হিউস্টনের উপসাগরে মিলছে একের পর এক মৃতদেহ, আতঙ্কে শহর! আসল কারণ কী?

হিউস্টনের উপসাগরগুলোতে একের পর এক মরদেহ উদ্ধারের ঘটনায় আতঙ্কিত সেখানকার বাসিন্দারা। তাদের মনে এখন একটাই প্রশ্ন, তবে কি কোনো সিরিয়াল কিলারের (serial killer) আগমন ঘটেছে?

স্থানীয় কর্তৃপক্ষ অবশ্য এই সম্ভাবনাকে উড়িয়ে দিয়েছে, কিন্তু নিহতদের পরিবারের সদস্যরা এবং স্থানীয় কাউন্সিলরদের (councilor) মধ্যে সন্দেহ এখনো কাটেনি।

যুক্তরাষ্ট্রের টেক্সাস অঙ্গরাজ্যের হিউস্টন শহরে প্রায়ই উপসাগরের আশেপাশে মানুষের মৃতদেহ পাওয়া যাচ্ছে। গত কয়েক মাসে মৃতের সংখ্যা বৃদ্ধি পাওয়ায় জনমনে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে।

সেপ্টেম্বরের মাঝামাঝি সময়ে ব্রেইজ উপসাগরে (Brays Bayou) ২০ বছর বয়সী জেইড ম্যাককিসিক নামে এক তরুণীর মৃতদেহ উদ্ধারের পর এই উদ্বেগ আরও বাড়ে। বন্ধুদের সাথে বার থেকে ফেরার পর তিনি নিখোঁজ হন।

তার মোবাইল ফোনটিও পাওয়া যায়নি। ময়নাতদন্তে (autopsy) আঘাতের কোনো চিহ্ন পাওয়া যায়নি, তবে মৃত্যুর কারণ এখনো অজানা।

হিউস্টন শহরের মেয়র জন হুইটমিয়ার (John Whitmire) এবং পুলিশ প্রধান জানিয়েছেন, “এ ব্যাপারে আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই। হিউস্টনের রাস্তায় কোনো সিরিয়াল কিলার নেই।” তারা জনগণকে শান্ত থাকার আহ্বান জানিয়েছেন।

তাদের মতে, উপসাগরে ডুবে যাওয়া নতুন কোনো ঘটনা নয়। এখানে প্রায়ই এমন দুর্ঘটনা ঘটে।

তবে কর্তৃপক্ষের এই আশ্বাসে অনেকেই সন্তুষ্ট হতে পারছেন না। নিহতদের পরিবারের সদস্যরা ঘটনার সুষ্ঠু তদন্তের দাবি জানিয়েছেন।

তাদের অভিযোগ, ঘটনার সঠিক তদন্ত হচ্ছে না এবং ঘটনার প্রকৃত কারণ এখনো পর্যন্ত জানানো হয়নি। কেন এতগুলো মৃত্যুরহস্যের কিনারা হচ্ছে না, সেই প্রশ্নও তাদের।

পরিসংখ্যান বলছে, ২০২৩ সালের তুলনায় এ বছর হিউস্টনের উপসাগরগুলোতে মৃতের সংখ্যা বেড়েছে। মেডিকেল পরীক্ষকের (medical examiner) তথ্য অনুযায়ী, এ বছর এখন পর্যন্ত অন্তত ২৫ জনের মৃত্যু হয়েছে, যেখানে গত বছর একই সময়ে ১৪ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গিয়েছিল এবং পুরো বছরে মৃতের সংখ্যা ছিল ২০।

এদের মধ্যে অনেকের মৃত্যুর কারণ এখনো পর্যন্ত অজানা।

স্থানীয় কাউন্সিলর লেটিটিয়া প্লামার (Letitia Plummer) এবং ক্যারোলিন ইভান্স-শাবাজ (Carolyn Evans-Shabazz) কর্তৃপক্ষের কাছে দ্রুত ঘটনার তদন্ত করে প্রকৃত তথ্য জানানোর দাবি জানিয়েছেন।

তারা জনসাধারণের মধ্যে সচেতনতা বাড়ানোর জন্য উপসাগরের আশেপাশে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করার কথাও বলছেন।

বিশেষজ্ঞদের মতে, হিউস্টনের উপসাগরগুলোতে ঘটা এই মৃত্যুর পেছনে অনেকগুলো কারণ থাকতে পারে। এর মধ্যে মাদকাসক্তি, মানসিক স্বাস্থ্য সমস্যা এবং গৃহহীনতা অন্যতম।

তাছাড়া, যুক্তরাষ্ট্রের মানুষের মধ্যে কর্তৃপক্ষের প্রতি এক ধরনের অনাস্থা এবং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে গুজব ছড়ানোর প্রবণতাও রয়েছে।

হিউস্টন পুলিশ বিভাগ জানিয়েছে, তারা এই ঘটনার তদন্ত করছে এবং খুব দ্রুতই একটি সমাধানে আসার চেষ্টা করছে।

তবে ঘটনার সঠিক কারণ জানতে আরো কয়েক সপ্তাহ বা মাস লাগতে পারে।

তথ্যসূত্র: সিএনএন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *