নদীতে হেলিকপ্টার: মুহূর্তেই সব শেষ, নিহত সিয়েমেন্স কর্মকর্তার পরিবার!

যুক্তরাষ্ট্রের হাডসন নদীতে একটি হেলিকপ্টার বিধ্বস্ত হয়ে ৬ জন নিহত হয়েছেন, যাদের মধ্যে ছিলেন স্পেনের একটি বহুজাতিক প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানের শীর্ষকর্তা ও তাঁর পরিবার। বৃহস্পতিবার ম্যানহাটনের আকাশপথে এই মর্মান্তিক দুর্ঘটনাটি ঘটে।

জানা গেছে, নিহতদের মধ্যে ছিলেন জার্মান বহুজাতিক প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান সিমেন্সের একজন শীর্ষ নির্বাহী আগুস্তিন এসকোবার ও তাঁর পরিবার। তাঁরা সবাই স্প্যানিশ নাগরিক ছিলেন এবং পর্যটক হিসেবে নিউইয়র্কে এসেছিলেন।

নিউইয়র্কের মেয়র এরিক অ্যাডামস এই ঘটনাকে ‘অকল্পনীয় ট্র্যাজেডি’ হিসেবে বর্ণনা করেছেন এবং শোক প্রকাশ করেছেন। স্পেনের প্রধানমন্ত্রী পেদ্রো সানচেজও শোক প্রকাশ করে নিহতদের পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জানিয়েছেন।

হেলিকপ্টারটির পাইলটও নিহত হয়েছেন, তবে তাঁর পরিচয় এখনো প্রকাশ করা হয়নি।

দুর্ঘটনার কারণ এখনো স্পষ্ট নয়। তবে প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, হেলিকপ্টারটি আকাশে ওড়ার কিছুক্ষণের মধ্যেই নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলে এবং দ্রুতগতিতে নদীর দিকে নামতে শুরু করে। দুর্ঘটনার সময় প্রতিকূল আবহাওয়া ছিল। আকাশে মেঘ ছিল এবং বাতাসের গতি ছিল বেশ।

নিউইয়র্ক পুলিশ বিভাগ সূত্রে জানা গেছে হেলিকপ্টারটি ম্যানহাটনের একটি হেলিপোর্ট থেকে উড্ডয়ন করে স্ট্যাচু অফ লিবার্টির পাশ দিয়ে যাওয়ার সময় দুর্ঘটনার শিকার হয়। এরপর এটি নিউ জার্সির উপকূলের কাছাকাছি এসে বিধ্বস্ত হয়।

স্থানীয় সূত্রে খবর, হেলিকপ্টারটি আকাশে থাকতেই এর কিছু অংশ খুলে পড়ে যায়। এরপর সেটি উল্টে গিয়ে নদীতে পড়ে। খবর পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই উদ্ধারকর্মীরা ঘটনাস্থলে ছুটে যান।

উদ্ধারকর্মীরা দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে ৬ জনকে জল থেকে উদ্ধার করেন। তাঁদের মধ্যে ৪ জনকে ঘটনাস্থলেই মৃত ঘোষণা করা হয়।

গুরুতর আহত অবস্থায় হাসপাতালে নেওয়ার পর আরও ২ জনের মৃত্যু হয়। নিহতদের মধ্যে তিনজন শিশুও ছিল।

দুর্ঘটনাগ্রস্ত হেলিকপ্টারটি ছিল একটি বেল-২০৬এল-৪ লংরেঞ্জার মডেলের। জানা গেছে হেলিকপ্টারটি তৈরি হয়েছিল ২০০৪ সালে।

ফেডারেল এভিয়েশন অ্যাডমিনিস্ট্রেশন (এফএএ) জানিয়েছে, ২০১৬ সালে এটির উড্ডয়ন যোগ্যতা সনদ (এয়ারওয়ার্থিনেস সার্টিফিকেট) ছিল, যা ২০২৯ সাল পর্যন্ত বহাল ছিল।

দুর্ঘটনার কারণ অনুসন্ধানে ফেডারেল এভিয়েশন অ্যাডমিনিস্ট্রেশন (এফএএ) এবং ন্যাশনাল ট্রান্সপোর্টেশন সেফটি বোর্ড (এনটিএসবি)-এর তদন্ত চলছে। এনটিএসবি-র একটি দল ইতোমধ্যে ঘটনাস্থলে পৌঁছেছে এবং তারা বিধ্বস্ত বিমানের ধ্বংসাবশেষ পরীক্ষা করে দেখছে।

নিউইয়র্ক হেলিকপ্টার চার্টার কোম্পানির এই হেলিকপ্টারটির আগে নিরাপত্তা সংক্রান্ত কিছু ঘটনার রেকর্ড রয়েছে।

২০১৫ সালে, এই কোম্পানির একজন পাইলট জরুরি অবতরণ করতে বাধ্য হয়েছিলেন। ২০১৩ সালেও একই কোম্পানির একটি হেলিকপ্টার জরুরি অবতরণ করতে হয়েছিল।

যুক্তরাষ্ট্রের এই মর্মান্তিক দুর্ঘটনায় গভীর শোক প্রকাশ করা হচ্ছে।

তথ্য সূত্র: সিএনএন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *