অটিজম নিয়ে বিতর্কিত মন্তব্যে প্রতিক্রিয়া, মুখ খুললেন হলি রবিনসন পিট

একজন খ্যাতিমান অভিনেত্রী, হলি রবিনসন পিটের পুত্র আরজে-র অটিজম ধরা পড়ার পর, সম্প্রতি রবার্ট এফ. কেনেডি জুনিয়রের (আরএফকে জুনিয়র) অটিজম আক্রান্ত ব্যক্তিদের সম্পর্কে করা মন্তব্যের তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছেন। হলিউডের এই তারকার ছেলে আরজে-র অটিজম আছে এবং তিনি দীর্ঘদিন ধরে অটিজম সচেতনতা নিয়ে কাজ করছেন।

গত এপ্রিল মাসের মাঝামাঝি সময়ে আরএফকে জুনিয়র এক সংবাদ সম্মেলনে মন্তব্য করেন যে, অটিজম আক্রান্ত ব্যক্তিরা কখনোই কর দেবে না, চাকরি করবে না এবং ডেটিংয়েও যেতে পারবে না। হলি রবিনসন পিটের কাছে, এই কথাগুলো ছিল খুবই পরিচিত এবং কষ্টের। কারণ, তার ছেলে আরজের অটিজম শনাক্ত করা হয়েছিল ২০০০ সালে।

হলি রবিনসন পিটে বলেন, “প্রথমত, এটা মোটেও সত্যি নয়। আমাদের ছেলের যখন অটিজম ধরা পরে, তখন অটিজম সম্পর্কে এত বেশি ধারণা ছিল না। কিন্তু এখন অনেক কিছু জানি।” তিনি আরও জানান, ২০০০ সালে চিকিৎসকরা আরজের এমন কিছু বিষয় উল্লেখ করেছিলেন, যা সে কখনোই করতে পারবে না। চিকিৎসকেরা বলেছিলেন আরজে কথা বলতে পারবে না, বন্ধু হবে না, স্কুলে ভালো করতে পারবে না, এমনকি সে হয়তো একা থাকতে পারবে না, ভালো চাকরি বা কোনো ভালোবাসার সম্পর্কও তার হবে না।

হলি রবিনসন পিটের মতে, আরএফকে জুনিয়রের এমন মন্তব্যগুলো খুবই হতাশাজনক। বিশেষ করে, যখন তিনি বলেন, “অটিজম পরিবারগুলোকে ধ্বংস করে দেয়”। হলি এর তীব্র প্রতিবাদ করে বলেন, “অটিজম পরিবার ধ্বংস করে না, তবে স্বাস্থ্যসেবার অভাব পরিবারগুলোকে ধ্বংস করে দেয়। কৃষ্ণাঙ্গ এবং বাদামী চামড়ার জনগোষ্ঠীর মধ্যে, পরিবারগুলো তাদের সন্তানদের অটিজম নির্ণয়ের জন্য প্রয়োজনীয় সহায়তাটুকুও পায় না। আর এসব বিষয়ই পরিবারগুলোকে ধ্বংস করে দেয়, অটিজম নয়।”

হলি রবিনসন পিটে, যিনি পার্কিনসন রোগ এবং অটিজম আক্রান্ত পরিবারগুলোর জন্য সচেতনতা তৈরি ও সহায়তার উদ্দেশ্যে ‘হলি-রড ফাউন্ডেশন’ প্রতিষ্ঠা করেছেন, আরএফকে জুনিয়রের এই মন্তব্যের তীব্র সমালোচনা করেন। তিনি বলেন অটিজম আক্রান্ত ব্যক্তিরা কর দেবে না—এই মন্তব্য শুনে তিনি বিস্মিত হয়েছেন। তিনি প্রশ্ন করেন, “তাহলে কি তারা সমাজের বোঝা? করদাতাদের তাদের দেখাশোনা করতে হবে? আমার ছেলে তো অবশ্যই কর দেয় এবং অটিজম আক্রান্ত অনেক ব্যক্তিই কর দিয়ে থাকেন।”

হলি আরও যোগ করেন, আরএফকে জুনিয়র অটিজম আক্রান্ত ব্যক্তিদের একপাশে সরিয়ে দিয়েছেন, যা অটিজম কমিউনিটিতে বিভেদ তৈরি করেছে। যারা বেশি সহায়তা চায় এবং যারা কম সহায়তা চায়, তাদের মধ্যেও একটা বিভাজন সৃষ্টি হয়েছে। হলি রবিনসন পিটের ছেলে আরজে বর্তমানে লস অ্যাঞ্জেলেস ডজার্সের হয়ে কাজ করে এবং সম্প্রতি সে একা থাকতে শুরু করেছে, যা তার জন্য একটি বড় মাইলফলক। হলি মনে করেন, আরজের এই অর্জন তাদের জন্য অনেক আনন্দের এবং গর্বের।

বাংলাদেশেও অটিজম আক্রান্ত শিশুদের জন্য এখনো অনেক চ্যালেঞ্জ রয়েছে। পর্যাপ্ত স্বাস্থ্যসেবা, শিক্ষা এবং সামাজিক সুযোগের অভাব তাদের জীবনকে কঠিন করে তোলে। হলি রবিনসন পিটের এই লড়াই, বিশ্বজুড়ে অটিজম আক্রান্ত ব্যক্তিদের সম্ভাবনাকে তুলে ধরে এবং তাদের সমাজে অন্তর্ভুক্ত করার প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দেয়।

তথ্য সূত্র: পিপল

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *