃপক্ষ, যার শিকার হন প্রায় দুই লক্ষাধিক যাত্রী। ইউরোপের বৃহত্তম বিমানবন্দর হিসেবে পরিচিত হিথরোর এই ঘটনা আন্তর্জাতিক বিমান চলাচলের ক্ষেত্রে একটি গুরুত্বপূর্ণ উদ্বেগের জন্ম দিয়েছে।
শুক্রবারের ঘটনার পর শনিবার থেকে ধীরে ধীরে বিমান চলাচল স্বাভাবিক হতে শুরু করে এবং বর্তমানে বিমানবন্দরের সকল কার্যক্রম স্বাভাবিকভাবে চলছে। তবে কিছু ফ্লাইটে সামান্য বিলম্ব হয়েছে।
বিদ্যুৎ বিভ্রাটের কারণ অনুসন্ধানে ইতোমধ্যে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছে ব্রিটিশ সরকার। দেশটির জ্বালানি বিষয়ক মন্ত্রী এড মিলিব্যান্ড ন্যাশনাল এনার্জি সিস্টেম অপারেটরকে (Neso) এই ঘটনার তদন্ত করতে বলেছেন।
বিমানবন্দরের পক্ষ থেকেও তাদের সংকট ব্যবস্থাপনা পরিকল্পনা এবং ঘটনার প্রতিক্রিয়া পর্যালোচনা করার জন্য প্রাক্তন পরিবহন মন্ত্রী রুথ কেলির নেতৃত্বে একটি অভ্যন্তরীণ তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।
জানা গেছে, ঘটনার দিন হিথরোর প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা থমাস ওল্ডবাই বিমানবন্দরের কার্যক্রম বন্ধের সিদ্ধান্ত তার ডেপুটি জাভিয়ের ইচাভের উপর ন্যস্ত করেন। বিমানবন্দরের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, ওল্ডবাইকে পুনরায় বিমানবন্দর চালু করার সিদ্ধান্ত নেওয়ার জন্য পর্যাপ্ত বিশ্রাম নিতে সুযোগ করে দিতেই এমনটা করা হয়েছিল।
হিথরো কর্তৃপক্ষের মতে, বর্তমানে তারা প্রতিদিন ১৩০০টির বেশি ফ্লাইট পরিচালনা করছে। যাত্রীদের নিরাপত্তা পরীক্ষার জন্য অপেক্ষার সময় পাঁচ মিনিটের কম রাখা হয়েছে।
বিমানবন্দরের চেয়ারম্যান পল ডিটন জানিয়েছেন, রুথ কেলির নেতৃত্বে গঠিত পর্যালোচনা কমিটি বিমানবন্দরের সংকট মোকাবেলা পরিকল্পনা, ঘটনার সময় তাদের প্রতিক্রিয়া এবং পরিস্থিতি পুনরুদ্ধারের প্রক্রিয়া খতিয়ে দেখবে। এর মাধ্যমে ভবিষ্যতে এমন ঘটনার পুনরাবৃত্তি রোধে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া সম্ভব হবে।
হিথরোর এই ঘটনা বিশ্বজুড়ে বিমানবন্দরগুলোর অবকাঠামো এবং জরুরি পরিস্থিতিতে তাদের প্রস্তুতি নিয়ে নতুন করে আলোচনার জন্ম দিয়েছে। উল্লেখ্য, ২০২৩ সালে হিথরো বিমানবন্দর দিয়ে প্রায় ৮ কোটি ৩৯ লক্ষ যাত্রী চলাচল করেছে।
তথ্য সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান