হিটরোর অচলাবস্থা: বড় বিমানবন্দরে কেন এমন বিপর্যয়?

হিথ্রো বিমানবন্দরে বিদ্যুত বিভ্রাট: বিশৃঙ্খলার শিকার কয়েক হাজার যাত্রী।

লন্ডনের হিথরো বিমানবন্দরে বিদ্যুত বিভ্রাটের কারণে ব্যাপক বিমান চলাচল ব্যাহত হয়েছে। বিমানবন্দরের একটি সাবস্টেশনে অগ্নিকাণ্ডের ফলে এই বিপর্যয় ঘটে, যার ফলস্বরূপ কয়েক হাজার যাত্রী চরম দুর্ভোগের শিকার হয়েছেন।

এই ঘটনার জেরে অনেক আন্তর্জাতিক ফ্লাইট বাতিল বা বিলম্বিত হয়েছে, যার প্রভাব পড়েছে বিশ্বজুড়ে।

বিদ্যুৎ বিভ্রাটের কারণ অনুসন্ধানে কর্তৃপক্ষ কাজ শুরু করেছে। প্রাথমিক তদন্তে জানা গেছে, নর্থ হাইড সাবস্টেশনে আগুন লাগার কারণেই এই পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে।

বিমানবন্দরের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, জরুরি ভিত্তিতে বিদ্যুৎ সরবরাহ স্বাভাবিক করার চেষ্টা চলছে। তবে কবে নাগাদ পরিস্থিতি সম্পূর্ণ স্বাভাবিক হবে, তা এখনো নিশ্চিত করে বলা যাচ্ছে না।

হিথরো বিশ্বের অন্যতম ব্যস্ত বিমানবন্দর এবং ইউরোপের প্রধান প্রবেশদ্বার হিসেবে পরিচিত। এই বিমানবন্দরের এই ধরনের বিপর্যয় আন্তর্জাতিক বিমান চলাচল ব্যবস্থায় বড় ধরনের প্রভাব ফেলেছে।

বিভিন্ন এয়ারলাইন্স তাদের ফ্লাইট পুনর্বিন্যাস করতে বাধ্য হয়েছে, যার ফলে অনেক যাত্রী তাদের গন্তব্যে পৌঁছাতে সমস্যায় পড়ছেন। বিশেষ করে যারা এই বিমানবন্দরের মাধ্যমে অন্য গন্তব্যের উদ্দেশ্যে ট্রানজিট যাত্রী ছিলেন, তাদের ভোগান্তি বেড়েছে সবচেয়ে বেশি।

এই ঘটনার জেরে এয়ারলাইন্সগুলোকে ক্ষতিপূরণ দিতে হতে পারে। এছাড়াও, ক্ষতিগ্রস্ত যাত্রীদের জন্য আবাসনের ব্যবস্থা করা এবং তাদের টিকিটের অর্থ ফেরত দেওয়ার মতো বিষয়গুলোও এয়ারলাইন্সগুলোর জন্য একটি চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে।

বিমানবন্দরের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, যাত্রীদের সব ধরনের সহযোগিতা করা হচ্ছে।

এই ঘটনার পর বিমানবন্দরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা এবং জরুরি অবস্থার মোকাবিলার প্রস্তুতি নিয়ে নতুন করে প্রশ্ন উঠেছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বিমানবন্দরের মতো গুরুত্বপূর্ণ স্থানে এ ধরনের ঘটনার পুনরাবৃত্তি রোধ করতে উন্নত প্রযুক্তি ও পর্যাপ্ত ব্যাকআপ ব্যবস্থা নিশ্চিত করা জরুরি।

অতীতেও বিমানবন্দরে তুষারপাতের কারণে ফ্লাইট বাতিল হয়েছিল, যা বিমানবন্দরের সক্ষমতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিল।

বিদ্যুৎ বিভ্রাটের কারণে শুধুমাত্র বিমান চলাচলই ব্যাহত হয়নি, বরং এর সঙ্গে সংশ্লিষ্ট অন্যান্য পরিষেবাও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। বিমানবন্দরের দোকান, রেস্টুরেন্ট এবং অন্যান্য বাণিজ্যিক কার্যক্রমও বন্ধ ছিল।

এই ঘটনার জেরে বিশ্বজুড়ে বিভিন্ন দেশের বিমানবন্দরেও এর প্রভাব পড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।

হিথরোর এই বিপর্যয় বাংলাদেশি যাত্রীদের ওপরও প্রভাব ফেলেছে। অনেক বাংলাদেশি যাত্রী যারা ছুটিতে অথবা ব্যবসার কাজে যুক্তরাজ্যে অথবা অন্য কোনো দেশে যাওয়ার জন্য হিথরো হয়ে যাত্রা করার কথা ছিল, তারা এখন অনিশ্চয়তার মধ্যে পড়েছেন।

তাদের অনেকের ফ্লাইট বাতিল হয়েছে অথবা বিলম্বিত হচ্ছে। বিমানবন্দরে আটকে পড়া যাত্রীদের মধ্যে অনেকেই তাদের পরিবার-পরিজনের সঙ্গে যোগাযোগ করতে সমস্যা অনুভব করছেন।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বিমানবন্দরের এই ধরনের অপ্রত্যাশিত ঘটনার জন্য প্রস্তুত থাকা জরুরি। ভবিষ্যতে এ ধরনের ঘটনা এড়াতে হলে, উন্নত প্রযুক্তি, পর্যাপ্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা এবং দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়ার মতো প্রস্তুতি রাখতে হবে।

তথ্য সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *