খরচ বৃদ্ধি এবং অর্থনৈতিক অনিশ্চয়তার মধ্যে ছোট প্রকল্পের ওপর মনোযোগ দেওয়ায় হোম ডিপোর বিক্রি বেড়েছে। সম্প্রতি প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে জানা গেছে, গত দ্বিতীয় আর্থিক কোয়ার্টারে কোম্পানিটির আয় বেড়েছে, যদিও তা বিশ্লেষকদের প্রত্যাশা পূরণ করতে পারেনি।
প্রতিবেদন অনুযায়ী, অগাস্ট মাসের ৩ তারিখে শেষ হওয়া তিন মাসে হোম ডিপোর আয় হয়েছে প্রায় ৪৫.২৮ বিলিয়ন ডলার, যেখানে আগের বছর একই সময়ে আয় ছিল ৪৩.১৮ বিলিয়ন ডলার। তবে বিশ্লেষকরা আশা করেছিলেন আয় ৪৫.৪১ বিলিয়ন ডলার হবে।
জানা গেছে, পুরনো দোকানগুলোতে বিক্রি ১ শতাংশ বেড়েছে। শুধু যুক্তরাষ্ট্রেই এই বৃদ্ধি ছিল ১.৪ শতাংশ। বাজারের এই পরিস্থিতিতে ভোক্তারা ছোটখাটো সংস্কার ও বাগান করার দিকে ঝুঁকছেন।
বিশ্লেষকরা বলছেন, গ্রাহকদের মধ্যে ছোট প্রকল্পের প্রতি আগ্রহ বাড়লেও, হোম ডিপো তাদের শক্তিশালী গ্রাহক পরিষেবা, পণ্যের বিশাল সংগ্রহ এবং প্রতিযোগিতামূলক দামের কারণে এক্ষেত্রে ভালো ফল করছে।
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, গ্রাহক লেনদেনের সংখ্যা সামান্য কমলেও, প্রতিটি কেনাকাটার গড় পরিমাণ বেড়েছে। গত বছর যেখানে গড় ছিল ৮৮.৯০ ডলার, সেখানে এবার তা বেড়ে হয়েছে ৯০.০১ ডলার।
হোম ডিপোর চেয়ারম্যান ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা টেড ডেক্কার এক বিবৃতিতে জানিয়েছেন, “আমাদের দ্বিতীয় ত্রৈমাসিকের ফলাফল প্রত্যাশা মতোই হয়েছে। গত বছরের শেষার্ধ্বে যে গতি শুরু হয়েছিল, তা এই বছরও অব্যাহত রয়েছে। গ্রাহকরা ছোট আকারের গৃহ সংস্কারের প্রকল্পগুলোতে বেশি মনোযোগ দিচ্ছেন।”
তবে, হোম ডিপোর মতো গৃহ সংস্কারের দোকানগুলো বর্তমানে বেশ কিছু চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হচ্ছে। এর কারণ হিসেবে বেশি ঋণ খরচ এবং মুদ্রাস্ফীতি নিয়ে উদ্বেগের কথা বলা হচ্ছে। অনেক গ্রাহক বড় প্রকল্পগুলো আপাতত স্থগিত রেখেছেন।
যুক্তরাষ্ট্রের হাউজিং মার্কেটে মন্দা দেখা যাচ্ছে, যা মূলত ২০২০ সাল থেকে শুরু হয়েছে। এর কারণ হিসেবে উল্লেখযোগ্য হারে বন্ধকী ঋণের সুদের হার বৃদ্ধি এবং বাড়ির দাম বেড়ে যাওয়াকে দায়ী করা হচ্ছে।
হোম ডিপো দ্বিতীয় কোয়ার্টারে ৪.৫৫ বিলিয়ন ডলার মুনাফা করেছে, যা শেয়ার প্রতি ৪.৫৮ ডলারের সমান। আগের বছর একই সময়ে কোম্পানিটির মুনাফা ছিল ৪.৫৬ বিলিয়ন ডলার, বা শেয়ার প্রতি ৪.৬০ ডলার।
কোম্পানিটি তাদের ২০২৩ অর্থবছরের জন্য মোট বিক্রয়ের প্রবৃদ্ধি প্রায় ২.৮ শতাংশে ধরে রেখেছে। তারা আশা করছে, তাদের সমন্বিত আয় আগের বছরের শেয়ার প্রতি ১৫.২৪ ডলার থেকে প্রায় ২ শতাংশ কমতে পারে।
বৈশ্বিক অর্থনীতির এই পরিস্থিতিতে, যুক্তরাষ্ট্রের বাজারের এই পরিবর্তনগুলো বাংলাদেশের আবাসন এবং নির্মাণ শিল্পকেও প্রভাবিত করতে পারে। বিশ্ববাজারে নির্মাণ সামগ্রীর দাম বৃদ্ধির কারণে আমাদের দেশেও অনেক সময় নির্মাণ খরচ বাড়ে।
তথ্য সূত্র: এসোসিয়েটেড প্রেস