আতঙ্কের রাত: অগ্নিনির্বাপক, যাজক ও সাংবাদিক, কেন তাদের বন্দী করলো ICE?

যুক্তরাষ্ট্রে অভিবাসন আইন: অগ্নিনির্বাপক কর্মী, সাংবাদিক ও পাদ্রীর আটকের ঘটনায় উদ্বেগ।

যুক্তরাষ্ট্রে অভিবাসন বিষয়ক কড়াকড়ি নীতির মধ্যে সেখানকার বিভিন্ন এলাকার সমাজকর্মীদের আটকের ঘটনা বাড়ছে। সম্প্রতি, দেশটির ইমিগ্রেশন অ্যান্ড কাস্টমস এনফোর্সমেন্ট (আইসিই) -এর হাতে আটক হয়েছেন একজন স্বেচ্ছাসেবী অগ্নিনির্বাপক কর্মী, একজন সাংবাদিক এবং একজন ধর্মযাজক। তাঁদের আটকের ঘটনাগুলো নিয়ে স্থানীয় জনগণের মধ্যে তৈরি হয়েছে গভীর উদ্বেগ।

এই গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের আটকের ফলে পরিবারগুলোতে নেমে এসেছে চরম দুর্গতি, যা অনেকের মনে অভিবাসন আইনের কঠোরতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে।

নিউ ইয়র্কের পোর্ট চেস্টারের বাসিন্দা মিল্টন গুমাররিগা একজন মার্বেল শ্রমিক এবং স্থানীয় দমকল বিভাগের স্বেচ্ছাসেবী ছিলেন। খবর অনুযায়ী, গত মাসের শুরুতে আইসিই কর্মকর্তারা তাঁকে তাঁর বাড়ি থেকে আটকের পর মিশিগানের একটি আইসিই ফিল্ড অফিসে নিয়ে যায়।

স্থানীয় মেয়র লুইস মারিনো জানিয়েছেন, তিনি গুমাররিগা এবং তাঁর পরিবারকে বহু বছর ধরে চেনেন। তিনি ফেডারেল সরকারের কাছে একটি চিঠি লিখে গুমাররিগার দমকল বিভাগে স্বেচ্ছাসেবক হিসেবে কাজ করার কথা উল্লেখ করেছেন এবং তাঁর ভালো চরিত্রের প্রশংসা করেছেন।

মেয়র মারিনো বলেন, দমকল বিভাগের স্বেচ্ছাসেবকরা একটি পরিবারের মতো এবং গুমাররিগা ছিলেন সেই পরিবারেরই একজন।

আটলান্টা মেট্রো এলাকার সাংবাদিক মারিও গুয়েভারা গত ২০ বছর ধরে আইন প্রয়োগকারী সংস্থা এবং অভিবাসন বিষয়ক বিভিন্ন খবর সংগ্রহ করে আসছিলেন। তিনি একাধিক স্প্যানিশ ভাষার সংবাদ মাধ্যমে কাজ করেছেন এবং ‘এমজি নিউজ’ নামে একটি ডিজিটাল সংবাদ মাধ্যম প্রতিষ্ঠা করেন, যার ফেসবুক পাতায় ১ লক্ষ ১৩ হাজারের বেশি অনুসারী রয়েছে।

গুয়েভারাকে গত ১৪ই জুন একটি বিক্ষোভের সময় গ্রেপ্তার করা হয়। যদিও তাঁর বিরুদ্ধে আনা অভিযোগগুলো পরে তুলে নেওয়া হয়, তবুও তিনি এখনো আটক রয়েছেন।

গুয়েভারার আইনজীবী জানিয়েছেন, তাঁর মক্কেল বর্তমানে জর্জিয়ার একটি ডিটেনশন সেন্টারে বন্দি জীবন কাটাচ্ছেন, যা সত্যিই দুঃখজনক।

অন্যদিকে, মেরিল্যান্ডের বাসিন্দা ড্যানিয়েল ফুয়েন্তেস এস্পিনাল ২০০১ সালে দারিদ্র্য ও সহিংসতার হাত থেকে বাঁচতে হন্ডুরাস থেকে যুক্তরাষ্ট্রে এসেছিলেন।

তিনি এখানে নির্মাণ শ্রমিক হিসেবে কাজ করতেন এবং একটি চার্চে ধর্মযাজক হিসেবে স্বেচ্ছাসেবক হিসেবে দায়িত্ব পালন করতেন। স্থানীয়দের জন্য আশ্রয়, খাবার এবং পোশাকের ব্যবস্থা করতেন তিনি।

জানা গেছে, ভিসার মেয়াদ শেষ হওয়ার কারণে গত ২১শে জুলাই আইসিই এজেন্টরা তাঁকে আটক করে। যদিও কমিউনিটির সমর্থন এবং বিভিন্ন চিঠি লেখার পর ১৫ই আগস্ট তাঁকে মুক্তি দেওয়া হয়।

এই ঘটনাগুলো যুক্তরাষ্ট্রের অভিবাসন আইনের কঠোরতা এবং এর প্রভাব সম্পর্কে নতুন করে আলোচনা শুরু করেছে।

আটকদের পরিবার এবং তাঁদের সমর্থনে এগিয়ে আসা মানুষেরা তাঁদের মুক্তির জন্য এখনো চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। এই ধরনের আটকের ঘটনা কিভাবে স্থানীয় মানুষের জীবনকে প্রভাবিত করে, তা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন অনেকেই।

তথ্য সূত্র: সিএনএন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *