যুক্তরাষ্ট্রের স্বাস্থ্যখাতে অস্থিরতা, পদত্যাগ চান সহস্রাধিক সরকারি কর্মচারী।
যুক্তরাষ্ট্রের স্বাস্থ্য ও মানবসেবা বিভাগের (এইচএইচএস) এক হাজারেরও বেশি বর্তমান ও প্রাক্তন কর্মচারী দেশটির স্বাস্থ্যমন্ত্রী রবার্ট এফ. কেনেডি জুনিয়রের পদত্যাগ দাবি করেছেন। তাঁদের অভিযোগ, মন্ত্রীর কিছু পদক্ষেপের কারণে “দেশের স্বাস্থ্য ঝুঁকির মধ্যে পড়েছে”।
বুধবার (আজ) প্রকাশিত এক চিঠিতে এই দাবি জানানো হয়।
চিঠিতে স্বাক্ষরকারীরা বলছেন, কেনেডি জুনিয়র বিভিন্ন বিতর্কিত সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।
এর মধ্যে রয়েছে, সেন্টারস ফর ডিজিজ কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশন (সিডিসি)-এর সাবেক পরিচালক ড. সুসান মোনারেজকে অপসারণ, গুরুত্বপূর্ণ কর্মকর্তাদের পদত্যাগ এবং কোভিড-১৯ ভ্যাকসিনের অনুমোদন বাতিল করা।
কর্মীদের অভিযোগ, অনুমোদন বাতিলের ক্ষেত্রে সিদ্ধান্তের স্বপক্ষে পর্যাপ্ত তথ্য-প্রমাণও উপস্থাপন করা হয়নি।
চিঠিতে স্বাক্ষরকারীরা বিশেষভাবে উল্লেখ করেছেন, সিডিসির সাবেক পরিচালক ড. মোনারেজকে ভ্যাকসিন সংক্রান্ত বিধিনিষেধের বিষয়ে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের চাপের কাছে নতি স্বীকার করতে রাজি না হওয়ায় সরিয়ে দেওয়া হয়।
এছাড়াও, স্বাস্থ্যখাতে গুরুত্বপূর্ণ পদে রাজনৈতিক মতাদর্শের অনুসারীদের নিয়োগ এবং কোভিড-১৯ ভ্যাকসিন অনুমোদনের প্রক্রিয়াতেও স্বচ্ছতার অভাব ছিল বলে অভিযোগ করা হয়েছে।
এই ঘটনার আগে, গত মাসে, সিডিসি সদর দফতরে বন্দুক হামলার ঘটনার পর একই কর্মীরা কেনেডি জুনিয়রের কাছে একটি চিঠি লিখেছিলেন।
সেই চিঠিতে স্বাস্থ্য কর্মীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার পাশাপাশি, “ভুল স্বাস্থ্য বিষয়ক তথ্য” প্রচার করা বন্ধ করার আহ্বান জানানো হয়েছিল।
এদিকে, কেনেডি জুনিয়র গত মঙ্গলবার ওয়াল স্ট্রিট জার্নালে প্রকাশিত একটি নিবন্ধে দাবি করেন, তাঁর মন্ত্রনালয় “সিডিসিতে জনগণের আস্থা পুনরুদ্ধার করছে।”
তিনি আরও বলেন, কোভিড-১৯ মহামারীর সময় “রাজনৈতিক বিজ্ঞান, আমলাতান্ত্রিক জড়তা এবং কার্যপরিধির বিস্তৃতি”-র কারণে সিডিসি ব্যর্থ হয়েছিল।
তিনি সিডিসিকে সংক্রামক রোগের ওপর পুনরায় মনোনিবেশ করার প্রতিশ্রুতি দেন এবং সংস্থার উপদেষ্টা কমিটির (অ্যাডভাইজরি কমিটি অন ইমিউনাইজেশন প্র্যাকটিসেস) বিশেষজ্ঞদের অপসারণকে “স্বার্থের সংঘাত” দূর করার পদক্ষেপ হিসেবে উল্লেখ করেন।
এইচএইচএস কর্মীদের এই পদত্যাগ দাবির সঙ্গে সমর্থন জানিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বও।
ডেমোক্রেট সিনেটর প্যাটি মারের পক্ষ থেকে হোয়াইট হাউসকে কেনেডি জুনিয়রকে বরখাস্ত করার আহ্বান জানানো হয়েছে।
এছাড়া, ডেমোক্রেট সিনেটর বার্নি স্যান্ডার্সও এক নিবন্ধে কেনেডি জুনিয়রের পদত্যাগের দাবি জানান, যেখানে তিনি ভ্যাকসিনের বিরুদ্ধে তাঁর দীর্ঘদিনের প্রচারণার কথা উল্লেখ করেন।
বিষয়টি নিয়ে আগামী বৃহস্পতিবার সিনেট ফিনান্স কমিটির শুনানিতে অংশ নেওয়ার কথা রয়েছে কেনেডি জুনিয়রের।
তথ্য সূত্র: CNN