হুতি বিদ্রোহীদের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের যুদ্ধবিরতি চুক্তি হয়েছে, কিন্তু ইসরায়েলে হামলা চলবে: খবর
যুক্তরাষ্ট্র এবং ইয়েমেনের হুতি বিদ্রোহীদের মধ্যে একটি যুদ্ধবিরতি চুক্তি হয়েছে। ওমানের মধ্যস্থতায় হওয়া এই চুক্তিতে লোহিত সাগরে জাহাজ লক্ষ্য করে হামলা বন্ধের কথা বলা হয়েছে। তবে, হুতি বিদ্রোহীরা জানিয়েছে, এই চুক্তির আওতায় ইসরায়েলের বিরুদ্ধে তাদের সামরিক অভিযান অব্যাহত থাকবে।
খবর অনুযায়ী, উভয় পক্ষই একে অপরের উপর হামলা করা থেকে বিরত থাকবে, যা আন্তর্জাতিক বাণিজ্যিক জাহাজের অবাধ চলাচল নিশ্চিত করবে।
খবর সূত্রে জানা যায়, হুতিদের প্রধান আলোচক মোহাম্মদ আব্দুস সালাম বুধবার রয়টার্সকে জানান, ইসরায়েলে হামলা চালানো চুক্তিটির কোনো অংশ নয়। তিনি আরও বলেন, “চুক্তিটি কোনোভাবেই, কোনো রূপেই ইসরায়েলের বিরুদ্ধে হামলা অন্তর্ভুক্ত করে না।
অন্যদিকে, হুতি রাজনৈতিক নেতা মাহদি আল-মাশাত বলেছেন, ইসরায়েলের উপর হামলা “চলতে থাকবে” এবং তা “ইসরায়েলি শত্রুদের সহ্য করার ক্ষমতার বাইরে চলে যাবে”।
এই ঘোষণার কয়েক ঘণ্টা আগে, ইসরায়েলি যুদ্ধবিমান ইয়েমেনের রাজধানী সানার বিমানবন্দরে হামলা চালায়। বিমানবন্দরের পরিচালক খালেদ আল-শাইফ জানান, এই হামলায় প্রায় ৫০০ মিলিয়ন মার্কিন ডলারের ক্ষতি হয়েছে।
এই চুক্তির ঘোষণা আসার আগে, সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প জানান, হুতিরা লোহিত সাগরে জাহাজ লক্ষ্য করে হামলা বন্ধ করতে রাজি হওয়ায়, ইয়েমেনে হুতিদের বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক অভিযানও বন্ধ করা হবে।
২০২৩ সালের অক্টোবর মাস থেকে গাজায় ইসরায়েল-হামাস যুদ্ধ শুরুর পর, ফিলিস্তিনিদের প্রতি সমর্থন জানিয়ে হুতি বিদ্রোহীরা ইসরায়েল এবং লোহিত সাগরে বাণিজ্যিক জাহাজের উপর হামলা চালিয়ে আসছিল।
সম্প্রতি, ইসরায়েল গাজায় অবরোধ জোরদার করার পর, হুতিরা তাদের হামলা পুনরায় শুরু করে। এর প্রতিক্রিয়ায় যুক্তরাষ্ট্র প্রায় প্রতিদিনই বিমান হামলা চালায়।
তবে, ট্রাম্পের ঘোষণা অনুযায়ী, হুতিরা এখন “যুদ্ধ চায় না” এবং “জাহাজ ওড়ানোরও পরিকল্পনা তাদের নেই”। আব্দুস সালাম অবশ্য হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেছেন, যদি যুক্তরাষ্ট্র তাদের হামলা চালায়, তাহলে হুতিরাও পাল্টা জবাব দেবে।
যুদ্ধবিরতি সত্ত্বেও, হুতিরা ইসরায়েলের বিরুদ্ধে তাদের সামরিক কার্যক্রম অব্যাহত রাখার ঘোষণা দেওয়ায়, এই অঞ্চলের পরিস্থিতি এখনো বেশ উদ্বেগজনক।
অন্যদিকে, গত রবিবার হুতি বিদ্রোহীদের ছোড়া একটি ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র ইসরায়েলের বেন গুরিয়ন আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কাছাকাছি আঘাত হানে। এতে আটজন আহত হয় এবং বিমানবন্দরের একটি সড়কের ক্ষতি হয়।
হামলার কারণে বিমানবন্দরের উড়ান চলাচলও বন্ধ হয়ে যায়। ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী জানিয়েছে, ক্ষেপণাস্ত্রটি ভূপাতিত করার চেষ্টা ব্যর্থ হয়েছে এবং তারা ঘটনার তদন্ত করছে।
তথ্য সূত্র: আল জাজিরা