হিটককের ৭টি মাস্টারপিস: নেটফ্লিক্সে, এখনই দেখুন!

বাংলা চলচ্চিত্র প্রেমীদের জন্য এবার নেটফ্লিক্সে হাজির কিংবদন্তি চলচ্চিত্র পরিচালক আলফ্রেড হিচককের সাতটি মাস্টারপিস। সাসপেন্স থ্রিলার জনরার এই দিকপালের সিনেমাগুলো দর্শক আজও উপভোগ করেন, যা দর্শকদের মধ্যে গভীর প্রভাব ফেলে।

যারা এখনো এই সিনেমাগুলো দেখেননি, তাদের জন্য এই সুযোগ দারুণ। চলুন, দেখে নেওয়া যাক, কোন সিনেমাগুলো সবার প্রথমে দেখা যেতে পারে, আর কোনগুলো হয়তো এড়িয়ে যাওয়াই ভালো।

আলফ্রেড হিচকক, যিনি ‘সাসপেন্সের মাস্টার’ হিসেবে পরিচিত, সিনেমার পর্দায় ভীতি আর উত্তেজনার এক নতুন জগৎ তৈরি করেছিলেন। তাঁর সিনেমায় গল্পের বুনন, ক্যামেরার কাজ, এবং অভিনেতা-অভিনেত্রীদের অভিনয়ের মাধ্যমে দর্শককে মন্ত্রমুগ্ধ করে তোলার ক্ষমতা ছিল অসাধারণ।

তিনি কেবল একজন পরিচালক ছিলেন না, বরং সিনেমার ইতিহাসে এক উজ্জ্বল নক্ষত্র। হিচকক তাঁর সিনেমায় প্রায়ই কিছু বিশেষ নারী চরিত্র সৃষ্টি করেছেন, যাদের ‘হিটচকক ব্লন্ড’ বলা হয়। তারা ছিলেন আকর্ষণীয়, রহস্যময়ী, এবং প্রায়ই বিপদের সম্মুখীন।

নেটফ্লিক্সে উপলব্ধ সিনেমাগুলোর মধ্যে প্রথমেই যে সিনেমাটি দেখার পরামর্শ দেবো, সেটি হলো ‘রেয়ার উইন্ডো’ (Rear Window)। এই ছবিতে জেমস স্টুয়ার্ট অভিনয় করেছেন জেফ জেফ্রিস নামক এক ফটোগ্রাফারের চরিত্রে, যিনি একটি দুর্ঘটনায় পা ভেঙে যাওয়ায় নিজের অ্যাপার্টমেন্টে বন্দী হন।

সময় কাটানোর জন্য তিনি তার অ্যাপার্টমেন্টের জানালা দিয়ে আশেপাশের প্রতিবেশীদের জীবন পর্যবেক্ষণ করতে শুরু করেন। একদিন তিনি সন্দেহ করেন যে তাঁর এক প্রতিবেশী সম্ভবত তাঁর স্ত্রীকে খুন করেছে।

গ্রেস কেলি অভিনীত লিসা চরিত্রটি জেফের বান্ধবী, যিনি এই রহস্য সমাধানে সাহায্য করেন। এই সিনেমাটি দর্শকদের জন্য এক দারুণ অভিজ্ঞতা।

এরপর আলোচনা করা যাক ‘দ্য বার্ডস’ (The Birds) নিয়ে। এই ছবিতে দেখা যায়, ক্যালিফোর্নিয়ার বোডেগা বে-তে পাখির দল কেন যেন মানুষের উপর আক্রমণ শুরু করে। ছবিটির বিশেষত্ব হলো, এখানে পাখির আক্রমণের কারণ স্পষ্টভাবে বলা হয়নি।

দর্শকদের মধ্যে তাই এক ধরনের ভীতি কাজ করে।

এবার আসা যাক ‘ভার্টিগো’ (Vertigo) প্রসঙ্গে। এই সিনেমাটি একজন প্রাক্তন পুলিশ অফিসারের গল্প, যিনি এক বন্ধুর স্ত্রীর উপর নজর রাখার জন্য নিযুক্ত হন। এখানে প্রেম, মৃত্যু, এবং Obsession-এর এক জটিল জাল বোনা হয়েছে।

যদিও এটি হিচককের মাস্টারপিস হিসেবে বিবেচিত, তবে যারা হিচককের কাজ সম্পর্কে নতুন, তাদের জন্য শুরুতে এটি হয়তো একটু কঠিন মনে হতে পারে।

‘সাইকো’ (Psycho) সম্ভবত হিচককের সবচেয়ে পরিচিত সিনেমাগুলোর মধ্যে একটি। এখানে একটি নির্জন মোটেলের রহস্যময় পরিবেশ এবং নরম্যান বেটস নামক এক যুবকের চরিত্রে অ্যান্টনি পারকিন্সের অসাধারণ অভিনয় আজও দর্শকদের মনে দাগ কাটে।

অন্যান্য সিনেমাগুলোর মধ্যে ‘ফ্রেঞ্জি’ (Frenzy) একটি নৃশংস থ্রিলার, যেখানে খুন এবং যৌন সহিংসতার দৃশ্য রয়েছে। যারা শক্তিশালী গল্পের সঙ্গে পরিচিত, তাঁরা এটি দেখতে পারেন।

অন্যদিকে, ‘ফ্যামিলি প্লট’ (Family Plot) একটি হালকা মেজাজের সিনেমা, যেখানে এক ভুয়া মিডিয়াম এবং তাঁর ট্যাক্সিচালক প্রেমিকের একটি রহস্য সমাধানে যুক্ত হওয়ার গল্প বলা হয়েছে।

সবশেষে, ‘দ্য ম্যান হু নিউ টু মাচ’ (The Man Who Knew Too Much) সিনেমাটি হিচককের পুরনো একটি সিনেমার পুনর্নির্মাণ। এই সিনেমাটি হয়তো সকলের জন্য আকর্ষণীয় নাও হতে পারে।

আলফ্রেড হিচকক শুধু একজন পরিচালক ছিলেন না, তিনি ছিলেন সিনেমার এক অবিসংবাদী কিংবদন্তি। তাঁর সিনেমাগুলো আজও দর্শকদের আকর্ষণ করে, কারণ তিনি মানুষের মনস্তত্ত্বকে গভীরভাবে উপলব্ধি করতে পারতেন।

তাঁর কাজ দর্শকদের মধ্যে এক ভিন্ন ধরনের অনুভূতির জন্ম দেয়, যা সত্যিই অসাধারণ।

তথ্যসূত্র: People

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *