হংকং-এ গণতন্ত্রের যোদ্ধাদের মুক্তি: অবশেষে কি অবসান?

হংকংয়ের গণতন্ত্রপন্থী ৪৭ জন কর্মীর মধ্যে চারজনকে মুক্তি দেওয়া হয়েছে, যাদেরকে বিতর্কিত জাতীয় নিরাপত্তা আইনের আওতায় গ্রেপ্তার করা হয়েছিল। মুক্তিপ্রাপ্তদের মধ্যে রয়েছেন ক্লডিয়া মো, কোওক কা-কি, জেরেমি ট্যাম এবং গ্যারি ফ্যান।

তারা সবাই চার বছরের বেশি সময় ধরে কারাবন্দী ছিলেন।

২০২১ সালের প্রথম দিকে হংকংয়ে ব্যাপক ধরপাকড়ের সময় এই ৪৭ জন গণতন্ত্রপন্থী রাজনৈতিক কর্মী, সমাজকর্মী এবং আন্দোলনকারীর বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হয়। এদের বিরুদ্ধে ২০২০ সালের জাতীয় নিরাপত্তা আইন ভঙ্গের অভিযোগ আনা হয়, কারণ তারা হংকংয়ের নির্বাচনের আগে অনানুষ্ঠানিকভাবে প্রাইমারি (প্রাথমিক নির্বাচন) আয়োজন করেছিলেন।

চীনের সরকার হংকংয়ের ওপর এই আইন চাপিয়ে দেয়, যার মাধ্যমে ভিন্নমত, বিদ্রোহ এবং বিদেশি শক্তির সঙ্গে যোগসাজশকে অপরাধ হিসেবে গণ্য করা হয়।

এই আইনের অধীনে অভিযুক্তদের মধ্যে অনেকের কারাদণ্ড হয়েছে। মুক্তি পাওয়া চারজন তাদের দোষ স্বীকার করেছিলেন, যার কারণে তাদের সাজা কিছুটা কম হয়।

তবে তাদের প্রি-ট্রায়াল ডিটেনশন বা বিচারপূর্ব আটকের সময় হিসাব করে মুক্তির ব্যবস্থা করা হয়েছে। এখনো এই দলের আরও অনেকে কারাগারে বন্দী আছেন, যাদের ১০ বছর পর্যন্ত কারাদণ্ড হতে পারে।

ক্লডিয়া মো, যিনি সিভিক পার্টির প্রতিষ্ঠাতা এবং একসময়ের প্রভাবশালী আইনপ্রণেতা ছিলেন, তাকে জামিন দিতে অস্বীকার করা হয়েছিল, কারণ তিনি বিদেশি গণমাধ্যমের সঙ্গে হোয়াটসঅ্যাপে কিছু বার্তা আদান-প্রদান করেছিলেন।

মুক্তির পর তার স্বামী সাংবাদিকদের বলেন, ক্লডিয়া ভালো আছেন এবং স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে চেষ্টা করছেন।

হংকংয়ের এই ঘটনার প্রেক্ষাপট ব্যাখ্যা করা জরুরি। হংকং চীনের একটি বিশেষ প্রশাসনিক অঞ্চল, যেখানে গণতন্ত্রপন্থীদের আন্দোলন দীর্ঘদিন ধরে চলে আসছে।

বিক্ষোভকারীরা বৃহত্তর স্বাধীনতা এবং বেইজিংয়ের ক্রমবর্ধমান প্রভাবের বিরুদ্ধে সোচ্চার ছিলেন। এই পরিস্থিতিতে, জাতীয় নিরাপত্তা আইন হংকংয়ের রাজনৈতিক পরিস্থিতিকে আরও জটিল করে তোলে। এই আইনের মাধ্যমে ভিন্নমতকে দমন করার অভিযোগ রয়েছে।

আন্তর্জাতিক সংবাদ সংস্থাগুলোর প্রতিবেদন অনুযায়ী, মুক্তি পাওয়া ব্যক্তিরা তাদের পরিবারের সঙ্গে মিলিত হয়েছেন এবং স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে চাইছেন।

তবে, হংকংয়ের রাজনৈতিক পরিস্থিতি এখনো বেশ সংবেদনশীল এবং এই ধরনের ঘটনার প্রভাব ভবিষ্যতে কেমন হবে, তা এখন দেখার বিষয়।

তথ্য সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *