ভোজনরসিকদের মন জয় করে: কোথায় খাবেন সেই গল্প!

ভিয়েতনামের বৃহত্তম শহর, হো চি মিন সিটি, খাদ্যরসিকদের জন্য এক অসাধারণ গন্তব্য। এখানকার রাস্তার খাবার থেকে শুরু করে অভিজাত রেস্তোরাঁ—ভোজনরসিকদের জন্য সব কিছুই যেন এক অত্যাশ্চর্য অভিজ্ঞতা।

বাংলাদেশের ভোজনরসিকদের জন্য এই শহরের খাদ্য জগৎ কেমন, আসুন, সেই বিষয়ে কিছু আলোচনা করা যাক।

ভিয়েতনামের এই শহরটি একসময় সাইগন নামে পরিচিত ছিল। বর্তমানে এটি আধুনিকতা এবং ঐতিহ্যের এক দারুণ মিশ্রণ।

এখানকার খাদ্য সংস্কৃতির গভীরে প্রবেশ করলে বিভিন্ন ধরনের খাবারের স্বাদ পাওয়া যায়, যা আমাদের দেশের মানুষের কাছেও প্রিয় হতে পারে।

শহরের আনাচে-কানাচে ছড়িয়ে থাকা রাস্তার খাবার এখানকার সংস্কৃতির এক অবিচ্ছেদ্য অংশ। ভেসপা-র পিছনে চেপে এখানকার একটি জনপ্রিয় স্থানে যাওয়া যেতে পারে, যার নাম ওক লোয়ান।

এখানে গেলে আপনি বিশাল আকারের শামুক, নানা ধরনের ক্ল্যাম এবং চিংড়ি মাছের স্বাদ নিতে পারবেন। এই রেস্তোরাঁর পরিবেশটাও বেশ আকর্ষণীয়।

হো চি মিন সিটির খাদ্যতালিকার আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ হল ‘বানহ মি’ নামক একটি বিশেষ স্যান্ডউইচ। এটি মূলত প্রাতরাশের একটি অংশ।

‘বে হো’ নামের একটি দোকানে এই স্যান্ডউইচ পাওয়া যায়, যা ২০১৯ সালে নেটফ্লিক্সের ‘স্ট্রিট ফুড: এশিয়া’ সিরিজেও দেখানো হয়েছিল।

এখানকার রুটি, বিশেষ করে ফরাসিদের হাত ধরে আসা এই খাদ্য, যা এখনো বেশ জনপ্রিয়। এর সাথে শুয়োরের মাংসের পেস্ট, ধনে পাতা, এবং নানান সবজির মিশ্রণ এই স্যান্ডউইচটিকে করে তোলে অতুলনীয়।

সকালের খাবারের অভিজ্ঞতা নিতে হলে আপনাকে যেতে হবে স্থানীয় বাজারগুলোতে। এখানকার বাজারগুলোতে ভাজা সবজির ঘ্রাণ, তাজা সবজির সমাহার—সবকিছুই যেন এক উৎসবের মতো।

এখানকার মানুষেরা তাঁদের খাবার তৈরিতে স্থানীয় উপাদান ব্যবহার করেন।

কফি প্রেমীদের জন্যেও এখানে রয়েছে বিশেষ আকর্ষণ। ভিয়েতনামী কফি, বিশেষ করে কন্ডেন্সড মিল্ক দিয়ে তৈরি কফি, এখানকার সংস্কৃতিতে মিশে গেছে।

ক্যাফে বা লু-এর মতো পুরনো ক্যাফেগুলোতে আজও সেই ঐতিহ্য বজায় রাখা হয়েছে। তরুণ প্রজন্মের মধ্যে এখন কফি নিয়ে বিভিন্ন পরীক্ষা-নিরীক্ষা চলছে।

কেউ কেউ কফির সাথে মাখন, চকোলেট পাউডার বা মাছের সস ব্যবহার করছেন।

যারা একটু ভিন্ন স্বাদের খাবার পছন্দ করেন, তাঁদের জন্য এখানে রয়েছে এগ কফি। ডিমের কুসুম ব্যবহার করে এই কফি তৈরি করা হয়, যা খেতে খুবই সুস্বাদু।

এছাড়াও, আপনি এখানকার আধুনিক রেস্তোরাঁগুলোতেও যেতে পারেন। ‘নেন লাইট’ নামের একটি রেস্তোরাঁ, যেখানে জাপানি এবং ভিয়েতনামী সংস্কৃতির মিশ্রণে তৈরি খাবার পরিবেশন করা হয়।

এখানকার মেনুতে বিভিন্ন ধরনের স্থানীয় উপকরণ ব্যবহার করা হয়।

সুতরাং, যারা খাদ্যরসিক এবং নতুন কিছু চেষ্টা করতে ভালোবাসেন, তাঁদের জন্য হো চি মিন সিটি একটি অসাধারণ গন্তব্য হতে পারে। এখানকার খাবার, সংস্কৃতি এবং মানুষের আতিথেয়তা—সবকিছুই আপনাকে মুগ্ধ করবে।

তথ্য সূত্র: ন্যাশনাল জিওগ্রাফিক

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *