বাড়ির সবচেয়ে নোংরা ৮টি স্থান! যা দেখলে আঁতকে উঠবেন!

ঘরের কোন জায়গাগুলোতে লুকিয়ে থাকে জীবাণু? কীভাবে তাদের থেকে মুক্তি পাওয়া যায়?

স্বাস্থ্যকর জীবনযাপনের জন্য পরিচ্ছন্ন পরিপাটি একটি বাড়ির বিকল্প নেই। কিন্তু বাড়ির আনাচে কানাচে লুকিয়ে থাকতে পারে অসংখ্য জীবাণু, যা আমাদের অজান্তেই ডেকে আনে নানা রোগ-ব্যাধি। বিশেষ করে বর্ষাকালে এই জীবাণুদের উপদ্রব বাড়ে কয়েকগুণ।

তাই বাড়ির কোন কোন জায়গায় জীবাণুরা বাসা বাঁধে, তাদের থেকে মুক্তি পাওয়ার উপায় কী, তা জানা জরুরি।

রান্নাঘর:

আমাদের রান্নাঘর হলো খাদ্য তৈরির স্থান, তাই এখানে জীবাণুদের আনাগোনা সবচেয়ে বেশি। খাবার তৈরির সময় ব্যবহৃত হওয়া বাসনপত্র, যেমন – থালা-বাসন পরিষ্কার করার স্পঞ্জ ও ন্যাকড়া-এগুলোতে *Salmonella*, *E. coli* এবং অন্যান্য জীবাণু প্রচুর পরিমাণে থাকতে পারে।

এছাড়াও, রান্নার স্থান, যেমন – ওভেন, গ্যাসের চুলা, কিচেন ক্যাবিনেট, এবং খাদ্য প্রক্রিয়াকরণের স্থানগুলোতেও নিয়মিত পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখা প্রয়োজন। খাবার তৈরির আগে ও পরে ভালোভাবে হাত ধোয়ার অভ্যাস করা উচিত।

দরজা ও বিদ্যুতের সুইচ:

ঘরের দরজার হাতল, আলোর সুইচ এবং অন্যান্য স্পর্শ করা হয় এমন জায়গাগুলোতেও জীবাণু থাকতে পারে। ন্যাশনাল স্যানিটেশন ফাউন্ডেশন (NSF)-এর মতে, বাথরুমের দরজার হাতলের চেয়েও বেশি জীবাণু থাকে অন্যান্য কয়েকটি স্থানে।

তাই, সপ্তাহে অন্তত একবার এইসব স্থানগুলো জীবাণুনাশক দিয়ে পরিষ্কার করা উচিত।

মেকআপের সরঞ্জাম:

মেকআপের ব্রাশ, স্পঞ্জ এবং অন্যান্য সরঞ্জামগুলিতেও জীবাণু বাসা বাঁধতে পারে। বিশেষ করে যারা বাইরে যান এবং মেকআপ করেন, তাদের ক্ষেত্রে এই ঝুঁকি আরও বেশি। মেকআপের সরঞ্জাম নিয়মিত পরিষ্কার করা উচিত।

মেকআপের জিনিসপত্র পরিষ্কার, শুকনো এবং স্বাভাবিক তাপমাত্রায় সংরক্ষণ করতে হবে। পুরনো মেকআপ ব্যবহার করা উচিত নয়।

বাথরুম:

বাথরুম পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখাটা অত্যন্ত জরুরি। গরম জলের কারণে এখানে আর্দ্রতা বেশি থাকে, যা জীবাণু বৃদ্ধির জন্য আদর্শ পরিবেশ তৈরি করে।

বাথরুমের বেসিন, কমোড, শাওয়ারের স্থান, এবং অন্যান্য জায়গাগুলোতে নিয়মিত জীবাণুনাশক ব্যবহার করতে হবে। বাথরুমের তোয়ালে সপ্তাহে একবার এবং টুথব্রাশ ৩-৪ মাস পর পর পরিবর্তন করা উচিত।

কাপড় ধোলাইয়ের স্থান:

কাপড় ধোলাইয়ের স্থান বা লন্ড্রিতে ভেজা কাপড় বেশিক্ষণ থাকলে সেখানে জীবাণু জন্মাতে পারে। কাপড় ধোয়ার পর দ্রুত শুকিয়ে নেওয়া প্রয়োজন।

লন্ড্রিতে কাপড় ধোলাই করার সময় ওয়াশিং মেশিনের ড্রাম পরিষ্কার করে নেওয়া ভালো। গরম জল ব্যবহার করলে কাপড় থেকে জীবাণু দূর করা সহজ হয়।

ঘর ও অফিসের স্থান:

টিভি রিমোট, কম্পিউটার কিবোর্ড, ফোন এবং ট্যাবলেট – এইসব জিনিসগুলি পরিবারের সকলে ব্যবহার করে। তাই, এদের মাধ্যমে জীবাণু ছড়ানোর সম্ভাবনা থাকে। NSF-এর মতে, কম্পিউটার কিবোর্ড, রিমোট কন্ট্রোল এবং ভিডিও গেম কন্ট্রোলারে ছত্রাক ও ব্যাকটেরিয়া পাওয়া যায়।

নিয়মিত এইসব জিনিস পরিষ্কার করা উচিত।

পোষা প্রাণী:

বাড়িতে পোষা প্রাণী থাকলে তাদের মাধ্যমেও জীবাণু আসতে পারে। পোষা প্রাণীর বাটি, খেলনা এবং বিছানায় জীবাণু থাকতে পারে।

পোষা প্রাণীকে বাইরে থেকে আসার পর তাদের পা পরিষ্কার করে দেওয়া উচিত।

ব্যক্তিগত সরঞ্জাম:

জুতা, ব্যাগ এবং হেডফোনের মাধ্যমেও জীবাণু আসতে পারে। তাই বাইরে থেকে আসার পর এই জিনিসগুলি পরিষ্কার করা উচিত। ইলেক্ট্রনিক গ্যাজেট পরিষ্কার করার জন্য বিশেষ ক্লিনিং দ্রবণ ব্যবহার করা যেতে পারে।

পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন থাকার কিছু সাধারণ নিয়ম:

  • নিয়মিত হাত ধোয়ার অভ্যাস করুন।
  • খাবার তৈরির স্থান পরিষ্কার রাখুন।
  • ঘরের বাতাস চলাচলের ব্যবস্থা নিশ্চিত করুন।
  • ঘরের মেঝে ও আসবাবপত্র নিয়মিত পরিষ্কার করুন।
  • জীবাণুনাশক ব্যবহার করুন।

নিয়মিত পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতার মাধ্যমে আমরা আমাদের বাড়িকে জীবাণুমুক্ত রাখতে পারি এবং সুস্থ জীবন যাপন করতে পারি।

তথ্য সূত্র: Healthline

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *