একদিন, ২০১৬ সালে, কৈশোরের এক ঝলমলে দুপুরে ঘটে যাওয়া এক ঘটনার সাক্ষী ছিল যুক্তরাষ্ট্রের একটি আবাসিক এলাকা। ১৬ বছর বয়সী কাইলি রোজ নামের এক কিশোরীর প্রতিবেশী, আনুমানিক ৭-৮ বছর বয়সী এক বালিকা, তাদের মধ্যেকার অপ্রত্যাশিত সম্পর্কের সূত্রপাত করে।
প্রথমে, কাইলির বাড়ির পেছনের উঠোনে, ট্রাম্পোলিনের উপর খেলা করার মধ্য দিয়ে তাদের পরিচয় হয়। এরপর, হাসি-ঠাট্টার মধ্যে তারা বাস্কেটবল খেলে এবং ফুটবল নিয়ে মেতে ওঠে।
খেলার ছলে তারা কাইলির ঘরে প্রবেশ করে, যেখানে সাজসজ্জা এবং ছবি তোলার এক অন্যরকম জগৎ তৈরি হয়।
কাইলি জানায়, মেয়েটি তার ঘরে এসে তার মেকআপের সরঞ্জাম দেখতে চায়। কাইলি রাজি হলে, মেয়েটি তার পুরো মুখের উপরের অংশে নীল রঙের আইশ্যাডো লাগায়।
এরপর, তারা একটি পুরনো পোলারয়েড ক্যামেরা দিয়ে ছবি তোলে, যা তাদের বন্ধুত্বের স্মৃতি হিসেবে আজও উজ্জ্বল হয়ে আছে। ছবিগুলোতে তারিখ বসিয়ে তারা তাদের সম্পর্কের সাক্ষী রাখে।
কিন্তু এই আনন্দ হঠাৎই উদ্বেগে রূপ নেয়। কিছুক্ষণ পরেই কাইলির দরজায় জোরে শব্দ হতে থাকে। দরজা খুলতেই কাইলি দেখে, তার সামনে দাঁড়িয়ে আছে কয়েকজন পুলিশ অফিসার, সাথে তাদের প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত কুকুর।
তাদের পেছনে ছিল এলাকার আরও অনেক মানুষ। তাদের মধ্যে ছিল বালিকার পুরো পরিবার, প্রতিবেশী এবং উদ্ধারকর্মীরা।
কাইলি হতভম্ব হয়ে যায়। পরে জানতে পারে, মেয়েটিকে খুঁজে বের করার জন্য এলাকায় তল্লাশি চালানো হচ্ছে। সবাই ভেবেছিল, মেয়েটি হয়তো হারিয়ে গেছে।
কাইলি তখন দ্রুত মেয়েটিকে নিয়ে আসে এবং তাদের মধ্যে ঘটে যাওয়া বন্ধুত্বপূর্ণ মুহূর্তগুলো ব্যাখ্যা করে।
কাইলি বলেন, “আমি তখন পরিবারের সাথে কোনো কথা বলিনি, শুধু পুলিশের সাথে কথা বলেছিলাম। ধীরে ধীরে যখন ভিড় কমে আসছিল, তখন আমার বাবা কাজে থেকে ফিরে আসেন।
তিনিও খুব অবাক হয়েছিলেন এবং আমাকে পুলিশের সাথে কথা বলতে সাহায্য করেন।”
সম্প্রতি, কাইলি একটি সেন্ট প্যাট্রিকস ডে অনুষ্ঠানে যাওয়ার জন্য গাড়িতে বসে ছিলেন। সেই সময় তার প্রতিবেশী বাড়ির দিকে তাকিয়ে পুরনো সেই ঘটনার কথা মনে পড়ে।
এরপর তিনি সেই ঘটনার একটি ভিডিও তৈরি করে টিকটকে পোস্ট করেন।
ভিডিওটি পোস্ট করার কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই ভাইরাল হয়ে যায়। অনেকে মন্তব্য করেন যে, ঘটনাটি খুবই হাস্যকর ছিল, আবার কেউ কেউ তাদের শৈশবের স্মৃতিচারণ করেন।
কেউ কেউ কাইলিকে মজা করে বলেন, ‘আসলে তো, মেয়েটিই তোমাকে অপহরণ করেছিল!’
কাইলি জানান, ঘটনার পর কারো সঙ্গে তার আর কোনো কথা হয়নি। তবে তিনি স্বীকার করেন, সেই বয়সে তার হয়তো আরও সচেতন হওয়া উচিত ছিল।
বর্তমানে, কাইলি চান, মানুষ যেন তাদের কৈশোরের স্মৃতিগুলো উপভোগ করে এবং এমন মজার ঘটনাগুলো অন্যদের সাথে শেয়ার করে।
তথ্য সূত্র: পিপল