হঠাৎ আলোচনায়: হেগেথের বিতর্কিত সিদ্ধান্তের কারণ ফাঁস!

মার্কিন প্রতিরক্ষা বিভাগের প্রধান, সেক্রেটারি অফ ডিফেন্স (Secretary of Defense) পদে আসীন হওয়ার কয়েক মাসের মধ্যেই নানা বিতর্কে জড়িয়ে পড়েছেন দেশটির নতুন মন্ত্রী। সম্প্রতি একটি গোপন মেসেজিং অ্যাপ ‘সিগন্যাল’-এর মাধ্যমে সংবেদনশীল সামরিক তথ্য আদান-প্রদানের অভিযোগ উঠেছে তার বিরুদ্ধে।

খবরটি প্রকাশ্যে আসার পর তার নেতৃত্ব এবং সিদ্ধান্ত গ্রহণ ক্ষমতা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।

জানা গেছে, হোয়াইট হাউজের শীর্ষ কর্মকর্তাদের একটি গ্রুপ চ্যাটে অনিচ্ছাকৃতভাবে একজন সাংবাদিক যুক্ত হয়ে যান। এরপরই প্রতিরক্ষা বিভাগের প্রধানের বিতর্কিত কর্মকাণ্ডগুলো সামনে আসে।

ওই চ্যাটে ইয়েমেনের হুতি বিদ্রোহীদের ওপর সম্ভাব্য মার্কিন বিমান হামলার পরিকল্পনা নিয়ে আলোচনা করা হচ্ছিল। সেখানে আক্রমণের সময় এবং ব্যবহৃত বিমানের ধরন সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য ছিল।

বিষয়টি নিয়ে বর্তমানে ব্যাপক আলোচনা চলছে এবং সামরিক বিশ্লেষকদের মধ্যে উদ্বেগের সৃষ্টি হয়েছে। অনেক সামরিক কর্মকর্তা মনে করেন, এমন গোপন তথ্য প্রকাশ করা গুরুতর অপরাধের শামিল এবং এর জন্য কঠোর শাস্তির বিধান রয়েছে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন প্রতিরক্ষা কর্মকর্তা সিএনএনকে বলেছেন, “সামরিক বাহিনীর জুনিয়র পর্যায়ের কর্মকর্তারাও এমন কাজ করেন না।”

শুধু তাই নয়, প্রতিরক্ষা বিভাগের ওয়েবসাইটে ‘ডাইভার্সিটি, ইক্যুইটি, অ্যান্ড ইনক্লুশন’ (Diversity, Equity, and Inclusion – DEI) বিষয়ক কিছু কন্টেন্ট সরিয়ে ফেলার সিদ্ধান্ত নিয়েও সমালোচনার ঝড় উঠেছে।

অনেক কর্মকর্তার মতে, এই ধরনের পদক্ষেপের ফলে সামরিক বাহিনীর কার্যকারিতা কমে যেতে পারে।

বিশ্লেষকরা বলছেন, সাবেক এই টেলিভিশন ব্যক্তিত্বের সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষেত্রে অপরিপক্কতা এবং অভিজ্ঞতার অভাব রয়েছে। অনেক ক্ষেত্রে তিনি প্রচলিত নিয়ম-নীতির তোয়াক্কা না করে নিজের খেয়ালখুশি মতো কাজ করেন।

উদাহরণস্বরূপ, সীমান্ত নিরাপত্তা জোরদার করতে বিপুল সংখ্যক সেনা সদস্যকে মোতায়েন করা হলেও, তারা মূলত ব্যারিকেড তৈরি ও কনসার্টিনা তার লাগানোর মতো কাজ করছেন।

রাজনৈতিক অঙ্গনেও বিষয়টি নিয়ে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা যাচ্ছে। রিপাবলিকান দলের অনেক সদস্য ঘটনাটিকে ‘ভুল’ হিসেবে দেখছেন এবং ভবিষ্যতে এমন ঘটনার পুনরাবৃত্তি রোধের জন্য ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বলছেন।

তবে, ডেমোক্রেটরা বিষয়টিকে ভিন্নভাবে দেখছেন এবং অভিযুক্ত ব্যক্তির পদত্যাগ দাবি করেছেন।

মার্কিন প্রেসিডেন্টের পক্ষ থেকে প্রথমে বিষয়টি এড়িয়ে যাওয়া হলেও, পরে তিনি জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা মাইক ওয়াল্টজের উপর দায় চাপান।

তবে, প্রতিরক্ষা বিভাগের প্রধানের বিস্তারিত তথ্য শেয়ার করার বিষয়টি তিনি সেভাবে আমলে নেননি।

বিশ্লেষকরা বলছেন, সেক্রেটারি অফ ডিফেন্স হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণের পর থেকেই হেগেথের কিছু সিদ্ধান্ত ও কর্মকাণ্ড সমালোচনার জন্ম দিয়েছে। বিশেষ করে, পররাষ্ট্র নীতি এবং সামরিক কৌশল বিষয়ক তার পূর্ব অভিজ্ঞতা না থাকার কারণে অনেক সময় গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত গ্রহণে তিনি ভুল করছেন।

তথ্য সূত্র: সিএনএন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *