নুন কমিয়েও খাবারের স্বাদ অটুট! স্বাস্থ্যসম্মত উপায়ের সন্ধান

উচ্চ রক্তচাপ এবং হৃদরোগের মতো স্বাস্থ্য সমস্যা কমাতে খাদ্যে লবণের পরিমাণ কমানো অত্যন্ত জরুরি। কিন্তু অনেকেই মনে করেন লবণ কম দিলে খাবারের স্বাদ কমে যায়।

আসলে, কয়েকটি সহজ কৌশল অবলম্বন করে খাবারের স্বাদ বজায় রেখে সোডিয়াম কমানো সম্ভব। আসুন, জেনে নেই সেই উপায়গুলো:

লেবুর ব্যবহার:
খাবারে স্বাদ যোগ করার জন্য লেবু, কমলালেবু, বা গ্রেপফ্রুটের মতো টক স্বাদের ফল ব্যবহার করা যেতে পারে।

এই ফলগুলো খাবারের স্বাদ বাড়ায় এবং সোডিয়ামের অভাব পূরণ করতে সাহায্য করে। রান্নার সময় আপনি একটি লেবুর রস ব্যবহার করতে পারেন অথবা পরিবেশনের সময় একটি লেবুর টুকরো ব্যবহার করতে পারেন। বিশেষ করে মাছ বা চিকেনের মতো খাবারে লেবুর রস যোগ করলে স্বাদ আরও বাড়ে।

ভিনেগার:
লেবুর মতো, ভিনেগারও খাবারের স্বাদ বাড়াতে পারে।

এটি ক্যালোরি এবং পুষ্টিগুণে কম থাকে। বিভিন্ন ধরনের ভিনেগার পাওয়া যায়, যেমন – আপেল সিডার ভিনেগার, সাদা ভিনেগার, বা ব্যালসামিক ভিনেগার। রান্নার সময় লবণ এর পরিবর্তে ভিনেগার ব্যবহার করা যেতে পারে।

শাকসবজি:
খাবারে আরও বেশি শাকসবজি যোগ করা যেতে পারে।

পেঁয়াজ, রসুন এবং অন্যান্য সবুজ শাকসবজি, যা সোডিয়ামের পরিমাণ কম কিন্তু স্বাদ-গুণে ভরপুর, তা ব্যবহার করা যেতে পারে। তাজা ও ফ্রিজে রাখা শাকসবজিতে সাধারণত সোডিয়ামের পরিমাণ কম থাকে। তবে, টিনজাত সবজি বা সালাদ ড্রেসিং-এর ক্ষেত্রে সোডিয়ামের পরিমাণ বেশি থাকতে পারে।

মশলার ব্যবহার:
নুন বা লবণের পরিবর্তে বিভিন্ন ধরনের মশলা ও ভেষজ ব্যবহার করে খাবারের স্বাদ বাড়ানো যেতে পারে।

হলুদ, জিরা, ধনে, শুকনো লঙ্কা, আদা, রসুন, পাঁচ ফোড়ন – এই ধরনের মশলা আমাদের রান্নাঘরে সহজেই পাওয়া যায়। গবেষণায় দেখা গেছে, মশলা ও ভেষজ ব্যবহার করে খাবারের সোডিয়ামের মাত্রা প্রায় ৫০% পর্যন্ত কমানো সম্ভব।

টিনজাত খাবার:
টিনজাত খাবার রান্নার আগে ভালোভাবে ধুয়ে নিলে সোডিয়ামের পরিমাণ কমানো যায়।

আমেরিকান হার্ট অ্যাসোসিয়েশন (AHA) এর মতে, টিনজাত শিম এবং সবজি ধোয়ার মাধ্যমে প্রায় ৪০% পর্যন্ত সোডিয়াম কমানো সম্ভব। এছাড়া, “লো সোডিয়াম” বা “নুন ছাড়া” লেবেলযুক্ত খাবার ব্যবহার করা যেতে পারে।

রান্নার পদ্ধতি পরিবর্তন:
রান্নার পদ্ধতি পরিবর্তন করেও খাবারের স্বাদ বাড়ানো যেতে পারে।

ভাজা, সেঁকা, গ্রিল করা, বা অল্প আঁচে রান্না করার মতো পদ্ধতিগুলো খাবারের স্বাদ আরও বাড়িয়ে তোলে।

বাইরের খাবার:
বাইরে খাবার খাওয়ার সময় কিছু বিষয়ে সচেতন থাকতে হবে।

“অঁ জু”, “ব্রাইনড”, “বারবিকিউড”, “কিউরিড” এবং “স্মোকড”-এর মতো শব্দগুলো খাবারের সোডিয়ামের পরিমাণ বেশি নির্দেশ করে। এছাড়াও, সয়া সস, টেরিয়াকি এবং মিসো সসযুক্ত খাবার খাওয়ার সময় সতর্ক থাকতে হবে। খাবারের অংশের দিকে খেয়াল রাখাটাও জরুরি।

উপসংহার:
সোডিয়াম কমানো স্বাস্থ্যকর জীবনযাপনের জন্য অপরিহার্য।

স্বাদ বজায় রেখেও এই কাজটি করা সম্ভব। লেবুর রস, ভিনেগার, মশলা, শাকসবজি এবং রান্নার পদ্ধতি পরিবর্তনের মাধ্যমে আপনি আপনার খাবারের স্বাদ বাড়াতে পারেন এবং সোডিয়াম গ্রহণ কমাতে পারেন। স্বাস্থ্য বিষয়ক আরও তথ্যের জন্য একজন পুষ্টিবিদের সাথে পরামর্শ করুন।

তথ্য সূত্র: হেলথলাইন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *