শিরোনাম: হলিউডের সোনালী দিন কি শেষ? চলচ্চিত্র নির্মাণে মন্দা, উদ্বেগে কর্মীরা
একসময় হলিউড ছিল চলচ্চিত্র শিল্পের একচ্ছত্র আধিপত্যের প্রতীক, যেখানে স্বপ্ন তৈরি হতো আর তা সারা বিশ্বে ছড়িয়ে পড়ত। কিন্তু সেই সোনালী দিন বুঝি সত্যিই শেষ হতে চলেছে।
বর্তমানে, হলিউডে চলচ্চিত্র নির্মাণের ক্ষেত্রে দেখা দিয়েছে এক গভীর সংকট। একদিকে যেমন কাজের সুযোগ কমছে, তেমনই কর্মীরাও তাদের ভবিষ্যৎ নিয়ে শঙ্কিত। সম্প্রতি প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে জানা গেছে, হলিউডে সিনেমার শুটিংয়ের হার উল্লেখযোগ্যভাবে কমেছে, যা উদ্বেগের কারণ।
লস অ্যাঞ্জেলেস সহ ক্যালিফোর্নিয়া রাজ্যে গত বছর আউটডোর ফিল্মিংয়ের ক্ষেত্রে মন্দা দেখা গেছে। এমনকী, কোভিড মহামারীর সময়ও এর থেকে ভালো ফল ছিল।
এর প্রধান কারণ হিসেবে বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, অন্যান্য অঙ্গরাজ্য এবং দেশগুলো হলিউডের সঙ্গে প্রতিযোগিতায় নেমেছে। আটলান্টা, নিউ ইয়র্ক, যুক্তরাজ্য, কানাডা, এমনকি মেক্সিকোর মতো স্থানগুলোও চলচ্চিত্র নির্মাতাদের জন্য আকর্ষণীয় প্রস্তাব নিয়ে আসছে।
তারা আর্থিক সুবিধা এবং কর ছাড়ের মাধ্যমে চলচ্চিত্র নির্মাতাদের আকৃষ্ট করছে, যা হলিউডের জন্য একটি বড় চ্যালেঞ্জ তৈরি করেছে।
হলিউডের এই সংকট শুধু সিনেমার নির্মাণ কমার মধ্যেই সীমাবদ্ধ নেই। এর প্রভাব পড়েছে সাধারণ কর্মীদের উপরও।
সিনেমা তৈরি প্রক্রিয়ার সঙ্গে জড়িত বিভিন্ন কারিগর, যেমন – লাইটম্যান, ইলেকট্রিশিয়ান, সেট ডিজাইনার, পোশাক শিল্পী, মেকআপ শিল্পী সহ আরো অনেকে, এখন কাজ হারানোর ঝুঁকিতে রয়েছেন।
তাদের পেশা হুমকির মুখে, কারণ কাজের সুযোগ কমে যাওয়ায় অনেকেই শহর ছাড়তে বাধ্য হচ্ছেন।
পরিস্থিতি মোকাবিলায় ক্যালিফোর্নিয়া রাজ্য সরকার কিছু পদক্ষেপ নিতে চাইছে। চলচ্চিত্রের জন্য ট্যাক্স ক্রেডিট প্রোগ্রাম বাড়ানোর প্রস্তাব করা হয়েছে, যা সম্ভবত স্থানীয় কর্মীদের জন্য কিছু সুযোগ তৈরি করতে পারে।
তবে, এই পদক্ষেপ কতটা কার্যকর হবে, তা নিয়ে অনেকের মনেই সন্দেহ রয়েছে। কেউ কেউ মনে করেন, এটি কেবল বড় স্টুডিওগুলোর জন্য সুযোগ তৈরি করবে, সাধারণ কর্মীদের তেমন কোনো উপকার হবে না।
হলিউডের এই সংকট শুধু ক্যালিফোর্নিয়ার সমস্যা নয়, বিশ্ব চলচ্চিত্রের জন্যও একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। যদি হলিউড তার হারানো গৌরব ফিরে পেতে ব্যর্থ হয়, তবে বিশ্বজুড়ে সিনেমার ধরন এবং নির্মাণশৈলীতেও পরিবর্তন আসতে পারে।
কারণ, হলিউড একসময় সিনেমার উদ্ভাবন ও সৃজনশীলতার কেন্দ্র ছিল।
তবে, হলিউডের ভবিষ্যৎ এখনো অনিশ্চিত। নির্মাতারা বলছেন, টিকে থাকতে হলে নতুন পরিকল্পনা ও পদক্ষেপ নিতে হবে।
সরকার ও চলচ্চিত্র শিল্পের সঙ্গে জড়িত সকলকে একযোগে কাজ করতে হবে, যাতে এই ঐতিহ্যবাহী চলচ্চিত্র কেন্দ্রটি তার পুরনো রূপে ফিরে আসতে পারে।
তথ্য সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান