হাঙ্গেরি সরকার বিতর্কিত আইরিশ র্যাপ ব্যান্ড ‘কনিপ’-কে আগামী তিন বছরের জন্য তাদের দেশে প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে। হাঙ্গেরির এই সিদ্ধান্তের ফলে তাদের জনপ্রিয় সিজেট উৎসবে পারফর্ম করার কথা ছিল, যা বাতিল হয়ে গেল।
দেশটির কর্মকর্তাদের দাবি, এই ব্যান্ডের উপস্থিতি জাতীয় নিরাপত্তার জন্য হুমকি স্বরূপ। খবর সূত্রে জানা যায়, বেলারুশের এই ত্রয়ী ব্যান্ড দলটিকে তাদের বিস্ফোরক ও রাজনৈতিক বক্তব্যে হামাস ও হিজবুল্লাহর মতো জঙ্গিগোষ্ঠীর প্রতি সমর্থন জানানোর অভিযোগ রয়েছে।
আয়ারল্যান্ডের এই ব্যান্ড দলের সদস্যরা তাদের গানে প্রায়শই অশ্লীল শব্দ ব্যবহার করেন এবং মাদকাসক্তির ইঙ্গিত দেন। তবে কনিপ-এর পক্ষ থেকে তাদের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ অস্বীকার করা হয়েছে।
তাদের দাবি, গাজায় ইসরায়েলের যুদ্ধের কারণে তারা ফিলিস্তিনিদের পক্ষে কথা বলায় তাদের কণ্ঠরোধ করার চেষ্টা চলছে। তারা আরও জানায়, হিজবুল্লাহ ও হামাসকে সমর্থন করার বা কোনো ধরনের সহিংসতাকে উস্কে দেওয়ার কোনো অভিপ্রায় তাদের নেই।
বৃহস্পতিবার হাঙ্গেরির অভিবাসন কর্তৃপক্ষ জানায়, কনিপ ব্যান্ডের সদস্য নাওইস ও’ কাইর্যালান, জে জে ও’ ডোহের্তি এবং লিয়াম ও’হানাধি-কে হাঙ্গেরিতে প্রবেশ করতে দেওয়া হবে না।
কর্তৃপক্ষ মনে করে, তাদের আগমন দেশের নিরাপত্তার জন্য গুরুতর হুমকি সৃষ্টি করবে। হাঙ্গেরির সরকারি মুখপাত্র জোলটান কোভাক্স এক সামাজিক মাধ্যমে জানান, কনিপ-এর ওপর এই নিষেধাজ্ঞার কারণ হলো তাদের ‘জাতিবিদ্বেষী ঘৃণা ভাষণ’ এবং হামাস ও হিজবুল্লাহর প্রতি ‘খোলাখুলি সমর্থন’।
অন্যদিকে, কনিপ ব্যান্ড এক বিবৃতিতে হাঙ্গেরির প্রধানমন্ত্রী ভিক্টর অরবানের তীব্র সমালোচনা করে। তারা জানায়, এই নিষেধাজ্ঞার পেছনে রয়েছেন প্রধানমন্ত্রী।
তাদের মতে, বর্তমান হাঙ্গেরীয় সরকার স্বৈরাচারী কায়দায় দেশ চালাচ্ছে। এমনকি, ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুকে হাঙ্গেরিতে স্বাগত জানানোরও সমালোচনা করে তারা।
এই ঘটনার জেরে সিজেট উৎসবের আয়োজকরা দুঃখ প্রকাশ করে বলেন, এমন সিদ্ধান্ত ‘অপ্রয়োজনীয়’ এবং ‘অকাঙ্ক্ষিত’।
তাদের মতে, এর ফলে শুধুমাত্র সিজেটের সুনাম ক্ষুণ্ণ হবে না, বরং বিশ্বজুড়ে হাঙ্গেরির ভাবমূর্তিতেও নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে। তারা আরও জানায়, ঘৃণা ভাষণকে তারা সমর্থন করে না, তবে প্রত্যেক শিল্পীর শিল্পকর্ম প্রদর্শনের স্বাধীনতা নিশ্চিত করতে চায় তারা।
কনিপ-এর দল এপ্রিল মাসে ক্যালিফোর্নিয়ার কোচেলা ভ্যালি মিউজিক অ্যান্ড আর্টস ফেস্টিভালে পারফর্ম করার সময় ইসরায়েলের বিরুদ্ধে ফিলিস্তিনিদের ওপর গণহত্যা চালানোর অভিযোগ এনেছিল। এরপরে তাদের ভিসা বাতিলের দাবি ওঠে এবং বেশ কয়েকটি কনসার্টও বাতিল করা হয়।
তথ্য সূত্র: অ্যাসোসিয়েটেড প্রেস