মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে অনুষ্ঠিত এক অসাধারণ ক্রীড়া ইভেন্টে তিনজন বোনের অদম্য মনোবলের এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত স্থাপন হয়েছে। নর্থ ক্যারোলিনা বিশ্ববিদ্যালয়ের (University of North Carolina – UNC) হয়ে খেলাধুলা করা তিন বোন, ক্লোয়ি, অ্যাশলি এবং নিকোল হামফ্রে, তাদের দলটিকে অপরাজিত চ্যাম্পিয়ন করে এনেছেন।
তারা নারী ল্যাক্রস চ্যাম্পিয়নশিপে জয়লাভ করেছেন, যা খেলাধুলা জগতে এক বিরল ঘটনা। ল্যাক্রস খেলাটি আমাদের দেশে খুব পরিচিত না হলেও, এটি অনেকটা ফিল্ড হকি-র মতো, যেখানে খেলোয়াড়রা লম্বা হাতলযুক্ত স্টিক ব্যবহার করে একটি বলের মাধ্যমে খেলে।
এই সাফল্যের গল্পটি শুধু একটি ক্রীড়া প্রতিযোগিতার ফল নয়, বরং এটি তিনজন বোনের কঠোর পরিশ্রম, আত্মত্যাগ এবং পারিবারিক বন্ধনের এক অনন্য উদাহরণ। ক্লোয়ি হামফ্রে, যিনি দলের একজন গুরুত্বপূর্ণ খেলোয়াড় ছিলেন, চারটি গোল করতে সক্ষম হন।
অন্যদিকে, তার বোন অ্যাশলি চারটি গোলে সহায়তা করেন। ফাইনাল খেলায় তাদের দল ১২-৮ ব্যবধানে নর্থওয়েস্টার্ন বিশ্ববিদ্যালয়কে পরাজিত করে।
এই জয়ের পথে আসাটা খুব সহজ ছিল না। নিকোল, যিনি তাদের মধ্যে সবচেয়ে বড়, শুরুতে ইউএসসি-তে (USC) যোগ দিয়েছিলেন, কিন্তু একটি আঘাতের কারণে তিনি তার শেষ বছর খেলার সুযোগ থেকে বঞ্চিত হন।
পরে তিনি ছোট বোনদের সাথে যোগ দিতে ইউএনসি-তে ফিরে আসেন। অ্যাশলি এর আগে স্ট্যানফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এসে ইউএনসি-তে যোগ দেন। আর ক্লোয়ি, যিনি ২০২৩ সালের সেরা খেলোয়াড় হিসেবে পরিচিত ছিলেন, আঘাতের কারণে প্রথম বছর খেলার সুযোগ পাননি, কিন্তু পরে ফিরে এসে দুর্দান্ত পারফর্ম করেন।
তাদের এই সাফল্যের পেছনে ছিল অধ্যবসায় এবং প্রতিকূলতাকে জয় করার অদম্য ক্ষমতা। খেলা শেষে উচ্ছ্বসিত অ্যাশলি হামফ্রে বলেন, “আমার বোনদের সাথে এই জয় উদযাপন করতে পারাটা ছিল আমার কাছে স্বপ্নের মতো।”
শুধু বোনেরাই নন, কোচ জেনি লেভির কন্যা কেটও এই জয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। প্রথম বর্ষের ছাত্রী কেট একটি গোল করে দলের জয়ে অবদান রাখেন।
এর মাধ্যমে মা ও মেয়ে একসঙ্গে চ্যাম্পিয়নশিপ জেতার বিরল দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন। কোচ জেনি লেভি তার দলের খেলোয়াড়দের প্রশংসা করে বলেন, “তারা সারা বছর তাদের সেরাটা দিয়েছে। তারা যোদ্ধা।”
এই বিজয় প্রমাণ করে যে, কঠোর পরিশ্রম, পরিবারের সমর্থন এবং দলের সম্মিলিত প্রচেষ্টার মাধ্যমে যেকোনো লক্ষ্য অর্জন করা সম্ভব। এই গল্পটি শুধু খেলাধুলার ময়দানেই নয়, বরং প্রতিটি মানুষের জীবনে অনুপ্রেরণা যোগায়।
তথ্য সূত্র: পিপল