হাঙ্গেরি আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত (আইসিসি) থেকে নিজেদের সরিয়ে নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
একই সময়ে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুকে তারা স্বাগত জানিয়েছে, যিনি বর্তমানে এই আদালতের মোস্ট ওয়ান্টেড তালিকায় রয়েছেন। বুধবার হাঙ্গেরির সরকার এই ঘোষণা দেয়।
মে মাসে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত (আইসিসি) নেতানিয়াহুর বিরুদ্ধে যুদ্ধাপরাধের অভিযোগে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করে। গাজায় যুদ্ধ পরিচালনার ক্ষেত্রে যুদ্ধাপরাধ সংঘটনের ‘যথেষ্ট প্রমাণ’ রয়েছে বলে আদালত জানায়।
এর মধ্যে ‘যুদ্ধকে একটি কৌশল হিসেবে ব্যবহার করে অনাহার সৃষ্টি’ এবং ‘নৃশংসতা, হত্যা ও অন্যান্য অমানবিক কার্যকলাপ’-এর মতো অভিযোগও রয়েছে।
নেতানিয়াহুর হাঙ্গেরি সফর ছিল ইউরোপীয় ইউনিয়নে তার প্রথম পদক্ষেপ, যখন তার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয়েছে। আইসিসির সদস্য রাষ্ট্র হিসেবে হাঙ্গেরির নেতানিয়াহুকে গ্রেপ্তার করার কথা।
কিন্তু হাঙ্গেরি সরকার জানিয়েছে, তারা আইসিসি থেকে বের হয়ে যাওয়ার প্রক্রিয়া শুরু করবে, যা তাদের সাংবিধানিক এবং আন্তর্জাতিক আইনি বাধ্যবাধকতার সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ।
যদি হাঙ্গেরি সত্যিই আইসিসি ত্যাগ করে, তবে তারা হবে ইউরোপীয় ইউনিয়নের একমাত্র দেশ যারা এই আদালতের সদস্য নয়। এর আগে যুক্তরাষ্ট্র, চীন, রাশিয়া, সৌদি আরব এবং ইসরায়েলও আইসিসির সদস্যপদ গ্রহণ করেনি।
আদালত একইসঙ্গে হামাসের শীর্ষস্থানীয় নেতাদের বিরুদ্ধেও গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছে। এদের মধ্যে রয়েছেন গাজার নেতা ইয়াহইয়া সিনওয়ার, হামাসের সশস্ত্র শাখা কাসেম ব্রিগেডের নেতা মোহাম্মদ দিয়াব ইব্রাহিম আল-মাসরি, যিনি মোহাম্মদ দেইফ নামেই বেশি পরিচিত, এবং হামাসের রাজনৈতিক নেতা ইসমাইল হানিয়া।
যদিও ইসরায়েলি হামলায় এদের সবাই নিহত হয়েছেন।
আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের এই পদক্ষেপগুলো বিভিন্ন মহলে আলোচনার জন্ম দিয়েছে। অনেকে মনে করছেন, এটি আন্তর্জাতিক আইনের প্রতি সম্মান দেখানোর একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ।
আবার কেউ কেউ বলছেন, এই ধরনের পদক্ষেপ আন্তর্জাতিক সম্পর্কের ক্ষেত্রে জটিলতা তৈরি করতে পারে।
হাঙ্গেরির এই সিদ্ধান্তের ফলে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে নতুন করে বিতর্কের সৃষ্টি হয়েছে। বিশ্লেষকরা বলছেন, এর ফলে আন্তর্জাতিক আইনের প্রয়োগ এবং যুদ্ধাপরাধের বিচার আরও কঠিন হয়ে পড়বে।
এই ঘটনার প্রেক্ষাপটে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় এখন হাঙ্গেরির পরবর্তী পদক্ষেপের দিকে তাকিয়ে আছে।
তথ্য সূত্র: সিএনএন