**আটলান্টিক মহাসাগরে শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড় এরিন: যুক্তরাষ্ট্রের পূর্বাঞ্চলে ধ্বংসের হুঁশিয়ারি, বাংলাদেশের জন্য শিক্ষা?**
আটলান্টিক মহাসাগরে সৃষ্ট শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড় এরিন বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রের পূর্বাঞ্চলে আঘাত হানতে চলেছে। এর প্রভাবে উপকূলীয় অঞ্চলে ভয়াবহ পরিস্থিতি সৃষ্টি হতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
বিশেষ করে, উত্তর ক্যারোলিনার ‘আউটার ব্যাংকস’ অঞ্চলে এর তীব্রতা বেশি অনুভূত হতে পারে। ঘূর্ণিঝড়ের কারণে ঐ অঞ্চলের বাসিন্দাদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে, এবং সেখানকার প্রশাসন জরুরি অবস্থা ঘোষণা করেছে।
যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল হারিকেন সেন্টার (National Hurricane Center) জানিয়েছে, এরিন বর্তমানে ৩ ক্যাটাগরির ঘূর্ণিঝড় হিসেবে অবস্থান করছে। তবে এটি আরও শক্তিশালী হয়ে ৪ অথবা ৫ ক্যাটাগরিতে পৌঁছাতে পারে।
এর ফলে ঐ অঞ্চলের সমুদ্র উপকূলগুলোতে ব্যাপক জলোচ্ছ্বাস, তীব্র ঢেউ এবং ভূমিধসের মতো ঘটনা ঘটতে পারে। ইতিমধ্যেই এর প্রভাবে কিছু এলাকায় জরুরি অবস্থা জারি করা হয়েছে এবং অনেককে নিরাপদ আশ্রয়ে সরিয়ে নেওয়া হচ্ছে।
আবহাওয়াবিদরা বলছেন, এরিনের প্রভাবে সমুদ্রের ঢেউ ২০ ফুটেরও বেশি উঁচু হতে পারে, যা উপকূলের কাছাকাছি থাকা বাড়িঘর এবং অবকাঠামোর জন্য মারাত্মক হুমকি সৃষ্টি করবে। এর আগে, গত বছর একই সময়ে ‘হারিকেন আর্নেস্টো’র আঘাতে ‘আউটার ব্যাংকস’-এ বেশ কয়েকটি বাড়ি সমুদ্রে বিলীন হয়ে গিয়েছিল।
এবারও তেমন পরিস্থিতির সৃষ্টি হতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
এই ঘূর্ণিঝড়ের কারণে কেবল যুক্তরাষ্ট্র নয়, বারমুডা, টার্কস ও কেইকোস দ্বীপপুঞ্জ এবং বাহামাতেও খারাপ আবহাওয়ার সৃষ্টি হয়েছে। এরিনের বাইরের দিকের প্রভাবের কারণে ইতোমধ্যেই ঐ দ্বীপগুলোতে বন্যা, বিদ্যুৎ বিভ্রাট এবং বিমানবন্দর বন্ধের মতো ঘটনা ঘটেছে।
এছাড়াও, পুয়ের্তো রিকোতে এরিনের প্রভাবে ব্যাপক বৃষ্টিপাত ও বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে।
আবহাওয়াবিদরা আরও জানিয়েছেন, এরিনের পরেই আটলান্টিক মহাসাগরে আরেকটি ঘূর্ণিঝড় সৃষ্টি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এর জেরে এই অঞ্চলে দুর্যোগ আরও বাড়তে পারে।
এই পরিস্থিতিতে স্থানীয় প্রশাসন এবং জরুরি বিভাগের কর্মীরা পরিস্থিতি মোকাবিলায় প্রস্তুত রয়েছেন।
বাংলাদেশের জন্য এই ঘূর্ণিঝড় একটি গুরুত্বপূর্ণ শিক্ষা নিয়ে আসে। আমাদের দেশেও প্রায়ই ঘূর্ণিঝড় এবং বন্যার মতো প্রাকৃতিক দুর্যোগ দেখা যায়।
এরিন আমাদের মনে করিয়ে দেয়, প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবিলায় প্রস্তুতি, সতর্কীকরণ ব্যবস্থা এবং দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়া কতটা জরুরি। উপকূলীয় অঞ্চলে বসবাসকারী মানুষের জীবন ও সম্পদ রক্ষায় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনার গুরুত্ব অপরিসীম।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে ঘূর্ণিঝড়ের তীব্রতা বাড়ছে। তাই, এর মোকাবিলায় উন্নত প্রযুক্তি, পূর্বাভাস ব্যবস্থা এবং সচেতনতা বৃদ্ধি করা প্রয়োজন।
বাংলাদেশের উচিত, ঘূর্ণিঝড়ের পূর্বাভাস এবং ত্রাণ তৎপরতা আরও শক্তিশালী করা, যাতে ভবিষ্যতে এমন দুর্যোগের সময় দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া যায়।
তথ্যসূত্র: সিএনএন