যুক্তরাষ্ট্রের স্বাস্থ্য ও মানব পরিষেবা বিভাগ (HHS) সম্প্রতি তাদের চিকিৎসা বিষয়ক নীতিমালায় পরিবর্তনের জন্য স্বাস্থ্য পরিষেবা প্রদানকারীদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে। তাদের এই আহ্বানের কারণ হিসেবে একটি বিতর্কিত অভ্যন্তরীণ পর্যালোচনাকে সামনে আনা হয়েছে, যেখানে রূপান্তরকামী (Transgender) তরুণদের চিকিৎসার ক্ষেত্রে প্রতিষ্ঠিত চিকিৎসা নির্দেশিকাগুলোর পরিবর্তে এই পর্যালোচনার ওপর নির্ভর করতে বলা হয়েছে।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে, রূপান্তরকামীদের জন্য চিকিৎসা বিষয়ক বিভিন্ন পদ্ধতি, যেমন – হরমোন থেরাপি এবং অস্ত্রোপচার-এর অনুমোদন রয়েছে। তবে, HHS মনে করে এই ধরনের চিকিৎসা ব্যবস্থা ক্ষতিকর এবং এতে লাভের সম্ভাবনা রয়েছে। বিশেষ করে, শিশুদের ওপর ‘যৌন বৈশিষ্ট্য পরিবর্তনের পরীক্ষামূলক পদ্ধতি’ প্রয়োগের বিষয়ে তারা উদ্বেগ প্রকাশ করেছে।
HHS-এর এই পদক্ষেপের কড়া সমালোচনা করেছে দেশটির প্রধান চিকিৎসা সংগঠনগুলো। আমেরিকান মেডিকেল এসোসিয়েশন (AMA) এবং এন্ডোক্রাইন সোসাইটির (Endocrine Society) মতো সংগঠনগুলো রূপান্তরকামী মানুষের জন্য চিকিৎসা ব্যবস্থাকে নিরাপদ, উপকারী এবং প্রয়োজনীয় বলে মনে করে। তাদের মতে, এই চিকিৎসা পদ্ধতি মানসিক স্বাস্থ্য উন্নয়নে সহায়তা করে।
পর্যালোচনাটি মূলত প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের একটি নির্বাহী আদেশের ফল। ট্রাম্প রূপান্তরকামী ব্যক্তিদের জন্য চিকিৎসা ব্যবস্থাকে ‘রাসায়নিক ও অস্ত্রোপচার-এর মাধ্যমে বিকৃতকরণ’ হিসেবে বর্ণনা করেছিলেন এবং ১৯ বছরের কম বয়সী কারো জন্য কোনো ধরনের রূপান্তরকামী চিকিৎসা সমর্থন করতে ফেডারেল সরকারের অস্বীকৃতির কথা জানিয়েছিলেন।
HHS-এর এই পদক্ষেপের কারণে বিতর্ক আরও বেড়েছে। কারণ, পর্যালোচনায় চিকিৎসা বিষয়ক প্রতিষ্ঠিত নির্দেশিকাগুলোর সমালোচনা করা হয়েছে এবং চিকিৎসা সম্প্রদায়ের মধ্যে ভিন্নমতকে দমিয়ে রাখার অভিযোগ আনা হয়েছে। এই পরিস্থিতিতে, স্বাস্থ্য পরিষেবা প্রদানকারীদের মধ্যে বিভ্রান্তি সৃষ্টি হয়েছে এবং রোগীদের জন্য সঠিক চিকিৎসা পদ্ধতি বেছে নিতে সমস্যা হচ্ছে।
বর্তমানে, যুক্তরাষ্ট্রের অনেক রাজ্যে রূপান্তরকামী বিষয়ক স্বাস্থ্যসেবার ওপর বিভিন্ন বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে, HHS-এর এই নতুন নির্দেশিকা দেশটির স্বাস্থ্যখাতে একটি নতুন বিতর্কের জন্ম দিয়েছে।
তথ্য সূত্র: CNN