মার্কিন প্রতিরক্ষা দপ্তর পেন্টাগনের অন্দরে গোপন নথি ফাঁস নিয়ে চলা তদন্ত ঘিরে কর্মকর্তাদের মধ্যে তীব্র দ্বন্দ্বের সৃষ্টি হয়েছে। এই ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে গত সপ্তাহে তিনজন শীর্ষ কর্মকর্তাকে বরখাস্ত করা হয়েছে।
জানা গেছে, প্রতিরক্ষা সচিবের দপ্তরের অভ্যন্তরে ক্ষমতা নিয়ে লড়াই এবং বিভিন্ন নীতিগত বিষয়ে মতবিরোধের জের ধরেই এমনটা হয়েছে।
সূত্রমতে, ফাঁস হওয়া নথিটিতে পানামা খাল পুনরুদ্ধারের জন্য মার্কিন সামরিক বাহিনীর সম্ভাব্য পদক্ষেপের রূপরেখা ছিল। অভ্যন্তরীণ সূত্রে খবর, বরখাস্ত হওয়া কর্মকর্তাদের মধ্যে সিনিয়র উপদেষ্টা ড্যান ক্যাল্ডওয়েলকে এই নথিপত্র ফাঁসের জন্য সন্দেহ করা হচ্ছে।
তবে ক্যাল্ডওয়েল এই অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। তিনি জানান, ফাঁস তদন্তকে ‘অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার’ করা হচ্ছে।
এই ঘটনার জেরে প্রতিরক্ষা সচিবের ঘনিষ্ঠ মহলে ভাঙন ধরেছে। বর্তমানে তাঁর প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন রিকি বুরিয়া। এছাড়াও তাঁর আইনজীবী টিম পার্লাতোরে এবং মুখপাত্র শন পার্নেলকে নিয়ে তাঁর একটি ছোট দল গঠিত হয়েছে।
তদন্তের কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছে একটি অতি-গোপনীয় নথি, যা একজন সাংবাদিকের কাছে পৌঁছেছিল বলে অভিযোগ। ফাঁস হওয়া নথিতে পানামা খাল পুনরুদ্ধারের জন্য মার্কিন সামরিক বাহিনীর বিভিন্ন বিকল্প প্রস্তাব ছিল।
ক্যাল্ডওয়েলসহ বরখাস্ত হওয়া অন্য দুই কর্মকর্তা—দারিন সেলনিক এবং কলিন ক্যারল—অভিযোগ করেছেন, তাঁদেরকে সাবেক চিফ অব স্টাফ জো কাস্পারের ক্ষমতা বিস্তারের পথে কাঁটা হিসেবে বিবেচনা করা হতো।
এই ঘটনার জেরে হোয়াইট হাউস এবং পেন্টাগনের শীর্ষ কর্মকর্তাদের মধ্যে তীব্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়েছে। ক্যাল্ডওয়েল এবং সেলনিকের বিরুদ্ধে দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে, কারণ তাঁদের কাজে কাস্পার ছিলেন অসন্তুষ্ট।
পরিস্থিতি এমন দাঁড়িয়েছে যে, কর্মকর্তাদের মধ্যে কে সঠিক, তা নির্ধারণ করা কঠিন হয়ে পড়েছে।
ঘটনার পর ক্যাল্ডওয়েল জানিয়েছেন, তিনি কাস্পারের বিরুদ্ধে মানহানির মামলা করার কথা ভাবছেন। কাস্পারের বিরুদ্ধে মাদক সেবনের অভিযোগও উঠেছে।
কাস্পার অবশ্য এই অভিযোগকে ভিত্তিহীন বলে উড়িয়ে দিয়েছেন।
এই ঘটনার জেরে পেন্টাগনের অভ্যন্তরে কর্মকর্তাদের মধ্যে পারস্পরিক অবিশ্বাস বেড়েছে। এছাড়া, জাতীয় নিরাপত্তা এবং আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিষয়ক গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষেত্রেও এর প্রভাব পড়তে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
তথ্য সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান