আতঙ্কে বিশ্ব! এইডস মৃত্যু বাড়বে, হুঁশিয়ারি জাতিসংঘের

বিশ্বজুড়ে এইচআইভি (HIV) ও এইডস (AIDS) আক্রান্ত হয়ে মৃতের সংখ্যা বাড়তে পারে, এমনটাই আশঙ্কা প্রকাশ করেছে জাতিসংঘের এইডস বিষয়ক সংস্থা ইউএনএইডস (UNAIDS)। সংস্থাটি সতর্ক করে বলেছে, যদি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র তাদের বৈদেশিক সাহায্য পুনরায় চালু না করে, তাহলে নতুন করে প্রতিদিন ২ হাজার মানুষ এই ভাইরাসে আক্রান্ত হতে পারে এবং কয়েক বছরের মধ্যে এইডস-এ আক্রান্ত হয়ে মৃতের সংখ্যা কয়েকগুণ বেড়ে যেতে পারে।

জানুয়ারী মাসের শুরুতে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ক্ষমতা গ্রহণের পরপরই বিদেশি সাহায্য বন্ধ করে দেন। যদিও এর কয়েকদিন পরেই যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তর (US Department of State) জানায়, প্রেসিডেন্টের জরুরি এইডস ত্রাণ প্রকল্পের (President’s Emergency Plan for AIDS Relief – PEPFAR) অধীনে জীবন রক্ষাকারী কার্যক্রমগুলো অব্যাহত থাকবে।

তবে স্বাস্থ্যখাতে অর্থায়ন বন্ধ হয়ে যাওয়ায় এইডস আক্রান্তদের জীবনযাত্রায় মারাত্মক প্রভাব পড়ছে। ইউএনএইডসের নির্বাহী পরিচালক উইনি বাইয়ানিমা (Winnie Byanyima) জেনেভায় সাংবাদিকদের বলেন, “মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের এই আকস্মিক অর্থ প্রত্যাহার অনেক ক্লিনিক বন্ধ করে দিয়েছে, হাজার হাজার স্বাস্থ্যকর্মীকে ছাঁটাই করা হয়েছে… এর ফলস্বরূপ, আমরা নতুন সংক্রমণের সংখ্যা বাড়তে দেখব। ইউএনএইডস ধারণা করছে, প্রতিদিন ২ হাজার নতুন সংক্রমণ হতে পারে।

তিনি আরও যোগ করেন, যদি এপ্রিল মাস পর্যন্ত, অর্থাৎ ৯০ দিনের মধ্যে, ইউএস এজেন্সি ফর ইন্টারন্যাশনাল ডেভেলপমেন্ট (USAID) তাদের সাহায্য পুনরায় শুরু না করে, অথবা অন্য কোনো দেশ সাহায্য করতে এগিয়ে না আসে, তাহলে আগামী চার বছরে এইডস-এ আক্রান্ত হয়ে অতিরিক্ত ৬৩ লক্ষ মানুষের মৃত্যু হতে পারে।

তিনি আরও বলেন, “আমরা আবার সেই ভয়াবহ পরিস্থিতি দেখতে পাবো, যেমনটা দেখেছি নব্বইয়ের দশকে এবং ২০০০ সালের দিকে।

বাইয়ানিমা জানান, এই হিসাব জাতিসংঘের মডেলিংয়ের ওপর ভিত্তি করে তৈরি করা হয়েছে। তবে কীভাবে এই সংখ্যাগুলো নির্ধারণ করা হয়েছে, সে বিষয়ে বিস্তারিত জানাননি তিনি।

সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, ২০২৩ সালে বিশ্বে এইডস-সম্পর্কিত ৬ লক্ষ মানুষের মৃত্যু হয়েছে। ইউএনএইডস, যারা এইচআইভি/এইডস প্রতিরোধ ও চিকিৎসার জন্য বিশ্বব্যাপী কার্যক্রম সমন্বয় করে, গত বছর যুক্তরাষ্ট্র থেকে তাদের মূল তহবিলের ৩৫ শতাংশ, অর্থাৎ প্রায় ৫০ মিলিয়ন ডলার পেয়েছিল।

ট্রাম্প প্রশাসন তাদের এই পদক্ষেপের কারণ হিসেবে ‘আমেরিকা ফার্স্ট’ নীতিকে তুলে ধরেছে। মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও (Marco Rubio) বিদেশি সাহায্য বন্ধ করার অভিযোগ অস্বীকার করে জানিয়েছেন, জীবন রক্ষাকারী পরিষেবাগুলোর জন্য ছাড় দেওয়া হয়েছে।

ট্রাম্প প্রশাসনের দাবি, তারা দ্রুত চুক্তি বাতিল, কর্মী ছাঁটাই এবং সরকারি অপচয় বন্ধ করার মাধ্যমে মার্কিন করদাতাদের কয়েক বিলিয়ন ডলার বাঁচিয়েছে। যদিও তারা তাদের দাবির স্বপক্ষে তেমন কোনো প্রমাণ দেখাতে পারেনি।

তথ্য সূত্র: আল জাজিরা

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *