আমার স্বামী দুবছর ধরে তার অবসরের কথা গোপন করে আসছেন। তিনি এখনো অফিসের ভান করে যাচ্ছেন, যেন নিয়মিত কাজ করছেন।
এমনকি অফিসের নানা ঘটনার গল্পও তৈরি করেছেন তিনি। আসল ঘটনা জানতে পারি যখন আমাদের যৌথ অ্যাকাউন্টে পেনশনের টাকা জমা হতে দেখি।
স্বামীর বয়স ৬৮ বছর। তিনি তার পুরোনো কর্মস্থলে পুনরায় আবেদন করেছেন, কিন্তু কোনো সাড়া পাননি। সারাক্ষণ তিনি তার আইপ্যাডে ব্যস্ত থাকেন।
আমি তাকে খুব মিস করি। এখন কিভাবে আমরা আমাদের মধ্যে ভালোভাবে কথা বলতে পারি?
আসলে, এই ঘটনা অনেকের কাছেই পরিচিত মনে হতে পারে। এমন অনেকেই আছেন যারা হয়তো তাদের অবসরের কথা পরিবারের কাছে গোপন করেন।
এর কারণ হতে পারে সামাজিক চাপ, পরিবারের সম্মান রক্ষার চিন্তা, অথবা একাকিত্বের ভয়।
এই পরিস্থিতিতে, সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো স্বামীর নীরবতার কারণগুলো বোঝা। তিনি কেন তার অবসরের কথা গোপন করলেন? এর পেছনে কি কোনো বিশেষ কারণ ছিল?
সম্ভবত, তিনি সমাজের চোখে কর্মহীন হয়ে পড়াটা মেনে নিতে পারেননি, অথবা পরিবারের উপর নির্ভরশীলতা কমাতে চেয়েছিলেন।
একজন পরামর্শদাতা এই সমস্যা সমাধানে কিছু গুরুত্বপূর্ণ পরামর্শ দিয়েছেন। সবার আগে, স্ত্রীর উচিত স্বামীর কথা মনোযোগ দিয়ে শোনা।
তার ভেতরের কথাগুলো জানার চেষ্টা করা। তিনি কি অনুভব করেন, কেন এই কাজটি করেছেন – তা বোঝার চেষ্টা করা প্রয়োজন।
কথা বলার সময়, কোনো বিচার-বিবেচনা বা দোষারোপ করা উচিত না। বরং, শান্তভাবে তার অনুভূতিগুলো শোনা উচিত।
যেমন, তিনি বলতে পারেন, “আমি বুঝতে পারছি তুমি এই বিষয়ে কথা বলতে স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করছ না। তবে, আমি জানতে চাই, কেন তুমি এমনটা করলে?”
এরপর, তিনি তার কথাগুলো পুনরাবৃত্তি করতে পারেন, যাতে স্বামী বুঝতে পারেন যে স্ত্রী তার কথাগুলো বুঝতে পারছেন।
এভাবে ধীরে ধীরে তাদের মধ্যে বোঝাপড়া বাড়ানো যেতে পারে।
এই আলোচনার মাধ্যমে, স্বামী সম্ভবত অনুভব করবেন যে তিনি একা নন এবং তার কথাগুলো শোনার মতো একজন মানুষ পাশে আছে।
এরপর, আপনারা ভবিষ্যতের পরিকল্পনা করতে পারেন। একসাথে নতুন কিছু করা, যেমন – বাগান করা, স্থানীয় কোনো ক্লাবে যাওয়া, অথবা বিভিন্ন কোর্সে অংশ নেওয়া যেতে পারে।
সবশেষে, মনে রাখতে হবে, এই পরিস্থিতি থেকে উত্তরণের জন্য ধৈর্য এবং একে অপরের প্রতি শ্রদ্ধাবোধ খুবই জরুরি।
আপনারা দুজনেই যদি চেষ্টা করেন, তবে অবশ্যই এই সমস্যা কাটিয়ে উঠতে পারবেন এবং আপনাদের সম্পর্ক আরও দৃঢ় হবে।
তথ্য সূত্র: The Guardian