হংকংয়ের সাবেক আইনপ্রণেতা ক্লডিয়া মো-কে সম্প্রতি চার বছর কারাবাসের পর মুক্তি দেওয়া হয়েছে। চীনের জাতীয় নিরাপত্তা আইনের অধীনে তার বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহের ষড়যন্ত্রের অভিযোগ আনা হয়েছিল।
জানা গেছে, কারাগারে কাটানো দিনগুলোকে তিনি ‘ক্যাফকা-সুলভ’ বলে বর্ণনা করেছেন।
২০২০ সালে বিতর্কিত জাতীয় নিরাপত্তা আইন জারির পর হংকংয়ে ভিন্নমতের কণ্ঠরোধ করা হয়। এই আইনের আওতায় গণতন্ত্রপন্থী বহু রাজনৈতিক কর্মী ও অ্যাক্টিভিস্টকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
ক্লডিয়া মো-ও তাদের মধ্যে একজন ছিলেন। তিনি ২০১৬ সালে হংকংয়ের আইনসভা, লেজিসলেটিভ কাউন্সিলে (LegCo) নির্বাচিত হয়েছিলেন।
২০২২ সালে, ৪৭ জন গণতন্ত্রপন্থী কর্মীর একটি মামলার সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে ক্লডিয়া মো দোষী সাব্যস্ত হন। তারা একটি ‘অনানুষ্ঠানিক প্রাইমারি ইলেকশন’-এ অংশ নিয়েছিলেন, যা বেইজিং-এর চোখে রাষ্ট্রের ক্ষমতাকে দুর্বল করার চেষ্টা ছিল।
এই ঘটনার পর আন্তর্জাতিক মহল থেকে চীনের কঠোর সমালোচনা করা হয়।
কারাগার থেকে মুক্তি পাওয়ার পর ক্লডিয়া মো বলেছেন, তিনি সেখানে থাকাকালীন ৩০০টির বেশি বই পড়েছেন এবং ফরাসি ভাষার চর্চা করেছেন।
তিনি তার মুক্তি এবং তার প্রতি সহানুভূতি দেখানোর জন্য সকলের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন।
তিনি আরও উল্লেখ করেছেন, কারাগারের জীবন শুরুতে ‘ক্যাফকা-সুলভ’ মনে হলেও সেখানকার সামাজিক পরিবেশের কারণে তিনি একাকীত্ব এবং একঘেয়েমি অনুভব করেননি।
এদিকে, ক্লডিয়া মো-র মুক্তির কয়েকদিনের মধ্যেই হংকং পুলিশ ওয়াশিংটন ভিত্তিক হংকং ডেমোক্রেসি কাউন্সিলের নির্বাহী পরিচালক আনা কোওকের বাবা ও ভাইকে গ্রেপ্তার করেছে।
তাদের বিরুদ্ধে আনা কোওকের আর্থিক লেনদেনের সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগ আনা হয়েছে।
হংকং একসময় রাজনৈতিক ভিন্নমত এবং মুক্ত গণমাধ্যমের জন্য পরিচিত ছিল। কিন্তু জাতীয় নিরাপত্তা আইন জারির পর সেখানে ভিন্নমতের জায়গা সংকুচিত হয়ে এসেছে।
বেইজিং এবং হংকং সরকার এই আইনকে শহরের শান্তি ও শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনার জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ হিসেবে বর্ণনা করে।
তথ্য সূত্র: আল জাজিরা