বিবাহিত জীবনে মতের অমিল, এক পরিবারের বিচ্ছেদের পথে যাত্রা? সম্প্রতি, এমনই এক ঘটনা আলোড়ন সৃষ্টি করেছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে। যুক্তরাজ্যের একটি জনপ্রিয় অনলাইন ফোরাম, Mumsnet.com-এ এক নারী তার অভিজ্ঞতার কথা তুলে ধরেছেন, যা অনেকের মনেই গভীর প্রভাব ফেলেছে।
ওই নারীর অভিযোগ, তার স্বামী তাদের পারিবারিক আর্থিক পরিস্থিতি বিবেচনা না করে, সন্তানদের নিয়ে বিদেশ ভ্রমণে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। তাদের বাড়িতে বর্তমানে বড় ধরনের সংস্কার কাজ চলছে, যার জন্য বিপুল পরিমাণ অর্থ খরচ হচ্ছে। এমতাবস্থায়, স্ত্রীর ইচ্ছা ছিল এ বছর দেশের ভেতরেই একটি সাধারণ ভ্রমণে যাওয়া। এতে করে সংস্কার কাজের জন্য কিছু অর্থ বাঁচানো যেত। কিন্তু স্বামীর জেদের কারণে পরিবারে তৈরি হয়েছে চরম অশান্তি।
ভুক্তভোগী নারী জানিয়েছেন, তারা সাধারণত প্রতি বছর ইউরোপের বিভিন্ন দেশে ‘ইন্টাররেইলিং হলিডে’ – অর্থাৎ, ট্রেনে করে বিভিন্ন দেশ ঘোরার পরিকল্পনা করেন। এতে তাদের ভালো মানের হোটেলে থাকতে হয় এবং বাইরের খাবার খাওয়ার কারণে খরচও বেশ হয়। এবার যখন তিনি স্বামীর কাছে আর্থিক সমস্যার কথা তুলে ধরেন, তখন তিনি কোনো কথাই শুনতে রাজি হননি। বরং তিনি জোর করে সন্তানদের ভ্রমণে নিয়ে যাওয়ার কথা জানান।
ওই নারীর ভাষ্যমতে, তার স্বামী তাকে জানিয়েছেন যে তিনি অনেক পরিশ্রম করেন এবং ভালো একটি ছুটি কাটানো তার প্রাপ্য। এরপর তারা কয়েক সপ্তাহ ধরে এ নিয়ে ঝগড়া করেছেন। এমনকি, সন্তানদের সামনেও তিনি স্ত্রীর সম্পর্কে বিরূপ মন্তব্য করতে শুরু করেন। তিনি নাকি তাদের বলেছেন, “আমি বুঝি না কীভাবে টাকা খরচ করতে হয়।
আশ্চর্যজনকভাবে, স্বামী তার বড় ছেলের ভ্রমণে যাওয়ার টিকিটও বুক করেছেন, যদিও ছেলেটি মায়ের সঙ্গে বাড়িতে থাকতে চেয়েছিল। ঘটনার জেরে, মেয়ে বাবার সঙ্গে ভ্রমণে যেতে রাজি হয়, কিন্তু ছেলে মায়ের সঙ্গ ছাড়তে নারাজ।
বিষয়টি নিয়ে Mumsnet.com-এর অন্যান্য সদস্যরাও তাদের প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন। তাদের মধ্যে অনেকেই স্বামীর এমন আচরণকে অত্যন্ত নিন্দনীয় বলে উল্লেখ করেছেন। তাদের মতে, পরিবারের আর্থিক বিষয়ে সবার সঙ্গে আলোচনা করা উচিত। শুধু তাই নয়, স্ত্রীর সম্মানহানি করে এমন কোনো কাজ করা কোনো পুরুষের জন্য শোভা পায় না।
এই ঘটনার মাধ্যমে স্পষ্ট হয়, দাম্পত্য জীবনে পারস্পরিক বোঝাপড়া ও আর্থিক বিষয়ে আলোচনা করা কতটা জরুরি। পরিবারে শান্তি বজায় রাখতে হলে, স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে খোলাখুলি আলোচনা এবং একে অপরের প্রতি শ্রদ্ধাবোধ অপরিহার্য।
তথ্য সূত্র: Mumsnet.com