হেলেনের আগুনে ‘আশার কুটির’ হারিয়ে কাঁদছেন বৃদ্ধ!

যুক্তরাষ্ট্রের নর্থ ক্যারোলিনায় ভয়াবহ দাবানলে একটি পরিবারের বহু বছরের স্মৃতিবিজড়িত একটি বাড়ি পুড়ে ছাই হয়ে গেছে।

‘আশার আশ্রয়’ নামে পরিচিত এই বাড়িটি ছিল ম্যাথিউ রজার্স এবং তাঁর পরিবারের কাছে এক শান্তির ঠিকানা। হারিকেন হেলেনের প্রভাবে সৃষ্ট বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার পর, সম্প্রতি হওয়া দাবানলে এই বাড়িটি সম্পূর্ণরূপে ধ্বংস হয়ে যায়।

নর্থ ক্যারোলিনার ফ্ল্যাট রকের লেকের ধারে প্রায় ৪০ বছর আগে কেনা এই বাড়িটি রজার্স পরিবারের কাছে ছিল এক বিশেষ স্থান।

ম্যাথিউ রজার্স জানান, বাড়িটি ছিল তাঁদের কাছে আশা ও আরোগ্য লাভের প্রতীক। বিখ্যাত চলচ্চিত্র ‘দ্য শশাঙ্ক রিডেম্পশন’ থেকে অনুপ্রাণিত হয়ে তিনি এটির নাম রেখেছিলেন ‘আশার আশ্রয়’। তাঁর মতে, আশা একটি মূল্যবান জিনিস, যা সহজে মরে না।

গত বছর হারিকেন হেলেনের প্রভাবে সৃষ্ট বন্যায় এই এলাকার একটি সেতু ক্ষতিগ্রস্ত হয়, যার ফলে রজার্স এবং তাঁর স্ত্রী রোজীকে বাড়ি ছেড়ে যেতে হয়।

তাঁরা স্থানীয় একটি রেস্টুরেন্টের বেসমেন্টে আশ্রয় নিয়েছিলেন। রজার্স সবসময়ই ইতিবাচক মানসিকতার মানুষ। তিনি বলেন, “এই ঘটনায় কেউ আহত হয়নি, এটাই বড় বিষয়।”

দাবানলের ঘটনার কয়েক দিন আগে, সেতুটির মেরামত কাজ শেষ হয় এবং রজার্স তাঁর ‘আশার আশ্রয়’-এ ফিরে যান। বাড়িটি তখনও অক্ষত ছিল।

তাঁরা বাড়িটি পরিষ্কার করে সেখানে কিছু সময় কাটান। কিন্তু কে জানত, তাঁদের এই আনন্দ বেশি দিন স্থায়ী হবে না!

স্থানীয় ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা জানান, দাবানলের সময় তাঁরা রজার্সের বাড়ির উঠোনে পোড়া একটি সিনসিনাটি রেডসের পতাকা খুঁজে পান।

এই পতাকাটি ছিল রজার্সের প্রিয় বেসবল দলের প্রতি ভালোবাসার প্রতীক।

ম্যাথিউ রজার্স জানান, আগুনে তাঁর পরিবারের বহু পুরনো, মূল্যবান জিনিসপত্র পুড়ে গেছে।

তাঁর দাদার ব্যবহার করা একটি পুরাতন স্পাইস বক্স, ১৯৪৯ সালের এক পুরনো তাসের সেট—যা দিয়ে তিনি একসময় তাঁর নাতনিকে তাস খেলা শিখিয়েছিলেন—সবই এখন স্মৃতি।

এই দুঃসময়েও রজার্স আশা হারাননি। তিনি জানান, তাঁরা শীঘ্রই তাঁদের ‘আশার আশ্রয়’ পুনর্গঠন করবেন।

তাঁদের কথায়, এই বাড়িটি তাঁদের আরোগ্য লাভের প্রতীক এবং তাঁরা চান, এটি আবার আগের রূপে ফিরে আসুক।

রজার্স ভবিষ্যতে ‘ক্যাম্প হোপউড’ নামে একটি দিনের ক্যাম্প শুরু করারও পরিকল্পনা করছেন, যেখানে শিশুরা প্রকৃতির কাছাকাছি থেকে আনন্দ উপভোগ করতে পারবে।

তথ্য সূত্র: সিএনএন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *