মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল হারিকেন সেন্টার (এনএইচসি)-এ কর্মী নিয়োগ নিয়ে বিতর্ক সৃষ্টি হয়েছে। সরকারিভাবে দাবি করা হচ্ছে, এই কেন্দ্রে পর্যাপ্ত কর্মী রয়েছেন এবং হারিকেন মৌসুমের জন্য সব প্রস্তুতি সম্পন্ন।
তবে বিভিন্ন সূত্রে খবর, বাস্তবে চিত্রটা ভিন্ন। কর্মীদের ঘাটতি রয়েছে, যার ফলে আবহাওয়ার পূর্বাভাসে সমস্যা হতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য সচিব হাওয়ার্ড লু cutnick সম্প্রতি কংগ্রেসের শুনানিতে জানান, এনএইচসি-তে পর্যাপ্ত কর্মী রয়েছে এবং আবহাওয়াবিদদের ছাঁটাই করার যে অভিযোগ উঠেছে, তা ভিত্তিহীন। তিনি একে ‘ভিত্তিহীন’ এবং ‘হাস্যকর’ বলেও মন্তব্য করেন।
কিন্তু অনুসন্ধানে জানা গেছে, এনএইচসি-তে বর্তমানে বেশ কয়েকজন কর্মীর পদ শূন্য রয়েছে। এর মধ্যে আবহাওয়াবিদের পদও রয়েছে। এমনকি ফেডারেল নিয়োগে স্থগিতাদেশের কারণে এই শূন্যপদগুলো পূরণ করা যাচ্ছে না। যদিও জরুরি প্রয়োজনে কিছু ক্ষেত্রে ছাড় দেওয়া হয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল ওয়েদার সার্ভিস (NWS)-এর কর্মীরা বলছেন, কর্মী সংকট একটি গুরুতর সমস্যা। এর ফলে অনেক স্থানে আবহাওয়ার পূর্বাভাস নিয়মিতভাবে ২৪ ঘণ্টা পাওয়া যাচ্ছে না। এমনকি দৈনিক আবহাওয়ার বুলেটিন তৈরিতেও সমস্যা হচ্ছে।
ফলে আসন্ন হারিকেন মৌসুমে আবহাওয়ার পূর্বাভাসে ভুল হওয়ার আশঙ্কা বাড়ছে।
অন্যদিকে, ন্যাশনাল ওশেনিক অ্যান্ড অ্যাটমোস্ফিয়ারিক অ্যাডমিনিস্ট্রেশন (NOAA) এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, হারিকেন মৌসুমের জরুরি চাহিদা মেটানোর জন্য এনএইচসি-তে পর্যাপ্ত কর্মী রয়েছে। তবে কর্মীদের অভাবের কারণে পূর্বাভাস তৈরিতে সমস্যা হওয়ার সম্ভাবনাকে উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না।
জানা গেছে, ট্রাম্প প্রশাসন NWS থেকে প্রায় ১০০ জন কর্মীকে ছাঁটাই করেছিল। এর মধ্যে আবহাওয়াবিদ এবং জলবিদও ছিলেন।
এছাড়া, সরকারি কর্মী কমানোর উদ্দেশ্যে স্বেচ্ছা অবসর এবং অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা দেওয়ায় বহু অভিজ্ঞ কর্মী NWS ছেড়ে যান। সব মিলিয়ে, প্রশাসনের মেয়াদে NWS প্রায় ৫৬০ জন কর্মী হারিয়েছে। এই সংখ্যাটি NWS-এর প্রয়োজনীয় জনবলের তুলনায় ১৮% এবং স্বাভাবিক কর্মী সংখ্যার থেকে ৩৩% কম।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, আবহাওয়ার পূর্বাভাস তৈরিতে কর্মীদের এই ঘাটতি অত্যন্ত উদ্বেগের বিষয়। বিশেষ করে ঘূর্ণিঝড় ও অন্যান্য প্রাকৃতিক দুর্যোগের সময় সঠিক পূর্বাভাস দেওয়া জরুরি, যা জীবনহানি ও ক্ষয়ক্ষতি কমাতে সাহায্য করে।
বাংলাদেশের মতো দুর্যোগপ্রবণ দেশের জন্য আবহাওয়ার পূর্বাভাস আরও গুরুত্বপূর্ণ।
তথ্যসূত্র: সিএনএন